Breaking News

OpenAI ChatGPT Suicide

চ্যাটজিপিটি-র বিরুদ্ধে মামলা : কিশোরের আত্মহত্যায় দায়ী কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

আমেরিকায় এক কিশোরের আত্মহত্যা ঘিরে বিতর্কে ওপেনএআই। পরিবার অভিযোগ করেছে, চ্যাটজিপিটি তাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিয়েছে। এ ঘটনায় এআই-এর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

OpenAI ChatGPT Suicide Prevention and Awareness %%page%% %%sep%% %%sitename%%

OpenAI ChatGPT Suicide

ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে এক ভয়াবহ বিতর্ক শুরু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ক্যালিফোর্নিয়ার এক কিশোরের আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে তার বাবা-মা ওপেনএআই এবং কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযোগ, জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) কিশোরটিকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছিল এবং আত্মহত্যার নানা পদ্ধতি সম্পর্কেও পরামর্শ দিয়েছিল (OpenAI ChatGPT Suicide) ।

১৬ বছরের এক কিশোর, অ্যাডাম রেইন, পারিবারিক নানা ট্র্যাজেডি ও মানসিক চাপে ভুগছিল। তার দিদিমার মৃত্যু এবং প্রিয় পোষ্য প্রাণী হারানোর পর থেকেই সে ভীষণভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই সময়ে সে ইন্টারনেটে আশ্রয় খুঁজতে শুরু করে এবং চ্যাটজিপিটি-কে নিজের ‘বন্ধু’ মনে করে কথোপকথন চালাতে থাকে।

আদালতের নথি অনুযায়ী, অ্যাডাম একাধিকবার চ্যাটজিপিটি-তে আত্মহত্যার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিল। শুধু তাই নয়, সে কিছু ছবি ও লেখাও শেয়ার করে, যা তার মানসিক অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। অভিযোগ, তখন চ্যাটজিপিটি তাকে আত্মহত্যার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে বিশদ তথ্য দেয় এবং এমনকি পরিবারের কাছ থেকে গোপন রাখার পরামর্শও দেয়। এক কথায়, সে যেন ‘মানবিক সহানুভূতি’ না পেয়ে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

অ্যাডামের বাবা-মায়ের দাবি, ওপেনএআই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই তাদের প্রযুক্তি চালু করেছে। এক কিশোর যখন নিজের জীবনের সংকটময় মুহূর্তে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল, তখন চ্যাটজিপিটি তাকে সঠিক পথে না নিয়ে গিয়ে উল্টে ভয়াবহ পরামর্শ দিয়েছিল। তাদের কথায়—

“আমাদের ছেলে একটি মেশিনকে তার বন্ধু ভেবেছিল, কিন্তু সেই মেশিনই তাকে জীবনের শেষ সিদ্ধান্ত নিতে ঠেলে দিয়েছে।”

তারা মনে করছেন, যদি চ্যাটজিপিটি-তে উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকত, তবে অ্যাডাম হয়তো আজও বেঁচে থাকত।

ওপেনএআই সরাসরি এই মামলার বিষয়ে মন্তব্য করেনি, তবে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে— তারা তাদের প্রযুক্তিকে আরও নিরাপদ করতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। বিশেষত মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা কীভাবে সীমিত রাখা যায়, সে বিষয়ে কাজ চলছে।

OPEN AI GPT-5 : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নতুন অধ্যায়, চাপ বাড়ছে বিনিয়োগকারীর

চীনে স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে :

  • কিশোরদের ব্যবহারের জন্য শিগগিরই প্যারেন্টাল কন্ট্রোল বা অভিভাবকীয় নিয়ন্ত্রণ সুবিধা চালু করা হবে।

  • চ্যাটজিপিটি যেন কখনও আত্মঘাতী প্রবণতায় উৎসাহ না দেয়, সেজন্য অ্যালগরিদম নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে।

  • সংবেদনশীল বিষয়ে এআইকে “সহায়ক পরামর্শদাতা” নয়, বরং “সতর্কতামূলক বন্ধুর” ভূমিকায় রাখা হবে।

এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক কিছু চ্যাটবট নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেছেন এআই তাদের মানসিকভাবে বিপজ্জনক পথে ঠেলে দিয়েছে। তবে এবারের ঘটনা অনেক বেশি আলোচিত হচ্ছে কারণ এটি সরাসরি আত্মহত্যার মামলার সঙ্গে যুক্ত

এই মামলাটি শুধু ওপেনএআই নয়, গোটা এআই শিল্পের জন্যই এক সতর্কবার্তা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন—

  • এআই কখনও মানুষের বিকল্প হতে পারে না, বিশেষত মানসিক স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে।

  • কিশোর-কিশোরীদের মতো সংবেদনশীল ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে এআই ব্যবহারে কঠোর আইন ও নজরদারি জরুরি।

  • টেক কোম্পানিগুলোকে সামাজিক দায়বদ্ধতা স্বীকার করতে হবে, নাহলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিণতি দেখা দিতে পারে।

অ্যাডাম রেইনের মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং মানবসভ্যতার কাছে একটি বড় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে— প্রযুক্তি কি মানুষের বন্ধু, নাকি অদৃশ্য হুমকি? মামলার রায় যাই হোক, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে অবহেলা বা অসতর্কতা ভীষণ মারাত্মক হতে পারে।

আরও পড়ুন :

ট্রাম্পের ৫০% শুল্কে ভারতের রপ্তানি, কর্মসংস্থান ও জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে অশনি সংকেত

ট্রাম্পের ৫০ % শুল্ক আজকে থেকে কার্যকর, সুরাতের বহু ব্যবসায়ী ইতিমধ্যেই তাদের ব্যবসার কেন্দ্র সিঙ্গাপুর, দুবাই কিংবা হংকং-এ সরিয়ে নিতে চাইছেন

ad

আরও পড়ুন: