DonaldTrump WSJLawsuit
ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি মহাবিরল মানহানি মামলা দায়ের করেছেন সংবাদমাধ্যম জগতে অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান ডাও জোন্স অ্যান্ড কোং, তাদের মূল সংস্থা নিউজ কর্পোরেশন, মিডিয়া টাইকুন রুপার্ট মারডক, এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের (WSJ) দুই রিপোর্টারের বিরুদ্ধে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (DonaldTrump WSJLawsuit)।
মামলার মূল বিষয়বস্তু
ট্রাম্পের দাবি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত জুন মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তাঁর নামে “মিথ্যা ও মানহানিকর” তথ্য ছড়িয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ২০০৩ সালে কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টিন-কে জন্মদিনে একটি “যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ চিঠি ও ছবি” পাঠিয়েছিলেন, যাতে লেখা ছিল:
“Happy Birthday – and may every day be another wonderful secret.”
এই বক্তব্যকে ট্রাম্প সরাসরি “বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন,
“আমি কোনও ছবি আঁকি না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা একটি জঘন্য চরিত্রহনন।”
⚖️ মামলা কোথায় দায়ের হয়েছে?
মামলাটি দায়ের হয়েছে মিয়ামির ফেডারেল আদালতে। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ট্রাম্পের দাবি, সংবাদপত্রটি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে, যা তাঁকে “বিশ্বের সামনে হেয় এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত” করেছে।
মামলার আসামিদের তালিকায় রয়েছেন:
Dow Jones & Co.
News Corp
Rupert Murdoch (প্রকাশনা সংস্থার প্রধান)
Khadeeja Safdar ও Joseph Palazzolo (WSJ-এর প্রতিবেদক)
“Actual Malice” ও First Amendment
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম স্বাধীনতার সুরক্ষায় রয়েছে First Amendment, কিন্তু জনপরিচিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় বাদীকে প্রমাণ করতে হয় “Actual Malice”, অর্থাৎ সংবাদমাধ্যম জেনেশুনেই মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে।
ট্রাম্পের আইনজীবীদের দাবি,
“WSJ-র দুই রিপোর্টার তথ্য যাচাই না করেই প্রতিবেদন ছেপেছেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ক্ষতি সাধন।”
শিরার সমস্যায় ভুগছেন ট্রাম্প, হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে স্বাস্থ্য জল্পনার অবসান
WSJ-এর প্রতিক্রিয়া
Dow Jones এবং Wall Street Journal জানিয়েছে, তারা তাদের প্রতিবেদনকে সঠিক ও সাংবাদিকতার নীতি অনুযায়ী বলেই বিশ্বাস করে।
এক বিবৃতিতে Dow Jones বলেছে:
“আমরা দৃঢ়ভাবে এই মামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করব। প্রতিবেদনে যথাযথ গবেষণা এবং সম্পাদকীয় মানদণ্ড বজায় রাখা হয়েছিল।”
মামলার পটভূমি ও সময়চিত্র
২০২৪-এর শেষ দিকে জেফ্রি এপস্টিন কাণ্ডে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে ট্রাম্পের নাম।
২০২৫ সালের জুন মাসে, WSJ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠানোর অভিযোগ তোলে।
১৮ জুলাই, ২০২৫: ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করেন।
দাবি: ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ।
মিডিয়া বনাম ট্রাম্প: পুরনো শত্রুতা
এটি প্রথম নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও CNN, New York Times-এর মতো সংবাদমাধ্যমকে একাধিকবার আইনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তবে এটি রুপার্ট মারডক ও WSJ-এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় আইনি আঘাত, যাঁরা এক সময় ট্রাম্পের সমর্থক বলেই পরিচিত ছিলেন।
এই মামলা শুধু একটি সাংবাদিকতার মানহানি সংক্রান্ত বিষয় নয়—এটি মার্কিন রাজনীতিতে মিডিয়া বনাম ট্রাম্প শিবিরের নতুন লড়াইয়ের সূচনা।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও ট্রাম্প নিজেকে নেতৃত্বের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখতে চান, এবং এই মামলা সেই অবস্থানকেই দৃঢ় করার হাতিয়ার হতে পারে।
আরও পড়ুন :
গান্ধীর একমাত্র স্বেচ্ছায় আঁকানো তৈলচিত্র নিলামে আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি