Andhra Temple Stampede
							ক্লাউড টিভি ডেস্ক: অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলম জেলার কাশিবুগ্গা এলাকার বিখ্যাত শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে ভয়াবহ ধাক্কাধাক্কিতে অন্তত ৯ জন ভক্তের মৃত্যু হয়েছে। আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শনিবার সকালে বিশেষ একাদশী পূজার সময়। এছাড়া এই মন্দিরকে স্থানীয়রা “চিন্না তিরুপতি” নামে ডাকেন। মন্দিরের খ্যাতি দিন দিন বাড়ছিল। ফলে ভিড়ও বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
তবে দুঃখজনকভাবে এমন দিনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রাখা হয়নি। বরং একটি মাত্র প্রবেশ ও প্রস্থান পথ ছিল। তাই ভক্তদের চাপ তৈরি হয়। এরপর রেলিং ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। আর সঙ্গে সঙ্গেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। অনেকে পড়ে যান। তারপর তাদের ওপর পড়ে আরও বহু মানুষ। ফলে শ্বাসরোধ ও চাপে মৃত্যু হয়।
সকালে মানুষ বিশেষ পূজা দিতে মন্দিরে আসেন। তবে অনুমান করা হচ্ছিল প্রায় ৩-৪ হাজার মানুষ উপস্থিত হবেন। কিন্তু দেখা যায় সংখ্যা ২৫ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তাই পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়ে। অথচ কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে চান। তারা দ্রুত অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার দাবি করছেন।
প্রশাসনের ধারণা, মন্দিরটি বেসরকারি পরিচালিত হওয়ায় আনুষ্ঠানিক অনুমতি, ভিড় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা সঠিক হয়নি। পাশাপাশি, প্রশাসনের সঙ্গে আগাম যোগাযোগ করা হয়নি। যদিও মন্দির কমিটি বিষয়টি অস্বীকার করছে। তবুও তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে ঘটনাস্থলে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। কেন একটি মাত্র গেট? কেন আয়তন অনুযায়ী প্রবেশ সীমা নির্ধারণ হয়নি? এবং কেন রেলিং এত দুর্বল ছিল? তদন্তকারী দলের দাবি, এসব বিষয় সামনে আসছে এবং ভবিষ্যতে কড়া নির্দেশ জারি হবে।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং মেডিকেল দল পৌঁছে যায়। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্য সংগ্রহ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নারা চন্দ্রবাবু নাইডু ঘটনাটিকে “অত্যন্ত বেদনাদায়ক” বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এটি মানবিক বিপর্যয়। দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হরিদ্বারে মনসাদেবী মন্দিরে পদদলিত হয়ে ছয়জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু, আহত বহু
স্থানীয়রা মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। তবুও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অনেকেই জানিয়েছেন, এই উৎসব প্রতি বছর ধুমধাম করে হয়। কিন্তু এবার ভিড় যে এত হবে তা জানলেও কিছু করা হয়নি।
অন্যদিকে অনেকে বলেন, মানুষ নিজেরাও অসতর্ক ছিলেন। কেউ কেউ লাইনে না দাঁড়িয়ে ঠেলাঠেলি করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত দায় প্রশাসনের ওপরই বর্তায়। কারণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের কাজ।
ভারতে ধর্মীয় স্থানে ভিড়ের চাপে প্রাণহানি নতুন নয়। তবে দুঃখজনকভাবে বারবার শিক্ষা নেওয়া হয় না। তাই প্রশ্ন উঠছে: কবে এই ব্যবস্থা বদলাবে? যদিও সরকার বলছে—নতুন নিরাপত্তা প্রোটোকল আনা হবে।
মানুষ ভগবানের আশীর্বাদ নিতে এসেছিল। তবে আশীর্বাদ নয়, মৃত্যুর মুখে পড়ল। এমন দুর্ঘটনা রোধে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। এবং ভবিষ্যতে প্রশাসন ও ধর্মীয় কমিটিকে সমন্বয় বাড়াতে হবে। অন্যথায় এমন মর্মান্তিক দৃশ্য আমরা আবার দেখতে পাব।
আরও পড়ুন :
রোহন বোপন্নার অবসর — ভারতীয় টেনিসের এক যুগের সমাপ্তি
BlackRock-এর সঙ্গে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতারণা! অভিযুক্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূত Bankim Brahmbhatt