Breaking News

নেপাল সংসদ বিক্ষোভ ২০২৫

নেপালে উত্তাল তরুণ প্রজন্ম: সংসদ চত্বরে পুলিশের গুলি, নিহত অন্তত ১

আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে নেপালে কাজ করতে হলে স্থানীয় আইনে নিবন্ধন করতে হবে। যেসব সংস্থা তা মানেনি, তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের মতে, এ সিদ্ধান্ত আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

নেপাল সংসদ বিক্ষোভ ২০২৫: তরুণদের প্রতিবাদ

নেপাল সংসদ বিক্ষোভ ২০২৫

ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গণঅসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমাণ্ডুর সংসদ ভবনের বাইরে হাজার হাজার তরুণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয় আন্দোলন। সরকারি হিসাবে একজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।

বিক্ষোভকারীরা মূলত ‘Gen Z’ বা তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদের অভিযোগ, সরকার ভুয়া খবর ও প্রতারণা রোধের অজুহাতে সোশ্যাল মিডিয়াকে বন্ধ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তারা স্লোগান দেয়— “Shut down corruption, not social media”, “Unban social media”, “Youths against corruption”

সরকার দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোকে নেপালে কাজ করতে হলে স্থানীয় আইনে নিবন্ধন করতে হবে। যেসব সংস্থা তা মানেনি, তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের মতে, এ সিদ্ধান্ত আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।


সংসদ ভবনের বাইরে সংঘর্ষ

দুপুরে বিক্ষোভকারীরা সংসদ চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ। টিয়ার গ্যাস, জল কামান, রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জে তীব্র দমন চালায় নিরাপত্তাবাহিনী। মুহূর্তেই এলাকা পরিণত হয় যুদ্ধক্ষেত্রে।

সড়কে ব্যারিকেড ভাঙচুর, গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে।

India-US Ties: ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির মোদি, হুড়হুড়িয়ে বাড়ছে Truth Social এর জনপ্রিয়তা

চলুন যাই শীতলতার ছোঁয়া নিতে নেপালে

নেপালের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, সহিংসতায় একজন নিহত এবং প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, অন্তত ৬ থেকে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এখনো এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।


কেন ফুঁসছে তরুণরা?

নেপালের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ তরুণ। ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম বা টিকটক—সব কিছুর উপরই তাদের সামাজিক যোগাযোগ নির্ভরশীল। তাই হঠাৎ করে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ হওয়া তাদের মধ্যে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

তাছাড়া, দুর্নীতি, বেকারত্ব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাও এই আন্দোলনের মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি তরুণ সমাজের শুধু ডিজিটাল অধিকারের দাবি নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার আন্দোলন।


ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কোন দিকে?

পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার যদি কেবল কঠোর দমননীতির পথে হাঁটে তবে আন্দোলন আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। বরং সরকারের উচিত তরুণদের সঙ্গে সংলাপে বসে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বাস্তবসম্মত সমাধান খোঁজা।

নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাস নতুন নয়। তবে এবারের আন্দোলন একেবারেই ভিন্নধর্মী—কারণ নেতৃত্ব দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেড়ে ওঠা এক প্রজন্ম, যারা স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা ছাড়া ভবিষ্যৎ কল্পনা করতে পারছে না।

আরও পড়ুন :

আর.জি.কর চিকিৎসক অভয়া হত্যা–ধর্ষণ মামলা: সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে পরিবার, কেন্দ্রকেও আক্রমণ

বাড়িতে বসে টেলিভিশন দেখার সময় টলিউড অভিনেত্রী সায়ন্তনী মল্লিক ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত, চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে

ad

আরও পড়ুন: