SuzukiSwiftShutdown
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কমপ্যাক্ট গাড়ি Suzuki Swift। কিন্তু হঠাৎই জাপানে বন্ধ হয়ে গেল (SuzukiSwiftShutdown) এই গাড়ির উৎপাদন। চীনের Rare Earth নিষেধাজ্ঞার জেরে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হল Suzuki Motor Corp.—এই নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী গাড়ি শিল্পকে এক নতুন সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিল।
Nikkei Asia সূত্রে জানা গেছে, জাপানের সাগারা (Sagara) প্ল্যান্টে ২৬ মে থেকে ৬ জুন পর্যন্ত Swift গাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ ছিল। সংস্থা জানিয়েছে, চীনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে যে পার্টস গুলোতে Rare Earth Magnets লাগে, তার সরবরাহ চেইন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
“Rare Earth” বলতে বোঝানো হয় এমন কিছু খনিজ পদার্থ, যেগুলি ইলেকট্রনিক্স, মোটর, ব্যাটারি, সেন্সর, এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। Suzuki–র মতে, Swift গাড়ির power steering system, EV motor এবং ব্রেকিং ইউনিটে এসব Rare Earth Magnet অপরিহার্য।
চীন বর্তমানে বিশ্বের ৯০% Rare Earth Magnets–এর রপ্তানিকারক দেশ। এপ্রিল ২০২৫ থেকে চীন নির্দিষ্ট রপ্তানি অনুমোদন ছাড়া এসব খনিজ বিদেশে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে একাধিক দেশের শিল্পক্ষেত্রে হঠাৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
Suzuki প্রথম কোম্পানি নয়, যেটি চীনা নিষেধাজ্ঞার ফলে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
Ford ও GM তাদের কয়েকটি প্ল্যান্টে উৎপাদন হ্রাস করেছে।
Tesla ও BMW বিকল্প বাজার থেকে খনিজ খুঁজতে ব্যস্ত।
Toyota ইতিমধ্যেই “non-rare-earth” প্রযুক্তিতে শিফট করার কথা ভাবছে।
ভারতে Maruti Suzuki সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা, এবং Swift তাদের অন্যতম সেরা বিক্রিত মডেল। সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, “এই মুহূর্তে ভারতের উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব পড়েনি, কারণ আমাদের কাছে পর্যাপ্ত স্টক রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘ মেয়াদি সমস্যার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি Rare Earth সংকট দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে EV–নির্ভর যানবাহনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাতেও প্রভাব পড়বে। এ ক্ষেত্রে উৎপাদনের খরচ বাড়বে এবং ক্রেতাদেরও মূল্য দিতে হতে পারে বেশি।
চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে ভারতের কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যেই “Rare Earth Mission” চালু করেছে। নতুন শিল্পনীতি অনুযায়ী—দেশে Rare Earth খনিজ আহরণ এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য বড়ো আকারের ভর্তুকি ও সুবিধা দেওয়া হবে।
এছাড়া, Make in India উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে Magnet উৎপাদনের জন্য প্রচুর অনুদান ঘোষিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতের জন্য একটি বড় সুযোগ – যদি সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগ একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে ভারত নিজেই Rare Earth–এর একটি হাব হয়ে উঠতে পারে।
“অসমে আমুল ডেইরি প্ল্যান্ট স্থাপনের ঘোষণা: দুধ উৎপাদনে বিপ্লবের সূচনা”
চীনের উপর নির্ভরতা ভাঙতে হবে দ্রুত।
⚙️ প্রযুক্তির আপগ্রেড করে Rare Earth ছাড়া বিকল্প ডিজাইন খুঁজতে হবে।
স্বদেশী ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিকে উৎসাহ দিতে হবে—বিশেষত EV ও ব্যাটারি ক্ষেত্রকে।
বৈশ্বিক কূটনীতি ও ট্রেড ডায়ালগে গুরুত্ব বাড়াতে হবে ভারতকে।
Suzuki–র উৎপাদন বন্ধ হওয়ার খবর শুধুমাত্র একটি গাড়ি কোম্পানির সমস্যার চিহ্ন নয়—এটি একটি বড়ো আন্তর্জাতিক সংকেত যে ‘supply chain weaponization’ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।ভারত যদি সঠিক সময়ের মধ্যে বিকল্প পরিকল্পনা ও স্থানীয় উৎপাদনের দিকেই অগ্রসর হয়, তাহলে শুধু এই সংকট কাটিয়ে উঠবে না—বরং এক নতুন শিল্প বিপ্লবের সূচনা করবে।
আরও পড়ুন :