AlligatorAlcatraz DeportationFlights
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ২৬ জুলাই ২০২৫ : ফ্লোরিডার মাঝারি জঙ্গলঘেরা এলাকায়, দৃষ্টিসীমার বাইরে এক অদ্ভুত কারাগার—নাম ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’। মার্কিন রাজ্য ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস-এর নির্দেশে মাত্র ৮-১০ দিনে নির্মিত এই বন্দীশিবিরটি এখন আন্তর্জাতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
২৫ জুলাই, ২০২৫ তারিখে এখান থেকেই প্রথম দফায় অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে বিমান রওনা দিল। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়, প্রায় ১০০ জন অবৈধ অভিবাসী-কে এখান থেকে বিমানে তোলা হয়েছে এবং বিতাড়নের প্রক্রিয়া এখন পুরোদমে চলছে।
কী এই ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’?
ফ্লোরিডার বিগ সাইপ্রেস ন্যাশনাল প্রিজার্ভ-এর মধ্যে ৬০ মাইল পশ্চিমে মায়ামি থেকে দূরে অবস্থিত এই বন্দীশিবিরটি তৈরি হয়েছে একটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দরের উপর। চারপাশে কুমির, সাপ, ও নানা হিংস্র বন্যপ্রাণে পরিপূর্ণ জলাভূমি ঘেরা। নিরাপত্তা হিসেবে এখানে রয়েছে মাইলের পর মাইল রেজার ওয়্যার, ২০০টিরও বেশি নজরদারি ক্যামেরা, চলমান ট্রেলার হাউজিং, সাময়িক আদালত ও সরাসরি রানওয়ে।
প্রথম পর্যায়ে এখানে ২,৫০০ জন বন্দী রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা দ্রুত ৫,০০০ বেডে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অজ়ি ওসবোর্ন: শেষ কনসার্টেই রেখে গেলেন মেটাল ইতিহাসের চিরকালীন সাক্ষ্য
✈️ বিতাড়ন শুরু: বিমান থেকে সোজা বিতাড়ন শিবিরে
২৫ জুলাই গভর্নর ডিস্যান্টিস নিজে ঘোষণা করেন যে, ‘২ থেকে ৩টি বিমান ইতিমধ্যেই এখানে অবতরণ করেছে এবং ১০০ জন অভিবাসীকে বিতাড়ন করা হয়েছে।’ এই বিমানের গন্তব্যস্থল প্রকাশ না করলেও অনুমান করা হচ্ছে, বন্দিদের প্রথমে লুইসিয়ানা ও টেক্সাসের কেন্দ্রীয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়, তারপর সেখান থেকে নিজ নিজ দেশের উদ্দেশে ফেরত পাঠানো (AlligatorAlcatraz DeportationFlights) হচ্ছে।
️ রাজনৈতিক বার্তা ও বিতর্ক
গভর্নর ডিস্যান্টিস এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই শিবিরকে ‘মডেল’ হিসাবে তুলে ধরছেন। ট্রাম্প তো রসিকতা করে বলেন—
“যদি কেউ পালাতে চায়, তাকে তো আগে অ্যালিগেটর থেকে বাঁচতে হবে!”
এই ধরনের বক্তব্য নিয়েও প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইনপ্রণেতারা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলি এই শিবিরকে “অমানবিক, অবাধ্য ও অবৈধ” বলে দাবি করেছে। তাঁদের অভিযোগ, এখানে বন্দিদের জন্য পর্যাপ্ত পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও ধর্মাচরণ-এর ব্যবস্থা নেই। বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা কেন্দ্র পরিদর্শনে চাইলেও, তাঁদের প্রবেশাধিকার অস্বীকার করা হয়।
পরিবেশ ও আদিবাসী অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
এই শিবির গড়ে তোলা হয়েছে আদিবাসী মিকোসুকি ও সেমিনোল গোষ্ঠীর পবিত্র ভূমির কাছে। তাঁদের অনুমতি ছাড়াই এই নির্মাণ ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশবিদ ও আদিবাসী সংগঠনগুলি ফেডারেল কোর্টে মামলা করেছে, দাবি করছে এই নির্মাণ ফেডারেল পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করেছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম জানিয়েছেন, অন্তত ১৪ জন মেক্সিকান নাগরিক এখন ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’-এ আটক। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে আমেরিকান প্রশাসনের কাছে এই বন্দিদের মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন :
‘শ্রাবণ মাসে মাটন রোগণ জোশ !’ – বিহারে ভোটের আগে রান্নাঘরের রাজনীতি চরমে
কলকাতা ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো কি বেসরকারি হাতে? নতুন আগ্রহপত্র ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে