Detention Camps in India
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: ভারতের গৃহমন্ত্রক সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের জন্য ডিটেনশন ক্যাম্প বা হোল্ডিং সেন্টার তৈরি করতে হবে। এই ক্যাম্পে তাদের রাখা হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আদালতের রায় অনুযায়ী বহিষ্কার বা ডিপোর্টেশন সম্পন্ন হয়।
গৃহমন্ত্রক স্পষ্ট করেছে যে—
অবৈধ বিদেশিদের জন্য স্থায়ী বা অস্থায়ী ডিটেনশন সেন্টার তৈরি বাধ্যতামূলক।
বিদেশিদের নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এসব ক্যাম্পে আটকে রাখা যাবে।
Foreigners Tribunal-এর নির্দেশ অনুযায়ী, যাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণিত হবে না, তাদের সরাসরি এসব ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
বিদেশি নাগরিকরা যদি অ্যান্টি-ন্যাশনাল কার্যকলাপে জড়িত থাকে, তাহলে তাদেরকে দ্রুত আটক করে বিচারের আগ পর্যন্ত এই সেন্টারে রাখা যাবে।
এই পদক্ষেপ একেবারে নতুন নয়।
আসামে ২০০৮ সাল থেকেই ডিটেনশন সেন্টার চালু আছে। বর্তমানে সেখানে ৬টি সক্রিয় সেন্টার আছে।
নাগরিকপঞ্জি (NRC) প্রক্রিয়ার পর বহু মানুষকে সন্দেহজনক বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে এসব সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল।
এবার কেন্দ্রের নির্দেশে সেই মডেলকে সারাদেশে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট এর আগেই জানিয়ে দিয়েছে, অবৈধ বিদেশিদের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্দি রাখা যাবে না। তাদের দ্রুত বহিষ্কার করতে হবে। কিন্তু বহিষ্কারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে ‘হোল্ডিং সেন্টার’-এর মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিদেশি নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি: মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপকারীদের প্রবেশে ‘না’
এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে—
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি: ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক থাকার পরিবেশ অমানবিক। একাধিক রিপোর্টে দেখা গেছে, আটক ব্যক্তিদের গাদাগাদি করে রাখা হয় এবং খাবার, চিকিৎসা, মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করা হয়।
ভাষা ও ধর্মভিত্তিক বৈষম্য: সমালোচকরা বলছেন, বাংলাভাষী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই সবচেয়ে বেশি টার্গেট হচ্ছেন।
রাজনৈতিক প্রভাব: বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে এই নীতি ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশকে ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় অবৈধ বিদেশি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে এই ইস্যু সীমান্ত রাজ্যগুলিতে (অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা) আরও রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করবে।
ভারত সরকার অবৈধ বিদেশিদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে ডিটেনশন ক্যাম্প বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এর মানবাধিকার দিক, ধর্ম-ভাষা-ভিত্তিক বাছাই এবং কূটনৈতিক প্রভাব নিয়ে বিতর্ক ক্রমশই বাড়ছে।
আরও পড়ুন :
AI এর যুগে মেডিকেল সায়েন্সের জাদু : ঘরে বসেই শনাক্ত হবে হৃদরোগ, বদলে যাচ্ছে স্টেথোস্কোপের ইতিহাস
গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে দাপট দেখাল ইংলিশ ক্লাবগুলি, শীর্ষ খরচের তালিকায় লিভারপুল এগিয়ে