Breaking News

IranVsIsrael CeasefireDoubt

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি নিয়ে সন্দেহে তেহরান, সৌদিকে জানানো হল প্রস্তুতির বার্তা

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতির মধ্যে সন্দেহ, সন্দেহের ভিতরে প্রস্তুতি—এই মুহূর্তে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে চলছে এক ধরনের অদৃশ্য ‘স্নায়ুযুদ্ধ’। উভয় পক্ষই এখন কৌশলগত বিরতিতে আছে, অর্থাৎ সরাসরি যুদ্ধ থেকে বিরত থাকলেও গোপন প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে।

IranVsIsrael CeasefireDoubt: Analyzing the Crisis %%page%% %%sep%% %%sitename%%

IranVsIsrael CeasefireDoubt

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তা আদৌ টিকবে কি না—তা নিয়ে গভীর সংশয় (IranVsIsrael CeasefireDoubt) প্রকাশ করেছে তেহরান। ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আব্দোলরহিম মৌসাভি সম্প্রতি সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খালিদ বিন সালমান-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং স্পষ্ট জানান, “ইজরায়েল এবং তার মিত্রদের প্রতিশ্রুতির উপর আমাদের বিন্দুমাত্র ভরসা নেই। নতুন করে হামলা হলে আমরা প্রস্তুত আছি চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়ার জন্য।”

এই বার্তায় মধ্যপ্রাচ্যে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

সাম্প্রতিক এই ১২ দিনের সংঘাতে দুই দেশের মধ্যে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ পাল্টা হামলা চলে।

  • ইজরায়েল দাবি করে, তারা ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ও সামরিক অবকাঠামোয় লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়।

  • ইরান পাল্টা জবাব দেয় ১,০০০-এরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে, যার বড় অংশ লক্ষ্য ছিল তেল আবিব ও হাইফার সামরিক ঘাঁটি।

  • এই সংঘাতে ইরান দাবি করে তাদের ৬০০-র বেশি নাগরিক নিহত, যাদের মধ্যে রয়েছে ৪০ জন বিজ্ঞানী ও সেনা আধিকারিক।

  • ইজরায়েলও জানায়, তারা ২৮ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

তেহরানে ইরানের সামরিক কর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে মৌসাভি বলেন:

“ইজরায়েল যেভাবে আমাদের পরমাণু কাঠামো ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিতে হামলা চালিয়েছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে তারা যুদ্ধবিরতি দীর্ঘমেয়াদি রাখতে চায় না। আমরা তৈরি আছি—এবার জবাব হবে অনেক কঠোর ও বিস্তৃত।”

তেহরানের এই সতর্কবার্তা শুধু সৌদিকে নয়, আসলে গোটা অঞ্চলের প্রতিটি রাষ্ট্রকেই অ্যালার্ট বার্তা।

ইজরায়েল সরকার যদিও দাবি করছে যুদ্ধবিরতির প্রতি তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু নেতানিয়াহু সরকার এটাও বারবার বলছে—

“ইরান যদি আবার কোনও উসকানিমূলক আচরণ করে, তবে ইজরায়েলও চুপ করে থাকবে না।”

অর্থাৎ দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতির মাঝে অস্ত্র নামালেও যুদ্ধের প্রস্তুতি ছাড়ছে না।

  • যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানালেও ইরানের বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

  • ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কাতার দুই পক্ষকে ধৈর্যের বার্তা দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি জোরদার করতে বলেছে।

শেষপর্যন্ত যুদ্ধবিরতি! ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষে আপাত ইতি, ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে বিতর্ক

“যুদ্ধবিরতি তখনই সম্ভব যখন আমরা আমাদের প্রতিশোধ শেষ করেছি” : ইরান

IAEA (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা) জানায়, ইরানে বেশ কয়েকটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে “কার্যকর ধ্বংস হয়নি।” এই কেন্দ্রগুলির কাজ কয়েক মাসের মধ্যে আবার শুরু হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন—

  • ইরান ও ইজরায়েল উভয় পক্ষই এখন কৌশলগত বিরতিতে আছে, অর্থাৎ সরাসরি যুদ্ধ থেকে বিরত থাকলেও গোপন প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে

  • পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্য শক্তিগুলো (যেমন সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন) চাইছে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হোক, কিন্তু বাস্তব বলছে—সংঘাতের মেঘ এখনও পুরোপুরি কেটে যায়নি।

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতির মধ্যে সন্দেহ, সন্দেহের ভিতরে প্রস্তুতি—এই মুহূর্তে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে চলছে এক ধরনের অদৃশ্য ‘স্নায়ুযুদ্ধ’। সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের সামরিক স্তরের যোগাযোগ একদিকে শান্তির ইঙ্গিত, আবার অন্যদিকে বড় আঘাতের পূর্বাভাসও হতে পারে।
আন্তর্জাতিক মহলের কাছে এই যুদ্ধবিরতি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে পরবর্তী ৭–১০ দিনের ঘটনাপ্রবাহের উপর।

আরও পড়ুন :

“জন্মভূমিতেও জায়গা নয়?” — মার্কিন সেনেটরের বিতর্কিত প্রস্তাবে উত্তাল নাগরিকত্ব বিতর্ক

দালাই লামার উত্তরসূরী ঘিরে নতুন যুগের সূচনা? ধর্মশালায় উত্তাল রাজনৈতিক-আধ্যাত্মিক আবহ, চিনে উদ্বেগ

ad

আরও পড়ুন: