DRDOEspionage SpyArrest
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: রাজস্থানের সীমান্তবর্তী জৈসলমীরের চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ সংলগ্ন DRDO গেস্ট হাউস থেকে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। এখানকার ম্যানেজার মহেন্দ্র প্রসাদ-কে গ্রেফতার করেছে রাজস্থানের CID ইন্টেলিজেন্স (Security)। অভিযোগ— তিনি গত পাঁচ বছর ধরে পাকিস্তানের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর জন্য সংবেদনশীল সামরিক তথ্য পাচার করছিলেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহেন্দ্র প্রসাদ Official Secrets Act, 1923-এর অধীনে অপরাধ করেছেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি মোবাইল ফোন, যা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তেই উঠে এসেছে— DRDO বিজ্ঞানী, সেনা অফিসার ও বিভিন্ন সামরিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত তথ্য পাকিস্তানে পাঠাতেন, বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে।
সূত্র বলছে, স্বাধীনতা দিবসের আগে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো গোটা সীমান্ত অঞ্চলে নজরদারি বাড়ায়। তখনই মহেন্দ্র প্রসাদের সন্দেহজনক আচরণ নজরে আসে। তিনি বিভিন্ন সময়ে গেস্ট হাউসে আগত DRDO বিজ্ঞানী ও ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের আসা যাওয়া, থাকার সময়সূচি, এমনকি তাদের সঙ্গে আলোচনা হওয়া প্রকল্প সম্পর্কিত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করতেন। এই তথ্য তিনি পাকিস্তানে তাঁর ISI হ্যান্ডলারদের পাঠাতেন।
রাজস্থানের CID ইন্টেলিজেন্স (Security)-এর ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বিশ্নুকান্ত জানিয়েছেন— “এই ধরনের সংবেদনশীল সামরিক এলাকার নিরাপত্তা ভেদ করা ভারতের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তথ্য পাচারের কথা স্বীকার করেছে।”
তদন্তে জানা গেছে, মহেন্দ্র প্রসাদ প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর ধরে DRDO গেস্ট হাউসে কর্মরত ছিলেন। গেস্ট হাউসের ম্যানেজার হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তাদের আতিথেয়তার ব্যবস্থা করা। পরিবারের সঙ্গে তিনি একই গেস্ট হাউসে থাকতেন। তবে সম্প্রতি তাঁর পরিবারকে উত্তরাখণ্ডের আলমোরায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়— যা তদন্তকারীদের সন্দেহ আরও গভীর করেছে।
মহেন্দ্র প্রসাদের কাছ থেকে যে তথ্য পাকিস্তানে গেছে বলে অভিযোগ, তার মধ্যে রয়েছে—
DRDO বিজ্ঞানী ও সেনা অফিসারদের যাতায়াত ও থাকার সময়সূচি।
চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে চলা মিসাইল ও অস্ত্র পরীক্ষার বিবরণ।
গেস্ট হাউসে সেনা ও DRDO কর্মীদের গতিবিধি।
সামরিক মিটিং, কনফারেন্স ও সরঞ্জাম পরিবহনের তথ্য।
এই সমস্ত তথ্য শত্রু রাষ্ট্রের হাতে পৌঁছনো মানেই ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুতর নিরাপত্তা বিঘ্ন।
তদন্তকারী দল দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে, যাতে রয়েছে সন্দেহজনক চ্যাট, ফটো ও ভিডিও। এগুলো ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, তথ্য আদানপ্রদানের জন্য WhatsApp, Facebook Messenger ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছে।
সেনা অফিসারের হাতে স্পাইসজেট কর্মী আক্রান্ত : অতিরিক্ত ব্যাগেজ ফি ঘিরে তাণ্ডবে মেরুদণ্ড ভাঙলো
মহেন্দ্র প্রসাদকে বর্তমানে জৈসলমীরের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং CID তাঁর রিমান্ড চাইবে, যাতে গোটা নেটওয়ার্ক ও ISI হ্যান্ডলারদের সন্ধান পাওয়া যায়।
DRDO গেস্ট হাউস চন্দন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জের খুব কাছেই অবস্থিত— যা ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা পরীক্ষা কেন্দ্র। এখানে নিয়মিত মিসাইল, আর্টিলারি ও অন্যান্য অস্ত্র পরীক্ষা হয়। এ ধরনের স্থানে নিরাপত্তা লঙ্ঘন দেশের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি আটকাতে শুধু প্রযুক্তিগত নজরদারি নয়, বরং হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স ও কর্মীদের পটভূমি যাচাই আরও জোরদার করতে হবে।
আরও পড়ুন :
জলপাইগুড়িতে ১৫ জন আক্রান্ত, ইঁদুরবাহিত লেপ্টোস্পাইরা নিয়ে উদ্বেগ
জর্জিনাকে রোনালদোর দেওয়া আংটির দাম কতো জানেন?