Breaking News

JimLovell Apollo13

অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণের পরও অ্যাপোলো ১৩ কে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা কিংবদন্তি নভোচারী জিম লোভেল আর নেই

Apollo 13-এর কমান্ডার জিম লোভেল ৯৭ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণের পরও অসাধারণ নেতৃত্বে ক্রুদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরানোর জন্য তিনি ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছেন।

JimLovell Apollo13: A Legacy of Bravery %%page%% %%sep%% %%sitename%%

JimLovell Apollo13

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : মানবজাতির মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে অন্যতম সাহসী অধ্যায়ের নায়ক, অ্যাপোলো ১৩ মিশনের কমান্ডার জিম লোভেল আর নেই। শনিবার ৯৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মার্কিন নভোচারী। নাসা এবং লোভেলের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। লোভেল (JimLovell Apollo13) ছিলেন শুধু একজন নভোচারী নন, বরং বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক প্রতীক।

জেমস আর্থার “জিম” লোভেল জুনিয়রের জন্ম ১৯২৮ সালের ২৫ মার্চ, ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে। ছোটবেলা থেকেই মহাকাশবিজ্ঞানের প্রতি প্রবল আগ্রহী ছিলেন। মার্কিন নৌবাহিনীর টেস্ট পাইলট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে ১৯৬২ সালে নাসার দ্বিতীয় ব্যাচ নভোচারী হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ও ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে দ্রুতই মহাকাশ অভিযানের অন্যতম নির্ভরযোগ্য কমান্ডার করে তোলে।

ভারতের ইতিহাসে আরেকটি গৌরবময় অধ্যায়: মহাকাশ থেকে সফলভাবে ফিরে এলেন শুভাংশু শুক্লা

সুনিতা উইলিয়ামস কে, কীভাবে তিনি নভোচারী হয়ে উঠলেন

১৯৭০ সালের ১১ এপ্রিল, লোভেল অ্যাপোলো ১৩ মিশনের কমান্ডার হিসেবে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করেন। কিন্তু উড্ডয়নের দুই দিন পরেই অক্সিজেন ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণে মিশন গুরুতর সংকটে পড়ে। পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০,০০০ মাইল দূরে থাকা অবস্থায় এই দুর্ঘটনা নভোচারীদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। লোভেল, ফ্রেড হেইজ ও জ্যাক সুইগার্ট অকল্পনীয় চাপের মধ্যে থেকেও অসাধারণ দক্ষতায় জীবন রক্ষার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপ নেন।
লোভেলের শান্ত ও দৃঢ় নেতৃত্বে ক্রুরা লুনার মডিউলকে ‘লাইফবোট’ হিসেবে ব্যবহার করে বেঁচে থাকতে সক্ষম হন। তিনদিনের টানটান উত্তেজনার পর তারা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। এই ঘটনাকে পরবর্তীতে বলা হয় নাসার ইতিহাসে “সফল ব্যর্থতা” — কারণ চাঁদে অবতরণ ব্যর্থ হলেও, মানুষের জীবন রক্ষা পাওয়া ছিল আসল জয়।

লোভেল চারটি মহাকাশ মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন — Gemini 7, Gemini 12, Apollo 8 এবং Apollo 13। বিশেষ করে Apollo 8 ছিল মানবজাতির প্রথম চাঁদের কক্ষপথ প্রদক্ষিণ মিশন, যেখানে লোভেলের নেতৃত্বে ক্রুরা চাঁদের পৃষ্ঠের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি তোলেন।
১৯৭৩ সালে নাসা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি বেসরকারি খাতে যোগ দেন এবং নানা সংস্থায় নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেন জনপ্রিয় বই “Lost Moon: The Perilous Voyage of Apollo 13”, যা থেকে ১৯৯৫ সালে টম হ্যাঙ্কস অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্র Apollo 13 নির্মিত হয়।

জিম লোভেল মার্কিন কংগ্রেসের স্বর্ণপদক, Presidential Medal of Freedom-সহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন। নাসা এবং মহাকাশ অনুরাগীরা তাঁকে শুধু এক জন মহাকাশযাত্রী হিসেবেই নয়, বরং সংকট মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক জীবন্ত উদাহরণ হিসেবে মনে রাখবেন।

জীবনের শেষ পর্যন্ত লোভেল মহাকাশ গবেষণার প্রচারে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ও সাধারণ মানুষ সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন।
লোভেলের জীবন এক প্রজন্মের জন্য প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে — প্রমাণ করে যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ধৈর্য, দলগত কাজ এবং অদম্য মনোবল দিয়ে অসম্ভবকেও জয় করা যায়।

আরও পড়ুন :

লিবারেশন ডে ইন ডিসি : ওয়াশিংটনে সেনা ও ফেডারেল বাহিনী মোতায়েনের কথা ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

ভারতে বাংলাদেশি শিশুর ওপর নির্মম যৌন নির্যাতন: তিন মাসে দুই শতাধিক পুরুষের লালসার শিকার

ad

আরও পড়ুন: