Breaking News

Nestle CEO scandal 2025

অফিস প্রেম গোপন করায় বরখাস্ত নেসলে সিইও লরাঁ ফ্রেইক্স : ৪০ বছরের কর্মজীবনের অবসান

গোপন অফিস প্রেমের অভিযোগে বরখাস্ত হলেন নেসলে সিইও লরাঁ ফ্রেইক্স। তদন্তে সত্যতা মেলাতেই বোর্ড কঠোর পদক্ষেপ নেয়।

Nestle CEO Scandal 2025: Shocking Leadership Fallout

Nestle CEO scandal 2025

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : বিশ্ববিখ্যাত খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি নেসলে তাদের বহুল আলোচিত সিইও লরাঁ ফ্রেইক্সকে হঠাৎ বরখাস্ত করেছে। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, তিনি নিজের এক সরাসরি অধস্তন কর্মীর সঙ্গে গোপন রোমান্টিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এই ঘটনা শুধু একটি কর্পোরেট নৈতিক লঙ্ঘন নয়, বরং বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট গভর্নেন্স ও নেতৃত্বের স্বচ্ছতার ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

লরাঁ ফ্রেইক্স প্রায় চার দশক ধরে নেসলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ “Speak Up” হটলাইনে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে বলা হয়, তিনি একজন কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছেন, অথচ বিষয়টি বোর্ড বা মানবসম্পদ বিভাগকে জানাননি। নেসলের নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে—সরাসরি অধস্তন কর্মীর সঙ্গে কোনো রোমান্টিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক গোপন রাখা যাবে না।

মাঝরাস্তায় ‘বিজেপি কর্মী’র সঙ্গমের ভিডিয়ো ভিডিও ভাইরাল: নেতাকে নোটিস পাঠাল বিজেপি

ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি এর প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন এলন মাস্ক

এই অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বোর্ড একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রথমে ফ্রেইক্স অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফার তদন্তে সম্পর্ক প্রমাণিত হলে বোর্ড তার বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই তাকে সিইও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

বিষয়টিকে ঘিরে একটি কৌতূহলোদ্দীপক মোড়ও তৈরি হয়। জানা যায়, ফ্রেইক্সের এক ঘনিষ্ঠ অফিস সহকর্মীই সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেন। অভিযোগ ওঠে, তিনি শুধুমাত্র একজন নয়, বরং একাধিক কর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এমনকি এক পর্যায়ে এক নারী কর্মী তাকে অন্য কর্মীর সঙ্গে দেখে ফেলেন। এরপরেই Speak Up হটলাইনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়।

এই কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসতেই তা গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। অনেকের মতে, এটি ছিল দীর্ঘদিনের গোপন বিষয়, যা শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ও আস্থার অভাবে।

নেসলে কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—“কোম্পানির মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। কোনো কর্মী, এমনকি সিইও হলেও, নিয়ম ভাঙলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কোম্পানি আরও জানিয়েছে, ফ্রেইক্সকে কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা সেভারেন্স প্যাকেজ দেওয়া হবে না। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তারা কর্মীদের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছে—শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও নিয়মের ঊর্ধ্বে নন।

ফ্রেইক্সের বিদায়ের পরপরই বোর্ড দ্রুত নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করে। Philipp Navratil, যিনি আগে Nespresso-এর সিইও ছিলেন, এখন নেসলের নতুন প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। বোর্ড মনে করছে, তার নেতৃত্বে নেসলে স্থিতিশীলতা ফিরে পাবে এবং এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে।

খবর প্রকাশের পর নেসলের শেয়ারের দাম প্রথমদিকে প্রায় ৩.৬% কমে যায়। তবে দিন শেষে তা কিছুটা সামলে ওঠে এবং পতন সীমিত হয়ে দাঁড়ায় প্রায় ০.৭%-এ। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রাথমিক ধাক্কা থাকলেও, কোম্পানির দ্রুত পদক্ষেপকে অনেকেই ইতিবাচক বলে মনে করেছেন। নতুন নেতৃত্বে কোম্পানি কতটা আস্থা ফিরে পায়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

ফ্রেইক্সের এই পদত্যাগ বিশ্বব্যাপী কর্পোরেট দুনিয়ায় একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—নৈতিকতার সঙ্গে আপস করা যাবে না। বড় বড় কোম্পানি এখন অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক ও গোপনীয়তার বিষয়ে আরও কঠোর হচ্ছে। ফ্রান্সের কিছু বিশ্লেষক এটিকে “অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ” বলে সমালোচনা করলেও, অধিকাংশই মনে করছেন এটি কর্মস্থলে স্বচ্ছতা ও আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে।

লরাঁ ফ্রেইক্স ছিলেন নেসলের অন্যতম অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিদায় নেসলের জন্য একটি যুগের সমাপ্তি হলেও, এটি কোম্পানির মূল্যবোধ রক্ষার দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন :

দুর্নীতি বিতর্ক পেরিয়ে সময় মতো শুরু হলো পশ্চিমবঙ্গের SSC পরীক্ষা

“আমি চাই দল ঐক্যবদ্ধ থাকুক। তাই ব্যক্তিগত স্বার্থ বাদ দিয়ে আমি দায়িত্ব ছাড়ছি।”

ad

আরও পড়ুন: