SanjayShirsat CashBagVideo
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১১ জুলাই ২০২৫ : মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। এক ভাইরাল ভিডিওকে ঘিরে শিবসেনা (উদ্ধব বলয়) ও শিণ্ডে গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ট্যাগ করে শিবসেনা (UBT)-এর রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন এক ভিডিও (SanjayShirsat CashBagVideo)—যেখানে শিণ্ডে গোষ্ঠীর নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সঞ্জয় শিরসাটকে দেখা যাচ্ছে শোবার ঘরে ব্যাগভর্তি নগদ টাকার পাশে বসে থাকতে।
ভিডিওটি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এতে স্পষ্ট দেখা যায়, একটি বড় ব্যাগে গুচ্ছ গুচ্ছ নোট (সম্ভবত ৫০০ টাকার) রাখা, আর পাশে বসে রয়েছেন শিরসাট—গায়ে নাইটি, পায়ের কাছে একটি পোষা কুকুর।
এক্স (টুইটার)-এ ভিডিওটি শেয়ার করে রাউত লেখেন:
“Hon’ble PM @narendramodi and Home Minister @AmitShah – this is your Maharashtra minister! Shameful. This is what BJP-backed governance looks like।”
এরপর আরও এক পোস্টে তিনি কটাক্ষ করে বলেন,
“Helplessness has another name—Devendra Fadnavis! এই সরকার শুধু দুর্নীতিকে আশ্রয় দেয় না, দুর্নীতিকে উৎসাহও দেয়।”
️ কী বলছেন অভিযুক্ত সঞ্জয় শিরসাট?
সঞ্জয় শিরসাট পাল্টা দাবি করেন, ভিডিওটি ভুয়ো ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৈরি। তাঁর বক্তব্য:
“এই ব্যাগে কোনও টাকাই ছিল না। ওটা জামাকাপড় রাখার ব্যাগ। এই ভিডিও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘরে ঢুকে তৈরি করা হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, এই ভিডিও নির্বাচনের আগে তাঁকে কালিমালিপ্ত করার জন্য বানানো হয়েছে। “যদি সত্যিই আমি এত টাকা রাখতাম, তাহলে ঘরের বাইরে বা লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতাম, ঘরের মাঝে এমন খোলাখুলি রাখতাম না,” মন্তব্য শিরসাটের।
সম্প্রতি শিরসাটের নামে আয়কর দপ্তরের নজরে এসেছে একাধিক অঘোষিত সম্পত্তি। অভিযোগ, তিনি বিধায়ক হওয়ার পর মাত্র পাঁচ বছরে ৩৩ লক্ষ থেকে ৩.৫ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, যার কোনও হিসাব নেই। এই পরিস্থিতিতে ভিডিওটি ফাঁস হওয়ায় রাজনৈতিক জল্পনা আরও গভীর হয়ে উঠেছে।
হঠাৎ অমিত শাহ’র কণ্ঠে অবসর, অবাক বিজেপি! নতুন জল্পনায় উত্তাল রাজনৈতিক মহল
লন্ডনের রাস্তায় বিরাট-অনুশকা! লুকিয়ে ভিডিও, কড়া চাহনিতে জবাব দিলেন কোহলি
বিরোধীদের দাবি, “এই ভিডিওই প্রমাণ করে দেয় কীভাবে বিজেপির ছত্রছায়ায় দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার চলছে মহারাষ্ট্রে।”
শিবসেনা (UBT)-এর যুব নেতা আদিত্য ঠাকরে বলেন:
“পাঁচ বছরের মাথায় একজন সাধারণ বিধায়ক কোটির মালিক হয়ে গেলেন, এখন দেখা যাচ্ছে নগদ ব্যাগে বসে আছেন! এর তদন্ত দরকার। আমজনতার ট্যাক্সের টাকা কার ব্যাগে যাচ্ছে—এ প্রশ্ন আজ গোটা মহারাষ্ট্রের।”
রাজ্যের অর্থ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই ভিডিওর বিষয়ে আয়কর বিভাগকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্তে নামতে পারে ED ও CBI।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, শিণ্ডে গোষ্ঠীর একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়কের বিরুদ্ধেই অস্বচ্ছ লেনদেন ও সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর অধীনে আসতে পারে।
এই ভিডিও সামনে আসার পর তিনটি বিষয় স্পষ্ট:
শিণ্ডে গোষ্ঠীর ভাবমূর্তি চূড়ান্তভাবে প্রশ্নের মুখে।
বিজেপির সহযোগী সরকারের উপরেও চাপ বাড়ছে, বিশেষ করে উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের ভূমিকা নিয়ে।
লোকসভা ২০২৯ ও মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬-এর আগে এটি এক বড় রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে উদ্ধব বলয়ের কাছে।