Breaking News

JapanEarthquake TokaraIslands

জাপানে দুই সপ্তাহে ৯০০ ভূমিকম্প, সমুদ্র থেকে উঠছে অদ্ভুত গর্জন: আতঙ্কে দ্বীপবাসী

টোকারা দ্বীপপুঞ্জে দুই সপ্তাহে ৯০০ বারের বেশি ভূমিকম্প আতঙ্ক ছড়িয়েছে দক্ষিণ জাপানে। সমুদ্র থেকে উঠে আসা অদ্ভুত গর্জনের শব্দ, একের পর এক কম্পন এবং গুজব-ভিত্তিক ভবিষ্যদ্বাণী মিলে দ্বীপবাসীর জীবন এক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

JapanEarthquake TokaraIslands: Recent Seismic Activity %%page%% %%sep%% %%sitename%%

JapanEarthquake TokaraIslands

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : দক্ষিণ জাপানের টোকারা দ্বীপপুঞ্জে ভূমিকম্প যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহে এই প্রত্যন্ত দ্বীপ অঞ্চলে অনুভূত হয়েছে ৯০০-র বেশি ভূমিকম্প (JapanEarthquake TokaraIslands)। একের পর এক কাঁপুনি ও সমুদ্র থেকে আসা অদ্ভুত গর্জনের শব্দে আতঙ্কিত দ্বীপবাসীরা অনিদ্রায় ভুগছেন এবং সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।

বুধবার ৫.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ২১ জুন থেকে দ্বীপপুঞ্জ সংলগ্ন এলাকায় ভূমিকম্প প্রবলভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও আতঙ্ক কাটেনি দ্বীপবাসীর মনে।

জাপানের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পগুলোর উৎপত্তিস্থল সমুদ্রের নিচে এবং এগুলোর গভীরতা ছিল তুলনামূলকভাবে কম। এর ফলে কাঁপুনিগুলো দ্বীপগুলিতে বেশ ভালোভাবে অনুভূত হচ্ছে।টোকারা দ্বীপপুঞ্জের আকুসেকিজিমা দ্বীপের বাসিন্দা চিজুকো আরিকাওয়া স্থানীয় গণমাধ্যমে জানান, “ভূমিকম্পের আগে সমুদ্র থেকে অদ্ভুত গর্জন শোনা যাচ্ছে, বিশেষ করে রাতে। এটা আমাদের ভীষণ আতঙ্কিত করে তুলছে।”

ইসামু সাকামোতো, যিনি দ্বীপবাসীদের সমিতির প্রধান, বলেন: “এতবার ভূমিকম্প হওয়ার পর এখন ভূমিকম্প না হলেও মনে হয় মাটি কাঁপছে। এটা একধরনের মানসিক চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”সাধারণত শান্তিপূর্ণ এই দ্বীপগুলোতে এমন ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা খুবই বিরল। যদিও অতীতে এই অঞ্চলে মাঝেমধ্যে ভূমিকম্প হয়েছে, কিন্তু এবার মাত্রা ও ঘনত্ব এতটাই বেশি যে বিশেষজ্ঞরাও একে ‘অস্বাভাবিক’ বলেই চিহ্নিত করছেন।

জাপান বিশ্বে অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। এর মূল কারণ—দেশটি অবস্থিত প্রশান্ত মহাসাগরের ‘Ring of Fire’-এ, যা পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি অঞ্চলের একটি। এখানে একাধিক টেকটোনিক প্লেট যেমন—ফিলিপাইন, ইউরেশিয়ান ও প্যাসিফিক প্লেটের সংঘর্ষ হয়, যার ফলে নিয়মিত কম্পন অনুভূত হয়।

প্রতিবছর জাপানে গড়ে ১৫০০-এরও বেশি ভূমিকম্প হয়, তবে এত অল্প সময়ের মধ্যে ৯০০-এর বেশি ভূমিকম্প একটি আশঙ্কাজনক রেকর্ড।

হঠাৎ ওজন কমছে? সতর্ক হোন—পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক রোগ

বিচারকদের ঘাটতি,সঙ্কটে সুপ্রিম কোর্ট, পড়ে রয়েছে ৫ কোটি মামলা!

এমন সময়ে এই ভূকম্পনের হিড়িক দেখা দিয়েছে, যখন সামাজিক মাধ্যমে এক গুজব ভাইরাল হয়েছে। ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত মাঙ্গা শিল্পী রিও তাতসুকির একটি কমিক বইয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে ২০২৫ সালের জুলাই মাসে একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানবে।

২০২১ সালে বইটির নতুন সংস্করণে সেই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ আরও জোরালোভাবে প্রকাশ করা হয়, যার ফলে অনেকেই মনে করছেন—এই ভূমিকম্পগুলোর ধারাবাহিকতা বড় বিপদের পূর্বাভাস।এমন গুজবে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে পর্যটকদের মধ্যেও। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টোকারা দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের পরিকল্পনা অনেকেই বাতিল করছেন। দ্বীপের অর্থনীতি মূলত পর্যটনের ওপর নির্ভর করে। ফলে এ ধরনের আতঙ্ক অর্থনৈতিক ধাক্কাও সৃষ্টি করছে।

টোকারা দ্বীপপুঞ্জের ১২টি দ্বীপের মধ্যে মাত্র সাতটিতে মানুষ বাস করে, যার সংখ্যা প্রায় ৭০০। অনেক দ্বীপে হাসপাতাল বা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নেই। রাজধানী কাগোশিমা থেকে ফেরি করে এখানে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ছয় ঘণ্টা, যা জরুরি পরিস্থিতিতে গুরুতর অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছে—তারা যেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হাতে রাখে, জরুরি প্রয়োজনে যেন তাত্ক্ষণিকভাবে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারেন।

আরও পড়ুন :

ইমরান খানের মুক্তি আটকে দিল আদালত: জামিন আবেদন খারিজ

দাবানলে জ্বলছে ইউরোপ: এক সিগারেটেই ছাই ১০ হাজার একর বনাঞ্চল

ad

আরও পড়ুন: