SaifAliKhan EnemyProperty
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : সইফ আলি খান শুধু বলিউড তারকা নন, ভারতের অন্যতম রাজবংশ—ভোপালের নবাবি পরিবারের উত্তরাধিকারী। তাঁর মা শর্মিলা ঠাকুর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবার থেকে আসা হলেও সাইফের বাবা মনসুর আলি খান পতৌদি ছিলেন ভোপালের নবাব পরিবারের শেষ নবাব হামিদুল্লা খান এর উত্তরসূরি (SaifAliKhan EnemyProperty)।
ভোপালের শেষ নবাব হামিদুল্লাহ খানের তিন কন্যা: আবিদা সুলতান, সাজিদা সুলতান ও রাবিয়া সুলতান। এদের মধ্যে আবিদা সুলতান ১৯৫০ সালে পাকিস্তানে চলে যান এবং পাকিস্তানের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। আবিদা সুলতান পাকিস্তানের হয়ে UNO-তেও কাজ করেছেন।সেই সময়ের আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় আইনে, পাকিস্তানে বসবাসকারী ভারতীয়দের অনেক সম্পত্তি “Enemy Property” হিসেবে চিহ্নিত হয়। আবিদার ত্যাগ করা সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে পরে তাঁর বোন সাজিদা সুলতান দাবি করেন এবং ভারত সরকার ১৯৬১ সালে সাজিদাকে উত্তরাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।সাজিদা সুলতান ছিলেন সৈফ আলি খানের দিদা এবং ক্রিকেটার মনসুর আলি খান পতৌদির মা। বলা হয়ে থাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহেরুর সঙ্গে মনসুর আলি খান পতৌদির সুসম্পর্ক ভোপাল রাজবংশের উত্তরাধিকার পতৌদিদের হাতে যাওয়ায় সহায়ক ভূমিকা গ্রহণ করে । খুব স্বাভাবিক ভাবেই সইফ আলি খান সেই সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। এই নবাবি বংশের উত্তরাধিকার হিসেবে সইফের নামে ছিল কোটি কোটি টাকার রাজপ্রাসাদ, জমি, বাংলো ইত্যাদি।
তবে সম্প্রতি এক আদালতের রায় অনুযায়ী, সেগুলো এখন আর সইফের সম্পত্তি নয়, বরং ‘Enemy Property’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
কী এই ‘শত্রু সম্পত্তি’ আইন?
১৯৬৮ সালে পাস হওয়া Enemy Property Act অনুযায়ী, পাকিস্তান ও চীনের নাগরিকরা যদি ভারত ছেড়ে চলে যান, তবে ভারতে তাঁদের সম্পত্তি রাষ্ট্রের মালিকানায় যাবে। এই আইনের আওতায় এমন সকল সম্পত্তিকে ‘শত্রু সম্পত্তি’ বলে ঘোষণা করা হয়।
২০১৭ সালে এই আইনে সংশোধন করে এটিকে আরও কঠোর করা হয়:
কোনো উত্তরাধিকারী— যদি সে ভারতীয় নাগরিকও হয়—শত্রু সম্পত্তির উপর দাবি করতে পারবে না।
আদালতের মাধ্যমেও এই সম্পত্তি ফেরত পাওয়া যাবে না।
❗ সৈফ আলি খানের সমস্যার সূচনা
সম্প্রতি সেন্ট্রাল গর্ভমেন্টের ‘Custodian of Enemy Property for India (CEPI)’ ঘোষণা করে যে,
“আবিদা সুলতানের উত্তরাধিকার হিসেবে সৈফ আলি খানের হাতে থাকা কিছু সম্পত্তি এখন শত্রু সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।”
সৈফের কাছে থাকা ভোপালের প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ও আরও কিছু জমিদার প্রাসাদ এই ঘোষণার আওতায় পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হেরিটেজ প্রাসাদ, কৃষিজমি, শহরের কেন্দ্রস্থলের জমি ইত্যাদি।
২০১৫ সালে সৈফ এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে আবেদন করেন। তাঁর যুক্তি ছিল:
“আমার দাদি সাজিদা সুলতান ভারতের নাগরিক ছিলেন এবং সরকার তাঁকেই উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই তাঁর মাধ্যমে আসা সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হতে পারে না।”
তবে ২০২৫ সালের জুন মাসে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত জানায়,
“এই মামলা এখন ট্রায়াল কোর্টে নতুন করে শুনানি হবে এবং শত্রু সম্পত্তির বিষয়টি সেখানে বিস্তারিতভাবে বিবেচনা করা হবে।”
রাবিয়া সুলতান – তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে কম পরিচিত। তিনি ভারতেই ছিলেন, তবে সম্পত্তির দাবিদার হিসেবে কার্যকর কোনো আইনি পদক্ষেপে অংশ নেননি বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন :
দলাই লামার ছদ্মবেশে পালানোর নাটকীয় ইতিহাস: তিব্বতের প্রাসাদ থেকে ভারতের অভিমুখে এক বিপজ্জনক যাত্রা
সৌরভ গাঙ্গুলীর বায়োপিকের শুটিং পিছোল, ২০২৬-এ শুরু শুটিং প্রস্তুতি