Bengaluru Ambulance Killed Couple
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর ব্যস্ত রিচমন্ড সার্কেল এলাকায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি অ্যাম্বুলেন্স, যা সাধারণত জীবন বাঁচানোর জন্য ছুটে চলে, এবার সেই অ্যাম্বুলেন্স এর কারণেই গেল দুই প্রাণ। স্কুটার থামিয়ে সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকা এক দম্পতিকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি তাদের প্রাণ কেড়ে নেয়। তবে এ ঘটনায় আরও অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন।
ঘটনা ঘটেছে শনিবার গভীর রাতে। প্রায় রাত ১১টার দিকে রিচমন্ড সার্কেল সিগন্যালে কয়েকটি দুইচাকার গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ দ্রুতগতির অ্যাম্বুলেন্স সিগন্যাল অমান্য করে প্রবেশ করে। ফলে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক ও স্কুটারগুলোকে ভয়ংকরভাবে ধাক্কা দেয়। তখনই স্কুটারে থাকা ৪০ বছর বয়সী ইসমাইল ও তাঁর স্ত্রী সামীন বানু ঘটনাস্থলেই গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে দু’জনেই মারা যান।
যদিও অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাবি যে তিনি জরুরি রোগী বহন করছিলেন, প্রতিবেদন অনুযায়ী এখনো স্পষ্ট নয় অ্যাম্বুলেন্সে রোগী ছিল কি না। এছাড়া স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী অ্যাম্বুলেন্সটির সাইরেন ও লাইট জ্বালানিও স্পষ্ট ছিল না। ফলে দুর্ঘটনা আরও রহস্য বাড়িয়েছে।
দম্পতির স্কুটার ছিল হোন্ডা ডিও। তারা স্বাভাবিক নিয়মে সিগনাল মানছিলেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের ভয়ংকর গতি তাদের কোনও সুযোগই দেয়নি। তীব্র আঘাতের ফলে স্কুটারটি কয়েক মিটার দূরে টেনে নিয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সেটি গিয়ে ধাক্কা মারে একটি পুলিশ আউটপোস্টের দেয়ালে। তাতেই গাড়ি থামে।
গুরগাঁওয়ে 10 মিনিটের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করল ব্লিংকিট
উত্তর প্রদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থায় ঐতিহাসিক পরিবর্তন: সাত শহরে শুধুই নারী পুলিশ
তবে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে চালককে ঘটনাস্থলেই আটক করা হয়। তার নাম অশোক বলে জানা গেছে। Wilson Garden Traffic Police একটি FIR নথিভুক্ত করেছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে বেপরোয়া ড্রাইভিং ও মৃত্যুর কারণ ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, জরুরি সেবা দেওয়া গাড়ি হলেও আইন কি সবার জন্য সমান নয়? কারণ জরুরি যান হলেও লাল সিগন্যাল ভাঙার নিয়ম নেই, যদি না সাইরেন ও সতর্কীকরণ চালু থাকে এবং ট্রাফিক নিশ্চিতভাবে পরিষ্কার থাকে। তাই এই ঘটনা ট্রাফিক নিরাপত্তা ও জরুরি সেবা ব্যবস্থার প্রতি জনবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দিল।
অন্যদিকে ট্রাফিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাম্বুলেন্স চালকদেরও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও সতর্কতা জরুরি। কারণ একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিরপরাধ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে। যদিও অনেক সময় রোগী নিয়ে যাওয়ার তাড়ায় চালকরা গতি বাড়ান, তবুও আইন উপেক্ষা করলে ট্র্যাজেডি অনিবার্য হয়ে ওঠে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন রিচমন্ড সার্কেল এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া জরুরি সেবার গাড়ির জন্য নতুন মানদণ্ড নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে। ফলে পরবর্তী সময়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর জন্য কঠোর লাইসেন্সিং ও প্রশিক্ষণ নীতি আসতে পারে।
পরিবারের দিকে তাকালে এই ঘটনা আরও হৃদয়বিদারক। ইসমাইল ও সামীন একসঙ্গে ফিরছিলেন রাতের কাজ শেষে। কিন্তু অজান্তেই এমন এক দুর্ঘটনার শিকার হবেন, তা কেউই ভাবেননি। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
সবশেষে বলা যায়, এই ঘটনা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দিল– সড়কে নিয়ম মানা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। তাই জরুরি গাড়িও যদি নিয়ম না মানে, তাহলে বিপদ যে কারও জন্য অপেক্ষা করতে পারে।
আরও পড়ুন :
মোকামায় জন সুরাজের কর্মীর হত্যাকাণ্ডে উত্তাল বিহার, জেডিইউ প্রার্থী অনন্ত সিংহ গ্রেফতার
“ফিরিয়ে আনবে ‘জঙ্গল রাজ’?” : শাহাবুদ্দিনের ছেলেকে RJD বিধানভার টিকিট দেওয়ায় দাবী BJP র