GazaWar Israel Strategy update
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নতুন করে আরও ভয়াবহ মোড় নিতে চলেছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, গাজা সিটিতে বড় আকারের সামরিক অভিযানের প্রস্তুতির জন্য প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে (GazaWar Israel Strategy update)। এই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে, কারণ ইতোমধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় চলছে।
রয়টার্স জানাচ্ছে, ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে মোতায়েন শুরু হবে।
রিজার্ভ বাহিনী মূলত গোয়েন্দা, বিমান ও সহায়ক ইউনিটে কাজ করবে।
এদের মাধ্যমে ফ্রন্টলাইনে থাকা অ্যাকটিভ ডিউটি সৈন্যদের বদলি করা হবে, যাতে গাজা সিটির আক্রমণাত্মক অভিযানে সক্রিয় সেনারা মনোনিবেশ করতে পারে।
অভিযানের মূল লক্ষ্য— হামাসকে ধ্বংস করা এবং গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ অভিযানের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন “Gideon’s Chariots B” নামে একটি বিশেষ পরিকল্পনা।
এর লক্ষ্য গাজা সিটির ঘেরাও এবং ধাপে ধাপে দখল নেওয়া।
FT-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই পরিকল্পনায় ৬০,০০০ রিজার্ভিস্ট পর্যন্ত মোতায়েন করা হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইজরায়েলের অন্যতম বড় সামরিক মোতায়েন।
AP জানাচ্ছে, প্রায় ২২ মাসের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত গাজায় ৬২,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
খাদ্যাভাব, জল সংকট ও স্বাস্থ্যসেবা ধ্বংস হয়ে পড়েছে।
গাজার বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, নতুন করে বড় অভিযান শুরু হলে পরিস্থিতি “অসহনীয় বিপর্যয়ে” পৌঁছাবে।
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেটানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন—
“হামাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এবং আমাদের সব বন্দি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান থামবে না।”
অর্থাৎ ইজরায়েল এখন সর্বাত্মক সামরিক সমাধানের পথে হাঁটছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবস্থান আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো ইজরায়েলের নিরাপত্তা অধিকারের পক্ষে থাকলেও, ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
আরব দেশগুলো অভিযানের বিরোধিতা করে বলছে, এটি ফিলিস্তিনিদের “সম্পূর্ণ ধ্বংসের নীতি।”
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেও গাজা সিটি অভিযান নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় সংঘর্ষের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। ইজরায়েলের রিজার্ভিস্ট মোতায়েন প্রমাণ করে— আসন্ন সপ্তাহগুলোতে গাজা সিটিতে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ অনিবার্য। এই সিদ্ধান্ত শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, সমগ্র বিশ্বের ভূরাজনীতিকে নাড়িয়ে দিতে পারে। প্রশ্ন উঠছে— সামরিক শক্তি দিয়ে কি সত্যিই দীর্ঘস্থায়ী সমাধান আনা সম্ভব, নাকি এর ফলে নতুন করে আরও হিংসার বীজ বপন হবে?
আরও পড়ুন :
বাসভবনে ঢুকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে চড়, দিল্লিতে নিরাপত্তা প্রশ্নে নতুন বিতর্ক