Youngest Self-Made Billionaires Mercor
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : হাইস্কুলে পড়ার সময়ও কেউ ভাবতে পারেনি, তিনজন ছেলেপুলে কয়েক বছরের মধ্যে এমন ইতিহাস গড়ে ফেলবে। সান হোসের বেলারমাইন কলেজ প্রিপারেটরি স্কুলে পড়াশোনা করত Brendan Foody, আদর্শ হীরেমত ও সূর্য মিঢা। তিনজনই তখন বন্ধু। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় নিজেদের দক্ষতা দেখিয়েছিল। আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ তাদের নাম বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সে স্ব-উদ্যোগে বিলিয়নিয়ারদের তালিকায়।
Mercor নামে একটা স্টার্টআপ বানিয়েছিল তারা। প্রথমে ভাবছিল, ভারতীয় টেক ট্যালেন্ট আর আমেরিকার কোম্পানিগুলোকে যুক্ত করবে। অনেকেই তখন বলেছিল—“এটা কি আদৌ সফল হবে?” কিন্তু ওরা থামেনি। পড়াশোনা ছেড়ে, পূর্ণ সময়ে ব্যবসায় নেমে পড়ল। বাড়ির লোকজনও নাকি বেশ চিন্তায় ছিল। কারণ হার্ভার্ড ছেড়ে দিলে সবাই ভাবেই—”ভবিষ্যত অন্ধকার!” কিন্তু দেখুন, ভাগ্য সাহসীদের সঙ্গী।
Mercor শুরু হল ২০২৩ সালে। প্রথমে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছিল। পরে ধীরে ধীরে মডেল বদলে যায়। তারপর ওরা চলে আসে Human-In-The-Loop AI-এর দিকে।মানে, এমন এক সিস্টেম যেখানে মানুষ AI টুলগুলিকে সাহায্য করে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে। কোম্পানিতে কাজ করছিল হাজারেরও বেশি ট্রেইনিং স্টাফ। আর সেখানেই কলকাঠি নেড়ে দিলেন এই তিন বন্ধু মিলে।
তারপর ফান্ডিং এল একের পর এক। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে ৩৫ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ জোগাড় করে ফেলল Mercor। আর কোম্পানির ভ্যালু গিয়ে দাঁড়াল প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার! ভাবা যায়? মাত্র ২২ বছর বয়সে, এই তিন তরুণ এখন বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ স্ব-উদ্যোগে বিলিয়নিয়ার। মার্ক জুকারবার্গ ২৩ বছর বয়সে এই খেতাব পেয়েছিলেন। তার আগেই ওরা রেকর্ডটা ভেঙে দিল।
কথা হচ্ছিল আদর্শ আর সূর্যের। দু’জনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বাঙালি না হলেও আমাদের জন্য গর্বের বিষয়—এদের শিকড় ভারতে, তার ওপরে বিশ্ববিখ্যাত প্ল্যাটফর্ম খাড়া করে ফেলা—এটা ছোট ব্যাপার নয়। আদর্শ নাকি হার্ভার্ডে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ছিল। কিন্তু মাঝপথে ঠিক করল—“ডিগ্রি পরে হবে, এখন ব্যবসা।” সূর্য আর Brendan-ও সেই পথেই হাঁটল। আজ তাদের সবার শেয়ার প্রায় ২২% করে, মানে প্রত্যেকের সম্পদ এখন বিলিয়ন ডলার রেঞ্জে।
এত কম বয়সে এই সাফল্য মানে চাপও কম না। প্রযুক্তির দুনিয়া প্রতিদিন বদলাচ্ছে। বিনিয়োগ এসেছে ঠিকই, কিন্তু এখন বাজার ধরে রাখাও বিশাল চ্যালেঞ্জ। মানবসম্পদ, প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, নৈতিক AI — সব ক্ষেত্রেই নজর রাখতে হবে। তবে তিনজনের আত্মবিশ্বাস দেখেই বোঝা যায়—এসব রাস্তায় ওরা হাঁটতে জানে।
তাদের গল্প থেকে কী শেখা গেল?
প্রথমত, বয়স কোনো বাধা নয়। সাহস, দৃষ্টিভঙ্গি, আর নিরন্তর চেষ্টা থাকলে অসম্ভব বলে কিছু থাকে না।
দ্বিতীয়ত, সুযোগ বুঝে ঝুঁকি নিতে হয়। পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া সবাই পারবে না। তবে স্বপ্ন যদি বড় হয়, রিস্ক নিতেই হয়।
তৃতীয়ত, বিশ্ব এখন গ্লোবাল। ভারত-আমেরিকা—সব মিলে একটা দুনিয়া। যাঁরা এটা বুঝতে পারবেন, তারাই এগোবেন।
আজ যখন দেশের অনেক তরুণ চাকরি নিয়ে চিন্তিত, সেখানে এই তিন ছেলের গল্প নতুন আশা দেখায়। উদ্যোগ নিন, চেষ্টা করুন, স্কিল বাড়ান—জীবন বদলে যাবে। Mercor-এর সাফল্য আমাদের শেখায়—“ডিগ্রি দরকার, কিন্তু আইডিয়া আর কাজের জেদ থাকলে দুনিয়া আপনার।”
আরও পড়ুন :