মোদি পুতিন শি জিনপিং বৈঠক এসসিও
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বৈঠক ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। তিন দেশের এই বৈঠক শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তার দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও ভূরাজনীতির ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
মোদি–পুতিন–শি জিনপিং-এর যৌথ বৈঠকে মূলত তিনটি বিষয় আলোচনায় উঠে আসে—আঞ্চলিক নিরাপত্তা, বৈশ্বিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক সমীকরণ। পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে এশিয়ার এই তিন শক্তিশালী রাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় আরও ঘনিষ্ঠ হতে চাইছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং চিন–আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠককে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন আধিপত্য নিয়ে শি’র কড়া বার্তা: ‘যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব চলবে’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন বৈঠকে জোর দেন বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর। তিনি বলেন, এসসিও দেশগুলির মধ্যে পরস্পরের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে সন্ত্রাসবাদ দমন থেকে শুরু করে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে। অন্যদিকে, পুতিন পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সামনে এনে ‘আঞ্চলিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে বৈশ্বিক চাপে ভাঙা সম্ভব নয়’—এমন বার্তা দেন। শি জিনপিং স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় এশিয়ার প্রভাব বাড়ানোই হবে তাঁদের মূল লক্ষ্য।
এই বৈঠক থেকে পশ্চিমী শক্তিগুলির প্রতি পরোক্ষ বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। তারা মনে করছেন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, রাশিয়ার মতো জ্বালানি মহাশক্তি এবং চিনের মতো অর্থনৈতিক দৈত্য একসঙ্গে কৌশলগতভাবে এগোলে আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য এক নতুন মোড় নেবে।
তবে এই বৈঠক ঘিরে উদ্বেগও রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের জন্য চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি—এসব ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। কিন্তু মোদি সরকার এই বৈঠককে ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
আগামী এসসিও সম্মেলনে এই আলোচনার ফলশ্রুতি দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন :