AirIndiaCrash FuelCutoffMystery
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১২ জুলাই, ২০২৫ : ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান গত মাসে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিমানটিতে ২৬০ জন যাত্রী ছিলেন। শনিবার ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ‘এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ (AAIB) এই ঘটনায় তাদের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর ও উদ্বেগজনক তথ্য (AirIndiaCrash FuelCutoffMystery), যা পুরো ঘটনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আশঙ্কাজনক বিষয় হল, বিমানটির উড়ানের মাত্র তিন সেকেন্ড পরেই ইঞ্জিনের ‘ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ’ বা জ্বালানি নিয়ন্ত্রণকারী সুইচগুলো হঠাৎ করেই ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ হয়ে যায়। এর ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং গতি দ্রুত কমে যায়। ড্রিমলাইনারটি নিম্নমুখী হয়ে যায় এবং নিয়ন্ত্রণ হারায়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, “এই ধরনের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ সাধারণত কোনও মেকানিক্যাল ত্রুটির কারণে হয় না। পাইলট বা সহ-পাইলটের ইচ্ছাকৃত বা ভুল অপারেশনই একমাত্র সম্ভাব্য কারণ।”
পাইলটদের কথোপকথনে রহস্য
ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে যে কথোপকথন ধরা পড়েছে, তা আরও বিভ্রান্তিকর। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্ঘটনার ঠিক আগে এক পাইলট অপর পাইলটকে প্রশ্ন করেন, “তুমি কেন জ্বালানি বন্ধ করলে?” যার জবাবে অপর পাইলট বলেন, “আমি কিছু বন্ধ করিনি।”
কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠছে—এই কথোপকথনে কে ক্যাপ্টেন, আর কে ফার্স্ট অফিসার, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এমনকি, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন কি না, অথবা কার ভুলে এই বিপর্যয় ঘটেছে—তা নিয়েও স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে আসেননি তদন্তকারীরা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফ্লাইটটি যখন সমস্যায় পড়ে তখন ‘মে ডে’ সংকেত পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সংকেত কোন পাইলট পাঠিয়েছিলেন, তাও নিশ্চিত করা যায়নি। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয়, কীভাবে পুরো ফ্লাইট সিস্টেম কাটঅফ অবস্থায় চলে গেল, সে বিষয়েও তদন্তে কোনও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
স্বপ্নভঙ্গ: লন্ডনে পরিবার নিয়ে নতুন জীবনের পথে পা রাখতেই মাঝ আকাশে নিভে গেল প্রতীক জোশীর পরিবার
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকেও এখনও পর্যন্ত কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা বা দায় স্বীকার করা হয়নি। সংস্থার এক মুখপাত্র কেবল বলেন, “তদন্ত চলছে। আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি।”
বিমানটি যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। যাত্রীদের অনেকে জানিয়েছেন, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি হঠাৎ কেঁপে উঠে নিচের দিকে নামতে শুরু করে। কয়েকজন যাত্রী শারীরিক আঘাত পান এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে দক্ষতা ও সৌভাগ্যের কারণে একটি বড় বিপর্যয় এড়ানো যায়।
AAIB জানিয়েছে, তারা বোয়িং কর্তৃপক্ষ ও এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট সিমুলেশন রেকর্ড বিশ্লেষণ করছে। পূর্ণাঙ্গ চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ পাবে।
বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা যদি পাইলট ত্রুটির কারণে ঘটে থাকে, তবে তা এয়ার ইন্ডিয়ার প্রশিক্ষণ নীতিতে বড় ফাঁকফোকর প্রমাণ করতে পারে।
আরও পড়ুন :