RumpaDas EverestSummit
নদিয়া, (ক্লাউড টিভি): নদিয়া জেলার রানাঘাটের কুপার্স কলোনির বাসিন্দা রুম্পা দাস, প্রথম বাঙালি মহিলা হিসেবে এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন। এই ঐতিহাসিক অভিযানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুব্রত ঘোষ। যদিও রুম্পা সফলভাবে শৃঙ্গে পৌঁছাতে সক্ষম হলেও, সুব্রত মাঝপথে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শৃঙ্গ ছুঁতে পারেননি। ফলে, আনন্দের পাশাপাশি বেদনার মিশ্র অনুভূতি নিয়ে ফিরতে হয় রুম্পাকে।
২০১২ সালে ট্রেকিং শুরু করা রুম্পা, পরবর্তীতে ‘মাউন্টেনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কৃষ্ণনগর’ (ম্যাক)-এর সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১৫ সালে শুশুনিয়া পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, তিনি একের পর এক দুর্গম পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাউন্ট স্টক কাংরি, ব্ল্যাক পিক, ত্রিশূল-১, সাসের কাংরি, গ্যাংস্ট্যাং ও দেবাচেন। ২০২১ সালে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। তবে, তাঁর ইচ্ছা অটুট ছিল। রামজাক শৃঙ্গ জয় তাঁর আত্মবিশ্বাস আরও বৃদ্ধি করে।
আনচেলত্তিকে পেতে ‘ছাড়েনি কিছুই’ ব্রাজিল, স্কালোনির তুলনায় ৪ গুণ বেতন
বিচারপতি ভূষণ আর গাভাই ভারতের প্রথম বৌদ্ধ প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন
রানাঘাটের কুপার্স কলোনি হাই স্কুলে ইংরেজি শিক্ষিকা রুম্পা, সংসার ও স্কুলের দায়িত্ব সামলে পর্বতারোহণে যুক্ত ছিলেন। প্রতিদিন সকালে মাঠে দেড় ঘণ্টা দৌড়, বিকেলে জিমে অনুশীলন ও যোগব্যায়াম করে তিনি শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতেন। স্বামী সুমন বসু, যিনি নিজেও পর্বতারোহী, রুম্পার প্রধান উৎসাহদাতা ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, সুমন মেরুদণ্ডে চোট পেয়ে আর অভিযানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে, রুম্পার পাশে থেকে তিনি সবসময় সহায়তা করেছেন।
এভারেস্ট অভিযানে রুম্পার সঙ্গে ছিলেন সুব্রত ঘোষ। তাঁরা দুজনই শৃঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু মাঝপথে সুব্রত অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শৃঙ্গ ছুঁতে পারেননি। রুম্পা একা শৃঙ্গে পৌঁছে সফলতা অর্জন করেন। তবে, সুব্রতের অসুস্থতা রুম্পার আনন্দকে ম্লান করে দেয়।
রুম্পা জানান, “স্বামী সুমন বসু, যিনি নিজেও পর্বতারোহী, আমার প্রধান উৎসাহদাতা ছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “এভারেস্ট অভিযানে সঙ্গী সুব্রত ঘোষের অসুস্থতা আমাকে ব্যথিত করেছে।” তবে, তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেন, “পাহাড়ের বুকে আরও কঠিন পথে হাঁটতে চাই। ছুঁতে চাই আরও অনেক দুর্গম পর্বতশৃঙ্গ।”
রুম্পার পরবর্তী লক্ষ্য হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা ও মাউন্ট এভারেস্টের শৃঙ্গ জয়। তিনি জানান, “নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বড় অভিযানে খরচ জোগানোর জন্য বন্ধুদের সহযোগিতা নিতে হয়।”
রুম্পা দাসের এই অভিযানের সাফল্য ও সংগ্রাম, নারীদের শক্তি ও সংকল্পের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি প্রমাণ করেছেন, ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোনও শৃঙ্গ জয় করা সম্ভব।
আরও পড়ুন :
ট্রাম্পের ধমকেই কি যুদ্ধবিরতি? ভারতে সমালোচনার ঝড়, চাপে মোদি সরকার
দোহায় নীরজ চোপড়ার ঐতিহাসিক থ্রো—নতুন ইতিহাস গড়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেখালেন পথ