ঢাকা, বাংলাদেশ, ২৩ মে ২০২৫: বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ প্রশাসনের শীর্ষ পদে আসীন বিদেশি নাগরিকদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (BangladeshPolitics) ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই)। এই পদক্ষেপটি গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণ:
সূত্রের মতে, প্রশাসনের শীর্ষ পদে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ এবং তাদের মাধ্যমে সেন্ট মার্টিন দ্বীপসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নিয়ন্ত্রণ বহুজাতিক সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ:
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, মোল্লা মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার অধীনে বিভিন্ন বিদেশি নাগরিককে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে মার্কিন নাগরিক খলিলুর রহমানকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, ব্রিটিশ নাগরিক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে পরিবেশ উপদেষ্টা, এবং অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের ‘চিকেনস নেক’কে ঘিরে বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ পরিকল্পনা: ভারতের নিরাপত্তায় নতুন চ্যালেঞ্জ
ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চাপ বাড়াল বিএনপি
অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচার:
অভিযোগ রয়েছে যে, এই বিদেশি কর্মকর্তারা কাটমানি ও তোলাবাজির মাধ্যমে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন, যা কানাডা, সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তান, দুবাই, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। এই অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি হয়েছে।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপট:
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিদেশি কর্মকর্তারা দেশত্যাগ করতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরে এই নিষেধাজ্ঞার তালিকা পাঠানো হয়েছে এবং অভিবাসন দফতর ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তাদের বিশেষ নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে।এই পদক্ষেপের প্রতি বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরকার পক্ষের মতে, এটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। অন্যদিকে, বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপকে স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও প্রশাসনের শীর্ষ পদে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলমান আলোচনা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন :
বিমানবন্দর প্রস্তুত, তবু আকাশে উড়তে পারছে না স্বপ্ন
ইংল্যান্ড সিরিজের আগে দুঃসংবাদ পেল ভারত, সর্বোচ্চ ৩টি টেস্ট খেলতে পারবেন এই তারকা