RamayanaInKarachi
ক্লাউড টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ১৪ জুলাই ২০২৫ : ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এক রকম সীমারেখায় ঘেরা টোপে ঘেরা থাকে। কিন্তু করাচির এই নাট্যদল সম্প্রতি সেই সীমানা পার করার সাহসিকতা দেখাল। পাকিস্তানের নাট্যসংগঠন ‘মৌজ প্রোডাকশনস’ করাচি আর্টস কাউন্সিলের মঞ্চে উপস্থাপন করল হিন্দু মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এর আধুনিক মঞ্চরূপ। অভিনব AI প্রযুক্তি, গাঢ় নাট্যশৈলী এবং ধর্মীয় সংবেদনশীলতা রক্ষা করেও দর্শকদের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিয়েছে এই প্রযোজনা (RamayanaInKarachi)।
প্রযুক্তি আর আবেগের যুগলবন্দি
রামায়ণ মঞ্চায়নে ব্যবহার করা হয়েছে AI ভিত্তিক প্রজেকশন, রিয়েল-টাইম ভিজ্যুয়াল এফেক্ট এবং অডিও ডিজাইন, যা পাকিস্তানের থিয়েটার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
দর্শকরা দৃশ্যমানভাবে দেখতে পান:
অযোধ্যার রাজপ্রাসাদ,
পঞ্চবটীর অরণ্য,
লঙ্কার রাক্ষসরাজের সভা,
এবং হনুমানের লঙ্কা দহন।
এই মঞ্চায়ন সম্পর্কে নাটকের পরিচালক বলেন,
“রামায়ণ শুধু ধর্মীয় নয়, এটি একটি মানবিক গল্প। এই উপমহাদেশের সংস্কৃতির অংশ। আমরা সেটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গেই তুলে ধরেছি।”
AI প্রযুক্তির মাধ্যমে একেকটি দৃশ্য যেন প্রাণ পেল। পাকিস্তানে এই প্রযুক্তিনির্ভর থিয়েটার খুবই নতুন, তাই দর্শকদের অভিজ্ঞতা ছিল বিস্ময়কর।
অভিনেতা ও সংবেদনশীল ভারসাম্য
নাটকে অভিনয় করেন মূলত মুসলিম শিল্পীরা।
রাম চরিত্রে আশ্মল লালবানি
সীতা চরিত্রে রানা কাজমি (তিনি প্রযোজকও)
রাবণ চরিত্রে সম্বন গাজি
হনুমান চরিত্রে জিবরান খান
এই নাটক পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে অনেকেই আপত্তিকর মনে করতে পারতেন। কিন্তু ‘মৌজ’-এর সংযত ও শ্রদ্ধাশীল পরিবেশনায় বিতর্কের জায়গা হয়নি। অভিনেতাদের পোশাক ও সংলাপে ছিল সংযম, এবং দৃশ্যায়নে ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করা হয়নি।
চীন বিশ্বে প্রথমবারের মতো চালু করল একটি সম্পূর্ণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ভিত্তিক হাসপাতাল
পাকিস্তানের কয়েকটি মিডিয়া হাউস ও বিশিষ্ট শিল্পজন নাটকটির প্রশংসা করেন। কেউ কেউ এটিকে “সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের সাহসী পদক্ষেপ” বলেও অভিহিত করেন।
‘রামায়ণ’ একটি ভারতীয় মহাকাব্য হলেও এতে রয়েছে সার্বজনীন মানবিকতা:
পিতৃভক্তি
সত্যনিষ্ঠা
ন্যায় ও অন্যায়ের দ্বন্দ্ব
নারীর মর্যাদা
এই মঞ্চায়নে শুধুমাত্র হিন্দু সংস্কৃতির একচেটিয়া ভাব না রেখে একে তুলে ধরা হয়েছে সার্বজনীন মূল্যবোধের গল্প হিসেবে।
পরিচালক বলেন:
“এই নাটক পাকিস্তানের নয়, ভারতীয়দেরও নয়। এটা সবার—যারা ন্যায়, সাহস ও ভালোবাসায় বিশ্বাস রাখে।”
এটি শুধু পাকিস্তানেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে সাংস্কৃতিক মঞ্চে শান্তির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন :
১৪৮ বছরের অপেক্ষার অবসান: উইম্বলডন জিতে ইতিহাস গড়লেন ইতালির জ্যান্নিক সিন্নার
ছয় দিন নিখোঁজ থাকার পর পাওয়া গেল অঙ্ক অনার্সের ছাত্রী স্নেহা দেবনাথের দেহ, শোকস্তব্ধ প্রিয়জন