SanjayGupta ICCCEO
দুবাই, ৭ জুলাই ২০২৫: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) তাদের নতুন সিইও হিসেবে সঞ্জয় গুপ্ত-কে নিযুক্ত করল। ৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। জিওফ অ্যালার্ডিসের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি, যিনি চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
সঞ্জয় গুপ্ত এর আগে ডিজনি স্টার (Star Sports)-এর স্পোর্টস বিজনেস হেড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর অধীনেই ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেট সম্প্রচার ব্র্যান্ড গড়ে ওঠে, এবং তিনি আইপিএল থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সিরিজগুলোর বাণিজ্যিক দিক সুসংগঠিত করেন।
যৌন নির্যাতনের তদন্ত চলাকালেই আইসিসি’র চিফ প্রসিকিউটর পদ ছাড়লেন
আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিংসের চীনা কোম্পানি ড্রাগনপাসের সঙ্গে পার্টনারশিপ বাতিল
আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ বলেন,
“সঞ্জয়ের ক্রীড়া কৌশল ও বাণিজ্যিকীকরণে ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ক্রিকেটের বৈশ্বিক প্রসার ও ব্র্যান্ড মূল্য বৃদ্ধিতে তাঁর অবদান হবে অমূল্য।”
সঞ্জয় গুপ্ত কে?
সঞ্জয় গুপ্ত মিডিয়া ও স্ট্র্যাটেজিক কনসালটিংয়ে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন কর্পোরেট পেশাদার।
ডিজনি স্টারের আগে তিনি Star India-র মার্কেটিং, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি ও কনজিউমার কানেক্ট বাড়াতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ভারতের ডিজিটাল কনজিউমার বুমের সময় তিনিই ছিলেন নেতৃত্বে।
ক্রিকেটের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা কেবল সম্প্রচারে সীমাবদ্ধ নয়; তিনি ক্রিকেটের বাণিজ্যিক দিক, স্পনসরশিপ, এবং ফ্যান-এনগেজমেন্ট কৌশলে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন।
জিওফ অ্যালার্ডিসের উত্তরাধিকার
সঞ্জয় যে পদে আসীন হচ্ছেন, সেটি এর আগে দখল করেছিলেন জিওফ অ্যালার্ডিস, যিনি ২০১২ সাল থেকে আইসিসিতে ছিলেন এবং ২০২১ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এর আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট অপারেশনস ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। অ্যালার্ডিসের আমলে আইসিসি একাধিক নতুন টুর্নামেন্ট চালু করে এবং আর্থিকভাবে সংগঠনটি আরও স্থিতিশীল হয়।
আইসিসির সামনে চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা
সঞ্জয় গুপ্ত যখন দায়িত্ব নিচ্ছেন, তখন আইসিসির সামনে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ:
নতুন সম্প্রচার অধিকার: আগামী বিশ্বকাপ, WTC ও ICC Women’s events-এর সম্প্রচার চুক্তিগুলো হস্তান্তরযোগ্য অবস্থায় আছে।
ক্রিকেটের নতুন বাজারে প্রবেশ: ইউএসএ, সৌদি আরব, ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে ক্রিকেট বিস্তারে নতুন উদ্যোগ নিতে হতে পারে।
জেনারেশন Z ও ডিজিটাল ক্রিকেট ফ্যানদের এনগেজমেন্ট: নতুন মিডিয়া কৌশল, শর্ট ফর্ম কনটেন্ট, ও AI ব্যবহারে আইসিসির ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে হবে।
এই সব ক্ষেত্রে সঞ্জয়ের ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি ও ফ্যান এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন-এর দক্ষতা কাজে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলাটি যাতে আরও বেশি বাজারে প্রবেশ করতে পারে, তার জন্য নতুন সিইও-র ওপর দায়িত্ব অনেক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
“সঞ্জয় ক্রিকেটকে শুধুমাত্র খেলা হিসেবে নয়, একটি শক্তিশালী আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে গড়তে পারেন।”
তাঁর নেতৃত্বে মিডিয়া চুক্তি, নতুন ফরম্যাট, স্পনসরশিপ ও বিশ্বকাপ কাঠামোয় আধুনিকায়ন আসতে পারে।
সঞ্জয় গুপ্তর নিয়োগ কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নতুন কৌশলগত যাত্রার সূচনা। তাঁর মিডিয়া, ডিজিটাল এবং ক্রীড়া বাণিজ্যে অভিজ্ঞতা আগামী দিনে আইসিসিকে আধুনিক, সপ্রতিভ ও বৈশ্বিক ফ্যানবেসসম্পন্ন একটি সংগঠনে রূপান্তর করতে পারে। এখন সময় বলবে, ক্রিকেট কতদূর এগোবে তাঁর নেতৃত্বে।
আরও পড়ুন :
অনিমেষ কুজুর: ভারতের দ্রুততম মানব হয়ে ইতিহাস গড়লেন ছত্তিশগড়ের তরুণ
ফের বিতর্কে শুভমান গিল, ৩০০ কোটির চুক্তি নিয়ে অস্বস্তিতে বিসিসিআই