Rama Duwaji Behind Mamdani Victory
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে সম্প্রতি যে নতুন রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি হয়েছে, সেখানে তরুণ সমাজের সক্রিয় ভূমিকা পরিষ্কার। এই তরুণ রাজনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছেন রামা দুভাজি। তিনি শুধু জনপ্রতিনিধি জোহরান মমদানির স্ত্রী নন, বরং তাঁর রাজনৈতিক ভাবনা, জনসংযোগ এবং প্রচার কৌশলের অন্যতম মুখ। এনডিটিভির এক বিশেষ প্রতিবেদনে তাঁকে বলা হয়েছে, “নিউ ইয়র্কের জেন Z ফার্স্ট লেডি।”
রামা দুভাজি বয়সে তরুণ। তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট এবং দৃঢ়। তিনি সামাজিক বৈষম্য, আবাসন অধিকারের লড়াই এবং নির্যাতিত শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার। তিনি মনে করেন, রাজনীতি কেবল ভোট বা ক্ষমতা দখলের বিষয় নয়, বরং জনগণের জন্য বাস্তব পরিবর্তন গড়ে তোলা।
তাঁর স্বামী জোহরান মমদানি, যিনি নিউ ইয়র্কের অ্যাস্টোরিয়া অঞ্চলের অ্যাসেম্বলি সদস্য, সম্প্রতি পুনরায় নির্বাচনে জয় পেয়েছেন। স্থানীয় জনসংযোগ, ভাড়া-বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই, খাবার ডেলিভারি কর্মীদের সুরক্ষা নীতি— এসব ক্ষেত্রেই মমদানি সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। আর এই প্রতিটি প্রচারের কেন্দ্রেই রামার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
রামা নিজেও সামাজিক সংগঠনে কাজ করেন। ঘরে ঘরে গিয়ে ক্যাম্পেইন করা, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে বসে সমস্যার আলোচনা করা, প্রবাসী ভারতীয়, আরব, দক্ষিণ এশীয় পরিবারগুলির বাস্তব অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা— সবই তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে করেছেন। অনেকেই বলেন, “মমদানি মানুষের নেতা, কিন্তু রামা মানুষের ঘরের ভেতর পৌঁছে দেওয়া শক্তি।”
রামা দুভাজির রাজনৈতিক যাত্রা খুব পরিকল্পিত ছিল না। তিনি ছোটবেলা থেকে বহুসাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। তাঁর পরিচিতির মধ্যে থাকতে শুরু করে অভিবাসী শ্রমিকদের সংগ্রাম, পরিচয় রাজনীতি এবং অধিকার আন্দোলন। সেখান থেকেই গড়ে ওঠে তাঁর রাজনৈতিক মনস্তত্ত্ব। তিনি বিশ্বাস করেন, “পাবলিক সেবা মানে ক্ষমতা নয়, দায়বদ্ধতা।”
মমদানি-রামা দম্পতির ক্যাম্পেইনে প্রচুর তরুণ যুক্ত হন। এঁরা বিশ্ববিদ্যালয়, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিল্পচর্চা কেন্দ্র বা শ্রম সংগঠন থেকে এসেছেন। তাঁদের কাছে রামার ভাষা সরাসরি, স্পষ্ট এবং সহজ। তিনি বলেন—
“আমরা শুধু ভোট চাই না। আমরা চাই আপনি এই সমাজের সক্রিয় মানুষ হন।”
এই মানসিকতা তাঁকে তরুণদের কাছে আরও জনপ্রিয় করেছে।
নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচন: নেহরুর কোটেশন, বলিউড গান ভারতীয় সংযোগ নিয়ে আলোচনায় জোহরান মমদানী
নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়লেন জোহারান মামদানি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম প্রথম মেয়র
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রামা প্রচারের সময় খুব সচেতনভাবে তাঁর পরিচয় ও সামাজিক অবস্থানকে সামনে আনেন। তিনি বলেন,
“আমি অভিবাসী মানুষের ঘরের মেয়ে। তাদের সমস্যাই আমার সমস্যা।”
মমদানির নির্বাচনী প্রচারের সময় রামা প্রায় প্রতিদিন মাঠে ছিলেন। তিনি ইভেন্ট সংগঠিত করেছেন, মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেছেন। অর্থাৎ, তাঁর ভূমিকাকে শুধু “সহধর্মিণী” বলা বাস্তব পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করা হবে।
রামা দুভাজি বর্তমানে জেন Z প্রজন্মের মধ্যে “নতুন রাজনৈতিক কণ্ঠস্বরের প্রতীক” হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী দক্ষিণ এশীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের উত্থানে তাঁর ভূমিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
আরও পড়ুন :
বিহার ভোট ২০২৫: প্রথম ধাপে ১২১ আসনে ভোট, মহাযুদ্ধের ময়দানে মহাগঠবন্ধন বনাম এনডিএ
পাকিস্তানের নোংরা চাল: সীমান্তেই ফিরিয়ে দেওয়া হলো ভারতের নানকানা সাহিব যাত্রী হিন্দু ভক্তদের