Bhairav Battalion
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: ভারতীয় সেনা সম্প্রতি একটি নতুন এলিট ইউনিট ‘ভৈরব’ ব্যাটালিয়ন গঠনের ঘোষণা করেছে। এই ব্যাটালিয়ন আধুনিক যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেনার আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে এই ইউনিটের লক্ষ্য হলো দ্রুত, চমকপ্রদ এবং কৌশলগত আক্রমণ পরিচালনা করা।
‘ভৈরব’ ব্যাটালিয়ন নামকরণ করা হয়েছে শিবের ভয়ঙ্কর রূপের নামে, যার প্রতিটি ইউনিটে প্রায় ২৫০ জন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত সেনা সদস্যকে থাকবেন। এই ইউনিটগুলি নিয়মিত পদাতিক ইউনিটের তুলনায় ছোট এবং দ্রুতগামী, যা গোপনীয় অভিযান এবং সীমান্তে দ্রুত আক্রমণ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী এই ইউনিটগুলিকে “উচ্চমাত্রার আক্রমণাত্মক বিশেষ বাহিনী” হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যারা সীমান্তে শত্রুকে যে কোন অবস্থায় চমক দিতে সক্ষম।
ভৈরব ব্যাটালিয়নগুলির সদস্যরা সেনার নিয়মিত পদাতিক ইউনিট থেকে বাছাই করা হবে । প্রথমে তারা ২-৩ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর বিশেষ বাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অন্তত ১ মাসের উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এই প্রশিক্ষণ তাদের বিভিন্ন অস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা, আর্টিলারি এবং সংকেত ব্যবস্থায় দক্ষ করে তোলে।
উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই ইউনিটগুলি সীমান্তে দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল ও বহুমুখী যুদ্ধ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত হয়। এটি ভারতীয় সেনার প্রতিক্রিয়াশীলতা ও দ্রুততার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভৈরব ব্যাটালিয়নগুলি ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এরা শত্রুর অবস্থান চিহ্নিত ও ধ্বংস করতে সক্ষম, সীমান্তে দ্রুত আক্রমণ চালাতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় অবদান রাখে।
ভারতীয় সেনা আধুনিক যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ব্যাপক রূপান্তরের অংশ হিসেবে এই ব্যাটালিয়নগুলি গঠন করেছে। এগুলি শুধুমাত্র সরাসরি যুদ্ধে নয়, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং বিশেষ মিশনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
পাকিস্তান‑আফগান সীমান্ত সংঘর্ষ — ভারতীয় স্বার্থে সম্ভাব্য প্রভাব
তালিবান সরকার কুনার নদীতে বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিল, পাকিস্তানে জলসঙ্কটের আশঙ্কা
বর্তমানে পাঁচটি ভৈরব ব্যাটালিয়ন গঠিত হয়েছে এবং এগুলি পাকিস্তান ও চীন সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে মোট ২৫টি ব্যাটালিয়ন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই ইউনিটগুলি ভারতীয় সেনার উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণ কমান্ডের অধীনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
প্রতিটি ব্যাটালিয়ন ছোট, উচ্চগতির এবং বিশেষ প্রশিক্ষিত হওয়ায় সীমান্তে দ্রুত প্রতিক্রিয়া, হঠাৎ আক্রমণ এবং শত্রুর উপর চমকপ্রদ আক্রমণ চালাতে সক্ষম। এটি ভারতীয় সেনার শক্তি ও কৌশলগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
ভৈরব ব্যাটালিয়নগুলি আধুনিক প্রযুক্তি এবং যুদ্ধ কৌশল ব্যবহার করে সীমান্তে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এই ইউনিটগুলি ড্রোন, সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। এতে তারা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হবে এবং সীমান্তের ঝুঁকি হ্রাস করবে।
ভারতীয় সেনার এই পদক্ষেপ আধুনিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি ও কৌশলগত সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখে নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ব্যাটালিয়নগুলি শত্রুর উপর চমকপ্রদ আক্রমণ চালাতে এবং সীমান্তে ভারতীয় নিরাপত্তা শক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন :
বাংলাদেশে চীনা সহায়তায় তিস্তা নদী প্রকল্পে উত্তেজনা, ভারতের কৌশলগত উদ্বেগ