Japan’s Railgun
ক্লাউড টিভি প্রতিবেদন : প্রতিরক্ষা মানেই যুদ্ধ নয়, বরং প্রতিরক্ষা মানে সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকানোর ক্ষমতা অর্জন। আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের জগতে এক বিশাল পদক্ষেপ নিল জাপান। নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করতে এবং ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবেলায় জাপান এখন নির্ভর করছে ‘রেলগান’ নামক একটি বৈপ্লবিক প্রযুক্তির ওপর। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্রভিত্তিক রেলগান (Japan’s Railgun) অস্ত্রের সফল পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অস্ত্র সিস্টেম হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো দ্রুতগামী হুমকিকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে।
রেলগান একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকীয় অস্ত্র যা প্রচলিত বারুদের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে গোলাবারুদ নিক্ষেপ করে। এতে প্রজেক্টাইল অনেক বেশি গতিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। প্রচলিত গুলি যেখানে শব্দের গতির কাছাকাছি থাকে, সেখানে রেলগানের প্রজেক্টাইল ছুটে যায় প্রায় ৬.৫ Mach গতিতে, যা শব্দের গতির ছয় গুণেরও বেশি।
পাকিস্তানি ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র ‘ট্রাইডেন্ট II D5’: কার হাতে আছে এই অদম্য অস্ত্র
জাপানের অ্যাকুইজিশন, টেকনোলজি অ্যান্ড লজিস্টিকস এজেন্সি (ATLA) এই প্রযুক্তির উন্নয়নে ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছে। ২০২৩ সালে, JS Asuka যুদ্ধজাহাজে রেলগানের প্রথম সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, রেলগান নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে দ্রুত ও নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম, যা ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষা কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানের এই নতুন রেলগান প্রযুক্তি কেবল দেশটির নিরাপত্তা নয়, সমগ্র এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। চীন, উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া বর্তমানে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নে যথেষ্ট অগ্রসর। এই পটভূমিতে জাপানের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বার্তা।
রেলগান প্রযুক্তির বিশেষ দিক হলো এর পরিকাঠামোগত শক্তি এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা। এটি যেকোনো হুমকিকে মুহূর্তের মধ্যে শনাক্ত করে আঘাত হানতে পারে। এমনকি যেসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে, রেলগান সেগুলিও প্রতিহত করতে সক্ষম।
জাপানের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় এই অস্ত্রটি এখন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ভবিষ্যতে রেলগান স্থলভিত্তিক ও সমুদ্রভিত্তিক উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর ফলে, দেশের আকাশ ও সমুদ্র সীমা আরও সুরক্ষিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ জাপানের এক শান্তিপূর্ণ দেশের ইমেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা।বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ধরনের উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর অস্ত্র ব্যবস্থা কেবল প্রতিরক্ষা নয়, বরং একটি কৌশলগত চেতনার বহিঃপ্রকাশ। যেখানে প্রযুক্তির ব্যবহার কেবল প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে নয়, বরং নিজ দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন :
“শক্তিশালী অধিনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হবেন শুভমন গিল” — বিশ্বাস কপিল দেবের
ইউরোপ মাতাবে ইংল্যান্ড! আগামী মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় প্রিমিয়ার লিগের ৯ ক্লাব