Breaking News

GazaHungerCrisis TacticalPause

গাজায় দুর্ভিক্ষের ছায়া এড়াতে ইজরায়েলের ট্যাকটিক্যাল ‘পজ’ বা ‘এয়ারড্রপ’-এর মতো ‘দেখনদারি’ পদক্ষেপ কি যথেষ্ট

ট্যাকটিক্যাল পজ ঘোষণা করে ইজরায়েল একধরনের সহানুভূতির ইঙ্গিত দিলেও, বাস্তবে গাজায় খাবার ও ওষুধ পৌঁছচ্ছে না। প্রতি দিন শিশু মারা যাচ্ছে। এয়ারড্রপ যদি সমাধান হত, তাহলে খাদ্যপণ্যের দাম এত হতো না।

Understand the GazaHungerCrisis TacticalPaus and its implications

GazaHungerCrisis TacticalPause

ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে খাদ্য, পানীয় জল, ওষুধ কিছুই নেই। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইজরায়েল প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার ‘ট্যাকটিক্যাল পজ’ (GazaHungerCrisis TacticalPause) ঘোষণা করেছে। লক্ষ্য, যুদ্ধের মাঝেও সীমিত সময়ের জন্য মানবিক সাহায্য পৌঁছনোর সুযোগ করে দেওয়া। তবে, জাতিসংঘ, ডব্লিউএফপি (WFP), এমএসএফ (MSF)-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার বক্তব্য, এই পজ বা ‘এয়ারড্রপ’-এর মতো ‘দেখনদারি’ পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, বরং এগুলি দুর্দশার গভীরতাকে আরও উন্মোচন করছে।

‘ট্যাকটিক্যাল পজ’ ঠিক কী?

২৭ জুলাই ২০২৫ থেকে, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) ঘোষণা করে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিনটি এলাকা—গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ এবং আল-মাওয়াসি—তে তারা যুদ্ধবিরতি পালন করবে। বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে খাদ্য, জ্বালানি, চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর জন্য একটি ‘সেফ করিডর’ তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (UAE) ২৫ টনেরও বেশি খাদ্য ও ওষুধ বিমান থেকে নামিয়ে দেয় গাজার নির্দিষ্ট অঞ্চলে।

গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা: জাতিসংঘ

গাজায় সাড়ে ৬ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের মুখে, আন্তর্জাতিক মহলের ‘লজ্জাজনক নীরবতা’ নিয়ে ক্ষোভ

বাস্তবতা আরও ভয়াবহ

কিন্তু মাটির উপর বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এমএসএফ-এর রিপোর্ট বলছে, মাত্র দুই সপ্তাহে গাজা সিটিতে ৫ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে তীব্র অপুষ্টির হার তিনগুণ বেড়েছে। জুলাই মাসেই খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় ১২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধেকই শিশু।

একটি বিবৃতিতে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (WFP) জানায়, “দেখা যাচ্ছে, অনেক পরিবার টানা দুই থেকে তিন দিন কিছু খেতে পারছে না। এমনকি তারা ঘাস, গাছের পাতা, পশুখাদ্য খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে।”

এয়ারড্রপ: সাহায্য না বিপদ?

এয়ারড্রপ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। অনেক সময়েই প্যারাশুটে নামানো খাবার গন্তব্যে না পৌঁছে ভিন্ন জায়গায় পড়ে, যাতে হুড়োহুড়ি করে আহত বা নিহত হন অসহায় মানুষ। গাজার এক বাসিন্দা বলেন, “তিন ক্যান ফাভা বিনস পেয়েছি—তা দিয়ে পুরো পরিবারের খাবার মেলেনি। খাদ্যপণ্যের দাম এমন চড়া যে ১ কেজি আটা কিনতেই ৮০-১০০ শেকেল লাগছে।”

ইজরায়েল দাবি করেছে, তারা UN ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছে। GHF (Gaza Humanitarian Foundation) নামের একটি যৌথ মার্কিন-ইসরায়েলি মডেল চালু করা হয়েছে যা UN-কে বাইপাস করে সরাসরি সাহায্য পৌঁছনোর দাবি করে। কিন্তু বাস্তবে এই বিতরণ কেন্দ্রে হানাহানি, বিশৃঙ্খলা, এমনকি গুলিচালনার ঘটনাও ঘটছে, যেখানে মে মাস থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ১,০০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন শুধুমাত্র সাহায্য নিতে গিয়ে।

ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, স্থায়ী ল্যান্ড করিডর ছাড়া এই সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়।

ইজরায়েল যুদ্ধক্ষেত্রে বিরতি টানলেও গাজার শিশুদের মুখে খাবার পৌঁছচ্ছে না। এয়ারড্রপ বা ১০ ঘণ্টার পজ যেমন তাৎক্ষণিক সংকট কিছুটা প্রশমিত করতে পারে, তবে এটা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। যতদিন না সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে, অবরোধ তোলা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, ততদিন গাজার মাটি থেকে দুর্ভিক্ষ মুছে যাবে না—বরং বাড়তেই থাকবে।

আরও পড়ুন :

Old Monk: যে মানুষটি নিজে কখনো মদ খাননি, তিনিই বানিয়েছিলেন ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাম!

এলিয়েন স্পেসক্রাফট কি আসছে? 3I/ATLAS ঘিরে চাঞ্চল্যকর গবেষণা

ad

আরও পড়ুন: