TrumpIranConflict
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ইরানকে ঘিরে ফের চরম উত্তেজনার বাতাবরণ। এবার সেই আগুনে ঘি ঢাললেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (TrumpIranConflict)। একেবারে খোলাখুলি হুমকির সুরে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই কোথায় লুকিয়ে আছেন, সেটা আমেরিকার জানা — এখনই তাঁকে হত্যা করা হচ্ছে না, তবে দরকার পড়লে যে করা হবে, সে বার্তাও দিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের দাবি, আমেরিকার বিমান বাহিনী এখন ইরানের আকাশে পুরো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। ইরান যদি ‘বিনা শর্তে আত্মসমর্পণ’ না করে, তাহলে তাদের “ভয়ানক পরিণামের মুখে পড়তে হবে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, এখন আমেরিকার সামনে দুটো রাস্তা—এক, ফোন করে কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যা মেটানো, আর দুই, ভয়ঙ্কর ‘বাঙ্কার‑বাস্টার’ বোমা ফেলা।
এই ‘বাঙ্কার‑বাস্টার’ বোমা মানে কিন্তু সাধারণ কিছু নয়। ট্রাম্প যেটার কথা বলছেন, সেটা হল GBU‑57, যেটাকে Massive Ordnance Penetrator বা সংক্ষেপে MOP বলা হয়। এই বোমা প্রায় ৬০ মিটার গভীরে ঢুকে বাঙ্কার ধ্বংস করে দিতে পারে। লক্ষ্য একটাই — ইরানের গোপন পারমাণবিক ঘাঁটি, বিশেষ করে Fordow-এর মতো সুরক্ষিত জায়গা।
নিজস্ব প্রযুক্তিতে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ রাডার উন্মোচন করল ইরান, নজরদারিতে নতুন দিগন্ত
ইসরায়েল আগেই ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ শুরু করেছে। কিছু জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোও হয়ে গেছে। এখন ইসরায়েল চাইছে, আমেরিকা তাদের আরও বড়সড় সহযোগিতা করুক। ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে তার দেশ হাত মেলাতে প্রস্তুত। তবে তিনি এও বলেছেন, “ইসরায়েল যা চাইবে, তাই করব” এমনটা নয়।
তেহরানে এই হুমকিকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ, Fordow ও Natanz-এর মতো জায়গাগুলি যেখানে মাটির অনেক নিচে রয়েছে, সেগুলোর ওপর এই ধরনের বোমা পড়লে শুধু পারমাণবিক ঘাঁটি নয়, তার আশেপাশের এলাকাও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এমনকি পারমাণবিক বিকিরণের আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল চিন্তিত। ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ট্রাম্পের এই যুদ্ধসুলভ মনোভাবকে সমর্থন করছে না। G7 বৈঠকে ট্রাম্প যেখানে কঠিন ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সেখানে ইউরোপীয় দেশগুলো বারবার আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পক্ষে সওয়াল করেছে।
ইরান অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তারা জানিয়ে দিয়েছে, তারা ভয় পায় না। বরং ইসরায়েল ও আমেরিকার যৌথ কৌশলের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত তারা। তবে রাস্তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তা স্পষ্ট। যুদ্ধ লাগলে তার খেসারত যে কেবল সেনারা দেবে না, সাধারণ মানুষের জীবনেও তার প্রতিফলন পড়বে, সেটা বুঝে গেছেন অনেকেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই মুহূর্তে ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় আসেন কিংবা মার্কিন নীতিনির্ধারকরা তার সঙ্গে একমত হন, তাহলে বাঙ্কার ফাটানো বোমা ব্যবহার এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। যদিও শেষ পর্যন্ত শান্তির পথেই যদি সমাধান হয়, সেটা পুরো বিশ্বের পক্ষেই মঙ্গল।
আরও পড়ুন :
প্রেমের নিদর্শন: স্ত্রীর জন্য তাজমহলের আদলে বাড়ি নির্মাণ মধ্যপ্রদেশের শিক্ষকের
দেশের প্রথম ‘সাত্ত্বিক’ ট্রেন: ভারতীয় রেলের অভিনব পদক্ষেপ নিরামিষ যাত্রীদের জন্য