MeghalayaHoneymoonTragedy
শিলং, জুন ৫: মেঘালয়ের সবুজ পাহাড় আর বর্ষা মুখর জলপথে হানিমুন করতে এসে মর্মান্তিক মৃত্যুর কবলে (MeghalayaHoneymoonTragedy) পড়লেন ইন্দোর নবদম্পতি—রাজা ও সোনম রঘুবংশী। ৩,০০০ ধাপের পাহাড়ি ট্রেক যে এমন বিভীষিকায় পরিণত হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা।ভরা বর্ষায় মেঘালয়ের নংরিয়াটের জীবন্ত রুট ব্রিজের স্বপ্ন দেখেই তাঁরা পৌঁছেছিলেন মাওলাখিয়াত গ্রামে। কিন্তু সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় মৃত্যুর কালো ছায়ায়।
২২ মে রাজা ও সোনম পৌঁছান মাওলাখিয়াত। সেখান থেকে তাঁরা শুরু করেন খাড়া নামার পথ—নংরিয়াট গ্রামে। রাতে থাকেন একটি হোমস্টেতে। সকালবেলায় চেক আউট করেন। তারপরই যেন হাওয়া হয়ে যান। ফোন বন্ধ, কোনও খোঁজ নেই।দু’দিন পরে তাঁদের ভাড়া করা স্কুটারটি পড়ে থাকতে দেখা যায় শিলং-সোহরা রোডের এক ক্যাফের পাশে। তখনও পর্যন্ত দম্পতির কোনও সন্ধান নেই।
২৩ মে তাঁদের শেষ ফোনালাপে সোনম তাঁর শাশুড়িকে বলেন, “উনি আমাকে জঙ্গলে নিয়ে গেছেন, আর উঠতে খুব কষ্ট হচ্ছে।” এরপর থেকেই তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা ২৭ মে মেঘালয়ে পৌঁছে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
শুক্রবার ‘সিক লিভ’, শনি-রবিবার কুর্গে আরাম! ভাইরাল ভিডিও দেখে রেগে আগুন কোম্পানি, বন্ধ WFH!
নিরবতার কয়েক দিন পর হঠাৎই খোঁজ মেলে—গভীর এক গিরিখাদ থেকে রাজার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওয়েইসাওডং জলপ্রপাতের নীচে।একটি বড় আকারের (৩XL) রেনকোট পরে মাওকমা গ্রামে খুঁজে পাওয়া যায়, ধারণা করা হচ্ছে সেটি দম্পতিরই।পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার এসপি বিবেক সিয়েম জানিয়েছেন, “এটি যে হত্যাকাণ্ড, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা একটি নতুন ‘ডাও’ (ধারালো অস্ত্র) উদ্ধার করেছি। সেটা এই অপরাধের জন্যই কেনা হয়েছিল।”
এই ঘটনার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক—সোনম রঘুবংশীর খোঁজ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তাঁর বেঁচে থাকা না মৃত্যু—কিছুই নিশ্চিত নয়। নিখোঁজ হয়েছেন তিনি সেই ২৩ মে সকাল থেকে।এই দম্পতি সঙ্গে করে এনেছিলেন এক ভাড়া করা স্কুটার, এক বন্ধুর কাছ থেকে নেওয়া স্মার্টওয়াচ, আর অনেক আনন্দ-আশা। নংরিয়াটের রুটব্রিজ ঘুরে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেই সেতু যেন কান্নার সেতু হয়ে উঠেছে।স্থানীয় হোমস্টে মালিক, ক্যাফের কর্মী, এমনকি পাহাড়ি পথের গাইডদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্দেহের তালিকায় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাও রয়েছেন।
রাজার পরিবার দাবি করেছে, পুলিশ প্রাথমিকভাবে তদন্তে গাফিলতি করেছে এবং সময়মতো পদক্ষেপ নেয়নি। তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সোনমের পরিবারও তাঁর অপহরণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন :
অরিন্দম শীলের নতুন ছবি ‘কর্পূর’: বাম আমলের শিক্ষা দুর্নীতি আর মনীষা অন্তর্ধান এবার রূপালি পর্দায়