DonaldTrump WSJLawsuit
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১২টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক (TrumpTariffs) আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ২০২4 সালের নির্বাচনের পর পুনরায় প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার নিউ জার্সি যাওয়ার পথে এয়ারফোর্স ওয়ানে উঠার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি নিজেই এ ঘোষণা করেন।
ট্রাম্প জানান, তিনি ইতোমধ্যে ১২টি দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ সংক্রান্ত বেশ কিছু চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। এই চিঠিগুলোতে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে—কোন পণ্যে কত শতাংশ শুল্ক বসবে এবং এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির অংশ হিসেবে কিভাবে কার্যকর হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি কয়েকটি চিঠি স্বাক্ষর করেছি, সম্ভবত ১২টি দেশের জন্য। বিভিন্ন হারে শুল্ক (TrumpTariffs) আরোপের কথা বলা হয়েছে। এগুলো সোমবার পাঠানো হবে। এটা ‘নাও অথবা ছেড়ে দাও’ ধরনের প্রস্তাব।”
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি: ইলেকট্রনিক পণ্যে স্বস্তি, চীনা মোবাইলের দাম বাড়ছে না
তবে কোন কোন দেশকে এই শুল্ক সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। ট্রাম্প কেবল এটুকু জানান যে, “সোমবারই এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।”
নতুন শুল্কের পেছনে কী যুক্তি?
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শিল্প ও উৎপাদন খাতকে রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মার্কিন প্রাধান্য বজায় রাখার একটি কৌশল। বিগত প্রেসিডেন্সির সময়ও ট্রাম্প চীন, কানাডা, মেক্সিকো সহ একাধিক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন এবং আমেরিকান কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের স্বার্থে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় বাণিজ্য কৌশল পুনর্গঠন করেছিলেন।
ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় এসেই তার সেই আগের নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখছেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। একদিকে মুদ্রাস্ফীতি, অন্যদিকে আমদানিনির্ভরতা কমানোর জন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ হতে পারে একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত।
বিশ্ব বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে?
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই ১২টি দেশের মধ্যে বড় রপ্তানিকারক যেমন চীন, ভারত, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা ভিয়েতনাম থাকে, তাহলে বৈশ্বিক বাজারে চমক জাগানো প্রভাব ফেলতে পারে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ। এতে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার, কাঁচামাল এবং প্রযুক্তিপণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-এর কিছু শর্তের সঙ্গে এই শুল্কের বিরোধ থাকতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন। অতীতে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক শুল্ক আরোপ আন্তর্জাতিক আইনি বিরোধের কারণ হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ডেমোক্র্যাটদের একাংশ বলছে, বাণিজ্য নিয়ে হঠাৎ করে এমন একতরফা সিদ্ধান্ত মার্কিন অর্থনীতিকে অস্থির করে তুলতে পারে। অন্যদিকে রিপাবলিকান সমর্থকরা ট্রাম্পের পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে শক্ত অবস্থান হিসেবেই দেখছেন।
এ বিষয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের রাজনৈতিক বিশ্লেষক জন ব্র্যাডলি বলেন, “ট্রাম্পের ‘চিঠি কূটনীতি’ মার্কিন বাণিজ্য নীতিতে একটা নতুন ধারা তৈরি করতে পারে। তবে এতে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা সোমবারের পর স্পষ্ট হবে।”
সোমবার যে ১২টি দেশের নাম প্রকাশ করা হবে, তাদের মধ্যে যদি দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ থাকে, তাহলে এর প্রভাব ভারতসহ গোটা অঞ্চলের ওপর পড়তে পারে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার, কূটনীতি এবং অর্থনীতিবিদরা গভীর নজর রাখছেন।
আরও পড়ুন :
নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করলেন ইলন মাস্ক, নাম ‘আমেরিকা পার্টি’
ইউরোপা লিগ-বিজয়ী জাইরো সাম্পেরিওকে দলে নিল নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি