JahanaraAlaam sexual harassment Bangladesh
ক্লাউড টিভি স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেটে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলম সরাসরি অভিযোগ করেছেন, দলের এক প্রাক্তন নির্বাচক ও ম্যানেজার তাঁকে বারবার যৌন হেনস্তা এবং মানসিক চাপের মুখে ফেলেছিলেন। এই অভিযোগ সামনে আসতেই বাংলাদেশের ক্রিকেটমহলে তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে।
জাহানারা জানিয়েছেন, জাতীয় দলে খেলার সময় একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে অনিচ্ছাকৃত শারীরিক স্পর্শ, অশালীন ইঙ্গিত এবং ব্যক্তিগত শারীরিক বিষয়ে অশোভন প্রশ্ন করা হত। তিনি বলেন,
“ও প্রায়ই আমাকে কাছে টেনে ধরত। কাঁধে হাত রাখত। বলত — ‘তোমার পিরিয়ড কখন শেষ হবে? তুমি সেফ হলে আমাকে জানাবে।’ এটা একজন নির্বাচকের কথা হতে পারে না।”
এই বক্তব্যের পরে বিষয়টি আর সাধারণ অভিযোগের পর্যায়ে নেই। এটি সরাসরি যৌন হেনস্তা দাবি।
জাহানারা আরও বলেন, এই আচরণ শুরু হয় ২০২১ সালের দিকে এবং চলতে থাকে ২০২২ সালের বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত।
তিনি দাবি করেছেন,
তিনি বিষয়টি একাধিকবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (BCB)–কে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন।
এমনকি সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বরং অভিযোগ জানানোর পর তাঁর দলে জায়গা ও সুযোগ কমিয়ে দেওয়া হয়।
জাহানারা বলেন,
“আমি অভিযোগ করার পরে আমাকে ম্যাচ থেকে সরানো হয়েছিল। আমার জায়গা তুলে দেওয়া হয়েছিল নতুন খেলোয়াড়দের হাতে। আমি অনুভব করেছিলাম আমাকে ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে।”
এখানে বিষয়টি শুধু ব্যক্তিগত অপমান নয়।
এটি কর্মস্থলে ক্ষমতার অপব্যবহার, যা একটি স্পষ্ট পেশাগত অত্যাচারের উদাহরণ।
ক্রিকইনফোর সর্বকালের সেরা এশিয়া কাপ একাদশে ভারত থেকে আছেন ৪ ক্রিকেটার
ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশের কড়া নজরদারি: যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার ও ড্রোন মোতায়েন
তবে অভিযোগ শুধু এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নয়।
জাহানারা দাবি করেন, দলের অভ্যন্তরে একটি ‘শক্তিশালী গোষ্ঠী’ আছে, যারা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে একে অন্যকে ব্যবহার করে।
এক অন্য সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন,
“জুনিয়র ক্রিকেটারদেরও সিনিয়ররা মাঝে মাঝে অপমান করত। কারও ওপর আবার মানসিক চাপ তৈরি করত। দল ও ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সবসময় নিরাপদ ছিল না।”
এই ঘটনার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে,
অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে
একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে
১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে
তবে প্রশ্ন রয়ে যায় —
এত বড় অভিযোগ কেন এতদিন পরে প্রকাশ্যে এল?
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন,
অভিযোগ করার পর খেলোয়াড়রা প্রায়ই ক্যারিয়ার হারানোর ভয় পান
দলে জায়গা চলে যাওয়ার ভয় থাকে
অনেকেই তাই চুপ থাকতে বাধ্য হয়
জাহানারা বলেন,
“আমি চুপ ছিলাম। কারণ আমি ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর ভয় পাই না। সত্যিটা বলাটা জরুরি।”
এই অভিযোগের পর বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের পরিবেশ, প্রশাসনিক কাঠামো, দল পরিচালনার নৈতিকতা—সবই প্রশ্নের মুখে।
বিশ্বজুড়ে খেলাধুলায় #SafeSport একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন।
খেলোয়াড়ের নিরাপত্তা, সম্মান ও মানসিক স্বাস্থ্য—এগুলোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশও এখন সেই পরীক্ষা-মঞ্চে দাঁড়িয়ে।
যদি তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হতে পারে
দলের পরিচালনায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে
ভবিষ্যতে যৌন হেনস্তা প্রতিরোধ নীতি আরও কঠোর হতে পারে
এই মুহূর্তে ভক্ত, ক্রিকেটপ্রেমী এবং মানবাধিকার সংগঠন সকলেই নজর রাখছে —
BCB কেমন ব্যবস্থা নেয়
এবং
জাহানারার নিরাপত্তা ও সম্মান কীভাবে নিশ্চিত হয়
উপসংহারে বলা যায় —
এটি শুধু একজন ক্রিকেটারের লড়াই নয়।
এটি দলের সংস্কৃতি ও নৈতিকতার লড়াই।
আরও পড়ুন :
জ়ুবিন গর্গ মারা গিয়েছেন প্রায় ৫০দিন, স্ত্রী গরিমা শইকীয়া গর্গ হঠাৎ হাসপাতালে ভর্তি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ বারানসী তে ৪টি নতুন Vande Bharat Express ট্রেন উদ্বোধন করবেন