Breaking News

BenGvir AlAqsaMosque

আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি মন্ত্রীর প্রার্থনা: উত্তেজনার নতুন আগুন

ইজরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন-গভিরের আল-আকসা মসজিদে প্রকাশ্যে প্রার্থনা ঘিরে শুরু হল মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা। বহু মুসলিম দেশ একে চরম প্ররোচনা বলে অভিহিত করেছে।

BenGvir AlAqsaMosque and Rising Tensions in 2025 %%page%% %%sep%% %%sitename%%

BenGvir AlAqsaMosque

ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। ৩ রা  আগস্ট, ২০২৫ রবিবার, তিনি জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেন এবং ঘোষণা করেন যে তিনি সেখানে “প্রার্থনা করেছেন” (BenGvir AlAqsaMosque)। তাঁর এই কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলা status quo-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন—যার অধীনে অ-মুসলিমরা কমপাউন্ডে যেতে পারলেও প্রার্থনা করতে পারে না।

এই ঘটনার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে আবার উত্তেজনার সুর চড়তে শুরু করেছে। প্রতিবাদে মুখর প্যালেস্টাইন, আরব দেশগুলি এমনকি আন্তর্জাতিক মহলও। কারণ, বেন-গভির শুধু প্রার্থনাই করেননি, তিনি সেখান থেকে রাজনৈতিক বার্তাও দিয়েছেন—গাজা সম্পূর্ণ দখলের আহ্বান জানিয়েছেন।

৩ রা আগস্ট, ইহুদি শোক দিবস তিশা বি’আভ উপলক্ষে বহু ইসরায়েলি নাগরিক আল-আকসা কমপাউন্ডে প্রবেশ করেন। দিনটি ইহুদিদের জন্য ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দিনে জেরুজালেমের প্রাচীন মন্দির ধ্বংস হয়েছিল বলে বিশ্বাস। এই প্রেক্ষিতে প্রায় ১,২৫০ জন ইহুদি উপাসক সেখানে প্রবেশ করেন বলে ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ জানায়। তাদের অনেকেই সেখানেই প্রার্থনা করেন, কেউ কেউ আবার গান ও নৃত্যে অংশ নেন—যা ইসলামিক বিশ্বে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

বেন-গভির পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেন,
“আমি এখানে এসেছি ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বিজয়ের জন্য, বন্দিদের মুক্তির জন্য এবং গাজা পুরোপুরি দখলের পক্ষে প্রার্থনা করতে।”

আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এখান থেকেই নবী মুহাম্মদ (সা.) মিরাজে গমন করেছিলেন। ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা এই স্থানটিকে “টেম্পল মাউন্ট” নামে চিহ্নিত করে এবং বিশ্বাস করেন এটি তাঁদের প্রাচীন দুই মন্দিরের অবস্থানস্থল।

এই জায়গাটি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিপূর্ণ বিতর্কিত। বহু বছর ধরেই একটি অঘোষিত সমঝোতা বা status quo চালু রয়েছে, যেখানে অ-মুসলিমরা এখানে প্রবেশ করতে পারলেও প্রার্থনা করতে পারবে না। বেন-গভির এর আগেও এই নিয়ম ভেঙেছেন এবং বিতর্কে জড়িয়েছেন।

এই ঘটনায় প্রথম প্রতিক্রিয়া আসে জর্ডানসৌদি আরব থেকে। জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
“এই ধরণের পদক্ষেপ ধর্মীয় সংবেদনশীলতা নষ্ট করে এবং তা আন্তর্জাতিক শান্তি চুক্তি লঙ্ঘন করে।”

প্যালেস্টিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মেসহাল বলেন,
“বেন-গভির বারবার প্ররোচনা দিচ্ছেন, যেন জেরুজালেমে আরেকবার হিংসা এবং  সংঘাত সৃষ্টি হয়। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ঘটনার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।”

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয় যে, বেন-গভিরের এই পদক্ষেপ সরকারিভাবে অনুমোদিত নয় এবং status quo পরিবর্তন হয়নি। তবে সমালোচকরা বলছেন, সরকারের নীরব সম্মতি রয়েছে, আর এতে করে সমগ্র প্যালেস্টাইন  অঞ্চল জুড়ে আবার অস্থিরতা বাড়বে।

ভয়ংকর বোমা ‘গাজাপ’ তৈরি করল তুরস্ক, বিস্ফোরণে কাঁপবে শত্রুর ঘাঁটি

‘অপারেশন সিন্দুর’-এ পাকিস্তান চীনা প্রশিক্ষিত NATO-স্টাইল আকাশযুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করেছে, ভারতের সাফল্যে ফাঁস চীনের পরিকল্পনা

বেন-গভির ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ। তিনি এর আগেও আরব বিরোধী মন্তব্য, প্যালেস্তানীয়দের ভূমি থেকে উচ্ছেদের পক্ষে অবস্থান এবং নিজে অস্ত্র হাতে ভিডিও প্রকাশ করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। ২০২২ সালে জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তাঁর নীতি ও বক্তব্য প্রায়শই সংঘাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সময় ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ চলছে প্রায় ৯ মাস ধরে। গাজার দক্ষিণাংশে ভয়াবহ ক্ষুধা ও মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন। এরমধ্যেই আল-আকসা ইস্যুতে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় আরও একাধিক ফ্রন্টে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে—বিশেষত লেবাননের হিজবুল্লাহ বা পশ্চিম তীরের প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীগুলোর দিক থেকে।

আরও পড়ুন :

সেনা অফিসারের হাতে স্পাইসজেট কর্মী আক্রান্ত : অতিরিক্ত ব্যাগেজ ফি ঘিরে তাণ্ডবে মেরুদণ্ড ভাঙলো

মৃত্যু উপত্যকায় জীবনের জন্য প্রার্থনা

ad

আরও পড়ুন: