Breaking News

Planet Discovery

ক্ষুদ্র নক্ষত্র, দৈত্য গ্রহ! মহাকাশে নতুন বিস্ময় আবিষ্কারে চমকে গেলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

মহাকাশ গবেষণার জগতে আবারও এক চমকপ্রদ আবিষ্কার ঘটল। একটি ক্ষুদ্র লাল বামন নক্ষত্রের চারপাশে আবিষ্কৃত হলো এক গ্যাসীয় দৈত্যগ্রহ – এমন এক যুগল, যা প্রচলিত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।

Planet Discovery: Unveiling TOI-6894b Insights %%page%% %%sep%% %%sitename%%

Planet Discovery

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : সম্প্রতি আন্তর্জাতিক এক গবেষকদল ‘Nature Astronomy’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানিয়েছে, TOI-6894b নামের একটি ক্ষুদ্র নক্ষত্রকে ঘিরে আবিষ্কৃত হয়েছে এই বিশাল গ্যাসীয় গ্রহ (Planet Discovery)। উল্লেখযোগ্যভাবে, TOI-6894b এর ভর আমাদের সূর্যের মাত্র ২০ শতাংশ – অর্থাৎ এটি একটি ক্ষুদ্র ও শান্ত প্রকৃতির লাল বামন নক্ষত্র। অথচ, এই ধরনের নক্ষত্র সাধারণত বৃহৎ গ্রহ গঠনের উপযুক্ত নয় বলে এতদিন ধরে বিশ্বাস করা হতো।

নতুনভাবে চিহ্নিত এই গ্রহটির ব্যাসার্ধ শনির চেয়ে সামান্য বেশি, তবে এর ভর শনির অর্ধেকেরও কম। অর্থাৎ, এটি একটি ফাঁপা গ্যাসীয় দৈত্য – যা আকারে বড় হলেও তুলনামূলকভাবে কম ঘন। সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হলো, এটি মাত্র তিন দিনের কিছু বেশি সময়ে নিজের নক্ষত্রকে একবার প্রদক্ষিণ করে, অর্থাৎ এর কক্ষপথ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও দ্রুত।

এই ধরনের সিস্টেম মহাবিশ্বে বিরল, এবং এটি গ্রহ গঠনের প্রচলিত তত্ত্বগুলিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয়, লাল বামন নক্ষত্রগুলো তীব্র বিকিরণ ও কম ভরের কারণে বিশাল গ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস-ধুলোর ডিস্ক বজায় রাখতে পারে না। তাই এমন দৈত্যগ্রহের উপস্থিতি কার্যত অভূতপূর্ব।

এই আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে নাসার TESS (Transiting Exoplanet Survey Satellite) মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের অবদান। এই স্যাটেলাইট ৯১,000টির বেশি লাল বামন নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করে TOI-6894b নামক এই নক্ষত্রে অস্বাভাবিক আলো পরিবর্তনের সূচনা খুঁজে পায়।

এরপর চিলিতে অবস্থিত ‘Very Large Telescope’ এবং আরও কিছু শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গবেষকরা নিশ্চিত হন, ওই নক্ষত্রের চারপাশে একটি বিশাল গ্রহ ঘুরছে। এটিই এখন পর্যন্ত ক্ষুদ্রতম সেই নক্ষত্র, যার চারপাশে শনির সমতুল্য বা বৃহৎ গ্রহ ঘোরার প্রমাণ মিলেছে।

‘সুপার-আর্থ’ গ্রহ ছড়িয়ে রয়েছে মহাবিশ্বে, বলছে নতুন গবেষণা

“আমাদের আরও ভালো করা উচিত ছিল” — এশিয়ান কাপ বাছাই নিয়ে সোজাসাপ্টা মন্তব্য ছেত্রীর

এই যুগল সম্পর্কে আরও গভীর তথ্য জানার জন্য গবেষকেরা এখন অপেক্ষা করছেন James Webb Space Telescope (JWST)-এর পরবর্তী পর্যবেক্ষণের। আশা করা হচ্ছে, আগামী এক বছরের মধ্যেই ওয়েব টেলিস্কোপ এই গ্রহ ও তার বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে – যেমন, গ্রহটির তাপমাত্রা, গ্যাসের গঠন, এবং এমনকি সেখানে প্রাণের সম্ভাবনা আছে কিনা।

জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. নাথান রিড বলেন,
“এটা যেন মহাকাশের একটা টুইস্ট! এই আবিষ্কার আমাদের গ্রহ গঠনের বোঝাপড়াকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করবে।”

তিনি আরও বলেন, “একটা সূর্যের ২০ শতাংশ ভরের নক্ষত্র, অথচ তার চারপাশে ঘুরছে এক বিশাল গ্যাসীয় দানব – এটা সত্যিই বৈজ্ঞানিক বিস্ময়।”

এই আবিষ্কার আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মহাবিশ্ব এখনও কত অজানা। প্রতি বছর শত শত এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কৃত হলেও এমন অদ্ভুত এবং ব্যতিক্রমধর্মী সন্ধান খুবই বিরল। TOI-6894b-এর গ্রহ আমাদের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্ক বোঝার ব্যাকরণই বদলে দিতে পারে। ভবিষ্যতের পর্যবেক্ষণ হয়তো মহাবিশ্বের আরও বিস্ময়কর সত্য সামনে নিয়ে আসবে।

আরও পড়ুন :

চেনাব রেলব্রিজ : উন্নয়নের স্থাপত্য না কি ভোটের কৌশল? চেনাব ব্রিজ ঘিরে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র সরকার

পতৌদি নয়, এবার থেকে অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি! ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট সিরিজের নতুন নাম ঘোষণা

ad

আরও পড়ুন: