National Sports Governance Bill
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ ও হট্টগোলের মধ্যেও কেন্দ্রীয় সরকার সোমবার (১১ আগস্ট) লোকসভায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস করল— জাতীয় ক্রীড়া শাসন বিল এবং জাতীয় ডোপিং-বিরোধী সংশোধনী বিল। এই দুই আইনকে (National Sports Governance Bill) ক্রীড়া খাতে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় সংস্কার হিসেবে অভিহিত করেছেন ক্রীড়া মন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া।
সোমবার চলমান বর্ষাকালীন অধিবেশনে স্পিকার সন্ধ্যা রায়ের সভাপতিত্বে ক্রীড়া মন্ত্রী মান্ডভিয়া বিল দুটি উত্থাপন করেন। যদিও বিরোধীদলীয় সদস্যরা একাধিক বিষয়ে সরকারের সমালোচনা ও প্রতিবাদ জানাতে থাকেন, তবে হট্টগোলের মধ্যেই উভয় বিল পাস হয়। বিরোধীরা দাবি করেন, সরকার এই বিলগুলোর মাধ্যমে ক্রীড়া সংগঠন ও সংস্থাগুলোর উপর অতি-নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছে এবং পর্যাপ্ত আলোচনার সুযোগ দেয়নি।
জাতীয় ক্রীড়া শাসন বিলের মূল লক্ষ্য হল ভারতের বিভিন্ন ক্রীড়া প্রশাসকদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। বর্তমানে একাধিক ক্রীড়া ফেডারেশন ও বোর্ডে দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তিরা ক্ষমতায় থেকে এসেছেন, যার ফলে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এই বিল অনুযায়ী—
ক্রীড়া প্রশাসকদের মেয়াদসীমা নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে।
খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
মন্ত্রী মান্ডভিয়া বলেন, “আমরা চাই মাঠ থেকে মঞ্চ পর্যন্ত প্রতিভা বিকাশের সঠিক পরিবেশ তৈরি হোক। এই বিল সেই স্বপ্ন পূরণের দিকেই বড় পদক্ষেপ।”
এবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এলন মাস্ক! ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট বিল নিয়ে তীব্র বিরোধিতা
অন্যদিকে, জাতীয় ডোপিং-বিরোধী সংশোধনী বিলটি দেশের ডোপিং-বিরোধী সংস্থা NADA-কে আরও কার্যকর ও স্বাধীন করার লক্ষ্যে আনা হয়েছে। বর্তমানে NADA আন্তর্জাতিক সংস্থা WADA-এর (World Anti-Doping Agency) নীতিমালা অনুসারে কাজ করে। নতুন সংশোধনী অনুযায়ী—
NADA তদন্ত, শাস্তি প্রদান এবং আপিল প্রক্রিয়ায় আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে।
খেলোয়াড়দের জন্য ডোপিং সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার হবে।
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে ডোপিং পরীক্ষার মান উন্নত হবে।
মন্ত্রী জানান, “আমরা চাই ভারতের ক্রীড়া ইমেজ বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল হোক। ডোপিংয়ের কারণে আমাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হোক, তা মেনে নেওয়া হবে না।”
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, বিল দুটি পর্যাপ্ত সংসদীয় আলোচনার ছাড়াই তড়িঘড়ি করে পাস করানো হয়েছে। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “আমরা ক্রীড়া সংস্কারের বিরোধী নই, কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে আইন পাস করানো ঠিক নয়।” বামপন্থী নেতারাও অভিযোগ তুলেছেন যে এই বিল ক্রীড়া সংস্থাগুলোর স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করবে।
ক্রীড়া বিশ্লেষকদের মতে, সঠিকভাবে প্রয়োগ হলে এই আইন ক্রীড়াক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে। তবে এর কার্যকারিতা নির্ভর করবে বাস্তবায়নের স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকার ওপর। ভারতের প্রাক্তন হকি অধিনায়ক বলবীর সিং জুনিয়র বলেন, “প্রশাসনের সংস্কার দরকার, কিন্তু খেলোয়াড়দের স্বার্থ যাতে অগ্রাধিকার পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।”
আরও পড়ুন :
পার্লামেন্টের সামনে থেকে আটক রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী