RestInPeaceSarojaDevi
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১৫ জুলাই ২০২৫, বেঙ্গালুরু : ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক যুগের অবসান। দক্ষিণ ভারতের চার ভাষায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া কিংবদন্তি অভিনেত্রী বি সরোজা দেবী আর নেই (RestInPeaceSarojaDevi)। সোমবার সকালে বেঙ্গালুরুতে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
প্রথিতযশা এই অভিনেত্রীর মৃত্যুসংবাদটি সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন অভিনেত্রী খুশবু সুন্দর। টুইটারে (এক্স) তিনি লিখেছেন—
“বি সরোজা দেবী ম্যাম আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি। শান্তিতে বিশ্রাম নিন লেজেন্ড।”
১৭ থেকে শুরু—রুপালি পর্দায় ছয় দশকের দীপ্তি
মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিনয়জীবন শুরু করেছিলেন সরোজা দেবী। তাঁর প্রথম ছবি ছিল ১৯৫৫ সালের কন্নড় ভাষার ‘মহাকবি কালিদাস’। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৯৫৮ সালে এম জি রামচন্দ্রনের সঙ্গে তামিল ছবি ‘নাডোডি মান্নান’-এ অভিনয় করে এক লাফে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছন। ওই ছবিই তাঁকে দক্ষিণ ভারতের ঘরোয়া নাম করে তোলে।
চারটি ভাষায়—তামিল, তেলুগু, কন্নড় ও হিন্দি—তিনি কাজ করেছেন ২০০টিরও বেশি ছবিতে। ১৯৫৫ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত টানা ১৬১টি ছবিতে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে গড়েছেন এক বিরল রেকর্ড। আজও যা অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
নায়কদের নায়িকা: একের পর এক সোনালি জুটি
বি সরোজা দেবী ছিলেন ভারতীয় সিনেমার বহু নামজাদা নায়কের নির্ভরযোগ্য সহঅভিনেত্রী। তিনি নিয়মিত অভিনয় করেছেন—
শিবাজি গণেশন
এনটি রামা রাও
ডঃ রাজকুমার
জেমিনি গণেশন
এবং বিশেষ করে এম জি রামচন্দ্রন—যার সঙ্গে তাঁর ২৬টি হিট ছবি রয়েছে।
এই জুটিগুলোর অধিকাংশই ছিল ব্লকবাস্টার। তাঁদের সিনেমাগুলো শুধু ব্যবসাসফলই হয়নি, বরং সমাজে প্রভাব ফেলেছিল। তখনকার দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে এম জি আর এবং সরোজা দেবীর জুটি ছিল ‘আইকনিক’।
️ বলিউডেও রেখেছেন চিহ্ন
যদিও সরোজা দেবী মূলত দক্ষিণের অভিনেত্রী হিসেবেই বিখ্যাত, তবে বলিউডেও তাঁর অবদান কম নয়। তিনি অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় কিছু ছবিতে, যেমন—
পয়গাম (১৯৫৯)
সসুরাল (১৯৬১)
পেয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া (১৯৬৩)
এইসব ছবিতে তাঁর অভিনয় নজর কেড়েছে হিন্দি দর্শকদেরও।
️ সম্মান ও স্বীকৃতি
অভিনয়ে অবদানের জন্য সরোজা দেবী পেয়েছেন ভারতের অন্যতম সেরা সম্মাননা:
পদ্মশ্রী (১৯৬৯)
পদ্মভূষণ (১৯৯২)
কালাই মামানি (তামিলনাড়ু সরকারের সর্বোচ্চ সাংস্কৃতিক সম্মান)
সম্মানসূচক ডক্টরেট
এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডের প্রধান হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর এই দীর্ঘ যাত্রা শুধু অভিনেত্রী হিসেবেই নয়, বরং একজন সংস্কৃতি-দূত হিসেবেও মনে রাখা হবে।
আরও পড়ুন :
পাকিস্তানে মঞ্চস্থ হল ‘রামায়ণ’, করাচিতে ‘মৌজ প্রোডাকশনস’ এর সাহসী নাট্য প্রয়াস
১৪৮ বছরের অপেক্ষার অবসান: উইম্বলডন জিতে ইতিহাস গড়লেন ইতালির জ্যান্নিক সিন্নার