GazaUnderAttack IsraelPalestine
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : প্যালেস্তাইনের গাজা শহরে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইজরায়েল পরিকল্পিত স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার (২০ আগস্ট) ভোর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র বোমাবর্ষণ ও আর্টিলারি হামলা চালায়। এর পর থেকেই হাজার হাজার বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপত্তার খোঁজে শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের (GazaUnderAttack IsraelPalestine) দিকে সরে যাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, শহরের জেইতুন, সাবরা ও জাবালিয়া এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইজরায়েলি সেনারা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান শক্ত করছে এবং অগ্রসর হচ্ছে ভেতরের দিকে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন নিশ্চিত করেছেন যে, গাজা সিটিতে প্রাথমিক অভিযান শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা গাজা সিটিতে আক্রমণের প্রথম ধাপ চালু করেছি এবং জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় সেনারা অভিযান চালাচ্ছে।” এ বক্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ইজরায়েল ধাপে ধাপে পুরো শহর নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে।
একটি শহরে যেখানে এক কোটি দশ লাখেরও বেশি প্যালেস্তানীয় বসবাস করেন, সেখানে এই আক্রমণ শুরু হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারগুলো সীমিত সম্পদ, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে মরিয়া হয়ে বেরিয়ে পড়ছে। অনেকে গাড়ি বা গাধার গাড়িতে করে পালাচ্ছেন, আবার কেউ হেঁটে শরণার্থী শিবির কিংবা আপেক্ষিকভাবে নিরাপদ এলাকা খুঁজছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চারদিকে ধ্বংসস্তূপ, ধোঁয়া ও আহতদের আর্তনাদে পরিস্থিতি ক্রমশ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস এ পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত শঙ্কাজনক’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “এই আক্রমণ অবশ্যম্ভাবীভাবে মৃত্যু ও ধ্বংস ডেকে আনবে।” মানবাধিকার সংগঠনগুলোও একযোগে এই আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে বলছে, যেকোনো স্থল অভিযান সাধারণ মানুষের প্রাণহানি বাড়াবে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধ : গাজা শহরে বড়সড় অভিযানের আগে ৫০ হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকতে পারে ইজরায়েল
তবে আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করেই ইজরায়েল স্পষ্ট করেছে যে তারা তাদের লক্ষ্য থেকে সরে আসবে না। তাদের মতে, হামাসকে নির্মূল এবং গাজা সিটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। এ কারণে যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে ধারণা করছে বিশেষজ্ঞরা।
গাজা সিটির আকাশে ধোঁয়া আর মাটিতে লাশ—এই করুণ বাস্তবতার মুখে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ জীবন বাঁচাতে পালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কড়া সমালোচনা সত্ত্বেও ইজরায়েলের আগ্রাসন থেমে নেই। প্রশ্ন এখন একটাই—এই সংকট থেকে প্যালেস্তানীয়রা কবে মুক্তি পাবে এবং বিশ্ব সম্প্রদায় কতটা কার্যকরভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে?
আরও পড়ুন :
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে জনপ্রিয়তা দ্রুত তলানিতে – দ্য ইকোনোমিস্ট