AmbatiRayudu BoundaryRope Catch
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক: টি–২০ বিশ্বকাপ ২০২৪ সালের ফাইনালে ভারতের জয়ের মুহূর্তকে আজও ভোলেনি ক্রিকেটপ্রেমীরা। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার ডেভিড মিলার যখন ছয় মারতে উদ্যত হয়েছিলেন, তখন বাউন্ডারির ঠিক সামনে গিয়ে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেছিলেন সুর্যকুমার যাদব। সেই ক্যাচকেই ম্যাচ–টার্নিং মোমেন্ট বলা হয়। তবে এ নিয়ে শুরু থেকেই কিছুটা বিতর্ক ছিল। এবার প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অম্বতি রায়াডু এমন এক বিস্ফোরক দাবি (AmbatiRayudu BoundaryRope Catch) করলেন, যা নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
রায়াডু সম্প্রতি এক আলোচনায় জানিয়েছেন, সেই ম্যাচে আসলে বাউন্ডারি রোপ বা সীমারেখা সামান্য পিছনে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। সাধারণত রোপের বাইরে ক্যামেরা, চেয়ার বা মনিটর বসানোর পর সেটিকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে ওয়ার্ল্ড-ফিড ব্রডকাস্টারদের সুবিধার জন্য চেয়ার ও মনিটর সরানোর সময় রোপটিকে কিছুটা পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে তা আর আগের অবস্থায় ফেরানো হয়নি। এর ফলে আসল খেলার জায়গা খানিকটা বেড়ে যায়। রায়াডুর দাবি— “যদি রোপ তার মূল অবস্থানে থাকত, মিলারের শট হয়তো ছয় হয়ে যেত। কিন্তু যেহেতু রোপ পিছনেই ছিল, তাই সুর্যকুমারের হাতে সেটি ধরা সম্ভব হয়েছিল।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি সামগ্রিক রপ্তানি যে হারে বেড়েছে তার ৭ গুণ দ্রুত হারে বেড়েছে
ফাইনালের শেষ ওভারে হার্দিক পাণ্ডিয়ার করা বলে মিলার জোরে শট খেলেন। বল সরাসরি বাউন্ডারি পার হয়ে যাওয়ার পথে ছিল। ঠিক সেই সময় সুর্যকুমার লাফিয়ে ওঠেন, হাত বাড়িয়ে বলটি কুড়িয়ে আনেন এবং ভেতরে নিয়ন্ত্রণ রেখে ধরেন। দর্শক, ধারাভাষ্যকার, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ— সবার কাছে এই ক্যাচ ছিল ফাইনালের সেরা মুহূর্ত। ভারতের জয় নিশ্চিত হওয়ার পিছনে এই একটি ক্যাচই ছিল প্রধান বাঁকবদল।
ম্যাচের পরই অনেক সমালোচক প্রশ্ন তুলেছিলেন— বলটি আসলেই সীমানার ভেতরে ধরা হয়েছিল তো? রোপ ছুঁয়ে ফেলেছিল কি না? তবে আম্পায়াররা রিপ্লে দেখে সেটিকে “ক্লিন ক্যাচ” ঘোষণা করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিতর্ক চাপা পড়ে যায়। কিন্তু রায়াডুর সাম্প্রতিক মন্তব্যে আবার নতুন করে আলোচনায় ফিরেছে সেই ঘটনা। তিনি স্পষ্ট বলেছেন— “ওটা সাফ ক্যাচ ছিল। কিন্তু ভাগ্য আমাদের পক্ষে ছিল। কারণ রোপ যদি আগের জায়গায় থাকত, তাহলে সেটা ছয় হয়ে যেত।”
ম্যাচের পর সাংবাদিকরা সুর্যকুমারকে ক্যাচ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনিও খানিকটা দ্বিধা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি হেসে বলেন— “আমি জানি না, ওটা ছয় হতো কি না। তবে আমি শুধু চেষ্টা করেছিলাম বলটা ভেতরে রাখতে।” তাঁর বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, তিনিও বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না।
কিছু ক্রিকেট বিশ্লেষক মনে করছেন, রায়াডুর দাবি আংশিক সত্যি হতে পারে। মাঠকর্মীরা অনেক সময় ব্রডকাস্টিং যন্ত্রপাতি সামলাতে গিয়ে সীমারেখা এদিক–ওদিক করে ফেলেন। তবে ম্যাচ শুরুর আগে সেটি ফেরত আনার নিয়ম রয়েছে। অন্যদিকে, অনেকে বলছেন— এটা নিছক বিতর্ক তৈরির চেষ্টা। কারণ আম্পায়াররা একাধিক কোণ থেকে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ফলে ক্যাচের বৈধতা নিয়ে আর প্রশ্ন ওঠা উচিত নয়।
রায়াডুর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ লিখেছেন— “এতে ভারতের জয়ের মাহাত্ম্য কমে না, বরং ভাগ্যের সঙ্গে দক্ষতার মিলেই শিরোপা এসেছে।” আবার কেউ মন্তব্য করেছেন— “যদি রোপ সরানো থাকে, তবে খেলার ন্যায্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ে।” এই নিয়ে এখনো চর্চা থেমে নেই।
যা-ই হোক, ক্রিকেট ইতিহাসে সুর্যকুমার যাদবের সেই ক্যাচ চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রায়াডুর মন্তব্যে বিতর্ক আবার জোরালো হলেও, বাস্তবে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। ভারতের হাতে যে বিশ্বকাপ উঠেছিল, সেই সত্যিটিকে আর কোনো বিতর্ক মুছে ফেলতে পারবে না।
আরও পড়ুন :
দলিপ ট্রফি থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে বদলির নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে BCCI
এআইএফএফ-এর সাথে অচলাবস্থায় আইএসএল ক্লাবগুলির হুঁশিয়ারি: স্থায়ীভাবে বন্ধ হতে পারে টুর্নামেন্ট