AirIndia Emergency Landing
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : টোকিও থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার AI-৩৫৭ (AirIndia Emergency Landing) ফ্লাইটে রবিবার দুপুরে মাঝ আকাশে দেখা দেয় প্রযুক্তিগত ত্রুটি। ফলে জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং পাইলট কলকাতা এটিসি (Air Traffic Control)-র সঙ্গে যোগাযোগ করে জরুরি অবতরণ অনুমতি চান। আতঙ্কের মধ্যে বিকেল ৩:৩৩ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দরে নিরাপদ অবতরণ করে বিমানটি। বিমানে থাকা ২৪১ যাত্রী এবং ক্রু-সদস্য সবাই নিরাপদ।
উড়ন্ত অবস্থায়, জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হওয়া বিমানটি ভারতের আকাশসীমায় ঢোকার পর পাইলটরা একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটির ইঙ্গিত পান।
বিমানের ইনস্ট্রুমেন্ট প্যানেল-এ ‘হাইড্রলিক সিস্টেম’ বা ‘ল্যান্ডিং গিয়ার’-এর ত্রুটি নির্দেশ করে।
এ অবস্থায় উড়াল অব্যাহত রাখা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে পাইলট কলকাতা এটিসির কাছে অবতরণের অনুমতি চান।
সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয় কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে নিরাপত্তা প্রটোকল।
ফায়ার ব্রিগেড, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিক্যাল টিম ও নিরাপত্তাকর্মীদের নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ প্রস্তুত রাখা হয়।
কেদারনাথে এইমস রিষিকেশের হেলি-এম্বুলেন্সের জরুরি অবতরণ, অক্ষত সকল আরোহী
জানা গেছে,
অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন প্রবীণ শর্মা ও সহ-পাইলট জ্যোতি সেনগুপ্ত একেবারে ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দেন।
বিমানের গতি ও উচ্চতা ধীরে ধীরে কমিয়ে নির্ধারিত ফর্মেশনে অবতরণ করেন।
এরপর যাত্রীদের দ্রুত ইমার্জেন্সি গেট খুলে ধাপে ধাপে বিমান থেকে বের করা হয়।
এয়ার ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র জানান, “এটি ছিল একটি SOP (Standard Operating Procedure)-এর মধ্যে অত্যন্ত নিখুঁত বাস্তবায়ন।”
টোকিও ফেরত ব্যবসায়ী অরিন্দম মল্লিক বলেন,
“আমরা মাঝ আকাশে হালকা কাঁপুনি ও একটি অদ্ভুত শব্দ শুনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই কেবিন ক্রু ঘোষণা করেন কলকাতায় জরুরি অবতরণ করা হবে। আমাদের আতঙ্ক হলেও সবকিছু খুব সুসংগঠিত ছিল।”
এক জাপানি পর্যটক বলেন,
“The crew were calm and professional. I was scared, but we felt safe once we landed.”
জরুরি অবতরণের পর বিমানটিকে সরিয়ে নেওয়া হয় ট্যাক্সিওয়ে–এ পার্কিং জোনে।
সেখানে বিমান প্রযুক্তিবিদরা ‘গ্রাউন্ড টেস্ট’ করে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন, হাইড্রলিক সিস্টেমে একটি ‘সিগন্যাল ফেইলিওর’ ঘটেছে।
বিমানটিকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘Aircraft on Ground’ (AOG) এবং যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থায় দিল্লি পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
DGCA (Directorate General of Civil Aviation) বিষয়টি তদন্তে বিশেষ দল গঠন করেছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার যন্ত্রগত সমস্যার খবর নতুন নয়।
গত সপ্তাহে AI-180 (সান ফ্রান্সিসকো–মুম্বই) ফ্লাইটে বাম ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়ে, জরুরি অবতরণ হয় কলকাতায়।
মে মাসে AI-315 (হংকং–দিল্লি) ফ্লাইট উড়ার পর মাঝ আকাশে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হংকং ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
এ নিয়ে DGCA এখন এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ও ড্রিমলাইনার বহরের উপর অতিরিক্ত নজরদারি শুরু করেছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়েছে,
“যাত্রীদের নিরাপত্তা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। কলকাতা এটিসি ও আমাদের পাইলটরা দুর্দান্ত কাজ করেছেন। আমরা যাত্রীদের বিকল্প ফ্লাইটে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
আরও পড়ুন :
বিশ্বযুদ্ধের ছায়া? ইউক্রেনে রাশিয়ার সবচেয়ে বড়ো আকাশ হামলা, নিহত F-16 পাইলট
ক্লাব বিশ্বকাপ গ্রুপ পর্বে আয়: শীর্ষে ম্যানসিটি, বিপুল অঙ্কে চেলসি-রিয়ালও