Online Gaming GovtofIndia
শান্তনু কর্মকার: ড্রিম ১১ (Dream11) ,জুপি (Zupee),থেকে শুরু করে মাই ইলেভেন সার্কেল (My11 Circle) এর মতো অনলাইন গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার (Online Gaming GovtofIndia)। সংসদে পাশ হওয়ার ঠিক একদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সাক্ষরের পর আইনে পরিণত হয়েছে অনলাইন গেমিং বিল। ভারত সরকারের যুক্তি, সাম্প্রতিককালে এই ধরনের রিয়েল মানি গেমগুলির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছিল যুবসমাজ, সেই কারণেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, প্রতি বছর ৪৫ কোটি মানুষ এই ধরনের গেমিংয়ের ফাঁদে পড়ে ২০ হাজার কোটি টাকা হারান।
ইউক্রেনে প্রতিটি অস্ত্র চুক্তিতে ১০% কমিশন নেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও এই সেক্টরটিকে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করেছিল মোদী সরকার। ২০২৩-র পয়লা অক্টোবর থেকে এই গেমগুলির ডিপোজিট অ্যামাউন্টে ২৮% জিএসটি(GST) চাপিয়েছিল তারা। সরকারের সিদ্ধান্তে অখুশি হয়েছিল যাবতীয় রিয়েল মানি গেমিং অ্যাপগুলি। আকস্মিক ধাক্কা সামলাতে না পেরে ঝাঁপ ফেলতে বাধ্য হয়েছিল বহু ছোটখাটো রিয়েল মানি গেমিং অ্যাপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রিম ১১ (Dream11) সহ অন্যান্য বড় কোম্পানিগুলিরও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছিল। তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী, ব্যবহারকারীদের প্রতি ১০০ টাকা বিনিয়োগে ২৮ শতাংশ জিএসটি চাপানোর ফলে অনেকেই অনুৎসাহিত হয়ে পড়ছিলেন। সেই অচলাবস্থা কাটাতেই প্রতি ১০০ টাকা ডিপোসিটে ২৮ টাকা ট্যাক্স নিজের পকেট থেকে দিতে শুরু করে সংস্থাগুলি। পালটা ২৮ শতাংশ জিএসটি চাপায় বিজিত মূল্যের ওপর। অর্থাৎ সহজ পাটিগণিতের হিসেবে, একটি কন্টেস্টে দু’জন খেলোয়াড় ১০০ টাকা করে ঢাললে মোট (২৮*২=৫৬টাকা) করবাবদ দিচ্ছিল এই সংস্থাগুলি। তার বিনিময়ে বিজিতমূল্যের ওপর খেলোয়াড়দের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করে লাভ করছিল মাত্র ৫০.৪ টাকা (২০০ টাকার মধ্যে ২০ টাকা অ্যাপের কমিশন ধরে)।
একদিকে এই সংস্থাগুলির ভাঁড়ে মা ভবানী দশা হলেও লাভের গুড় ঠিকই পেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) জানিয়েছিলেন, ২৮ শতাংশ জিএসটি চাপানোর ছ’মাসের মধ্যে অনলাইন গেমিং থেকে কেন্দ্র মোট ৬৯০৯ কোটি টাকা লাভ করেছিল, যা কিনা আগের চেয়ে ৪১২ শতাংশ বেশি।
প্রশ্ন ওঠে, রাতারাতি এই ‘লাভদায়ক’ সেক্টরকে নিষিদ্ধ করে দিলে আয়ের ঘাটতি মিটবে কীভাবে? কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা, রিয়েল মানি গেমিং-এর বদলে প্রাধান্য দেওয়া হবে ই-স্পোর্টস এবং সোশ্যাল গেমিংকে। আগামী কয়েক বছরে ভারতকে বিশ্বের অন্যতম গেম প্রস্তুতকারী (developer) দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চায় তারা। এই মুহূর্তে হাতেগোনা ক’টি সংস্থাই উচ্চমানের AAA গেম তৈরি করে। তবে এই ধরনের গেমগুলির যথেষ্ট চাহিদা আছে বিশ্বের চতুর্থ অর্থনীতিতে। এখন গেম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে কী ধরনের সুবিধা প্রদান করে কেন্দ্রীয় সরকার, তার দিকেই নজর গোটাবিশ্বের।
আরও পড়ুন :
শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে গ্রেফতার