Breaking News

Shashi Tharoor on Francesca Orsini

“রাষ্ট্রের আরও মোটা চামড়া, বৃহত্তর মন এবং বড় হৃদয়ের প্রয়োজন” : শশী থারুর

বিদেশি হিন্দি-উর্দু শিক্ষাবিদ Francesca Orsini-কে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কে মন্তব্য করলেন শশি থারুর। তিনি বললেন, ভারতের প্রশাসনকে “মোটা চামড়া, বৃহত্তর মন ও বড় হৃদয়” গড়তে হবে।

Shashi Tharoor on Francesca Orsini : ভারতের দরকার “মোটা চামড়া”

Shashi Tharoor on Francesca Orsini deportation

ক্লাউড টিভি ডেস্ক: বিদেশি শিক্ষাবিদ Francesca Orsini-কে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ও তর্ক এখন তুঙ্গে। ইতালীয় বংশোদ্ভূত এবং লন্ডনের SOAS-এর অধ্যাপিকা Orsini হিন্দি, উর্দু ও দক্ষিণ এশিয়া সাহিত্যের স্বনামধন্য গবেষক। দিল্লিতে অবতরণের পর তাঁকে দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপরই দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠেছে—ভারত কি বিদেশি গবেষকদের প্রতি অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে?

এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা শশী থারুর। তাঁর মতে, এমন ঘটনা কূটনৈতিক দিক থেকে এবং একাডেমিক বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। তবে তিনি কড়া ভাষায় বলেননি। বরং তিনি এক সংযত, তবে দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন—“রাষ্ট্রের আরও মোটা চামড়া, বৃহত্তর মন এবং বড় হৃদয়ের প্রয়োজন।”

প্রথমে জানা যায়, Orsini এর আগেই ভারতে “ব্ল্যাকলিস্টেড” হয়েছিলেন ভিসার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে। তাই ইমিগ্রেশন বিভাগ তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। যদিও, তিনি বহু বছর ধরে ভারতীয় সাহিত্য ও ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে এসেছেন। ফলে, অনেকেরই প্রশ্ন—শুধু ভিসা লঙ্ঘনের অভিযোগেই কি এমন সিদ্ধান্ত? নাকি রাজনৈতিক বা মতাদর্শগত কোনও প্রভাব রয়েছে?

“‘অনেকের ঘুম উড়ে যাবে’: বিরোধী INDIA জোটকে কটাক্ষ মোদির, জবাব দিলেন শশী থারুর”

‘স্বাস্থ্য আইনে সংশোধন প্রয়োজনীয়, কিন্তু কেন্দ্রিকরণ উদ্বেগজনক’: বিধানসভায় প্রশ্ন তুললেন ডঃ অশোক লাহিড়ী

যদিও সরকার তাঁর মন্তব্যের সরাসরি জবাব দেয়নি, কিন্তু থারুর স্পষ্টভাবে লিখেছেন—কোনও বিদেশি গবেষক কয়েকটি সমালোচনামূলক প্রবন্ধ লিখলে তা ভারত রাষ্ট্রকে দুর্বল দেখায় না। বরং, তাঁকে দেশে ঢুকতে না দেওয়া আন্তর্জাতিক মানসে ভারতের আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

তিনি বলেন,

“অপরিচিতদের স্বাগত জানানো সংস্কৃতি ভারতীয় সভ্যতার ভিত্তি। গবেষকদের ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের শক্তি নয়, বরং দুর্বলতার ইঙ্গিত।”

যদিও সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ভারতের নিরাপত্তা ও ভিসা আইন লঙ্ঘনের প্রশ্নে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। এদিকে শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদদের একাংশ বলছেন, এই সিদ্ধান্ত গবেষণার স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করতে পারে। তবে অন্য একটি অংশ যুক্তি দিচ্ছেন—আইনের সামনে সবাই সমান।

তবে প্রশ্ন থাকছে—ভিসা সমস্যার সমাধান কি ‘ব্ল্যাকলিস্টিং’, নাকি ‘স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যালোচনা’? কারণ, এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচিকে প্রভাবিত করতে পারে।

এই ঘটনা আন্তর্জাতিক একাডেমিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ, Orsini শুধু হিন্দি-উর্দু সাহিত্যই নন, ভারতীয় সংস্কৃতি ও সমাজ নিয়ে লেখেন। ফলে, তাঁর মতো গবেষককে ফিরিয়ে দেওয়া “জ্ঞান বিনিময়”-এর পথে বাধা বলেই মনে করছেন অনেকে।

তবে সমালোচকরা আবার বলছেন, যদি কোনও বিদেশি গবেষক বারবার নিয়ম ভাঙেন, তবে রাষ্ট্রের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার আছে। তাই বিষয়টি এখন সীমান্ত নিরাপত্তা বনাম গবেষক স্বাধীনতার এক কূটনৈতিক দোলাচলে দাঁড়িয়েছে।

সরকার এখন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘Vishwaguru India’-র ভাবমূর্তি তুলে ধরছে। কিন্তু এ ধরনের বিতর্কে সেই প্রচেষ্টায় আঘাত লাগতে পারে। তাই থারুরের বক্তব্য—“সমালোচনার ভয় পেলে জ্ঞানের অগ্রগতি থেমে যায়।”

তিনি আরও বলেন,

“দেশের বাস্তব শক্তি দেখাতে হবে সমালোচনা গ্রহণ করার ক্ষমতায়।”

এই ঘটনা স্পষ্ট করেছে, ভারতকে নিরাপত্তা ও উদারতা—দুইয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। কারণ, জ্ঞান-গবেষণার জগতে সীমান্তের ধারণা তুলনামূলকভাবে শিথিল। তাই ভিসা ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা প্রয়োজন।

যদিও সরকার নিয়ম অনুযায়ী কাজ করেছে বলে দাবি করছে, তবুও বিতর্ক এখানেই থামছে না। কারণ, প্রশ্ন উঠেছে—ভারত কি মতাদর্শগতভাবে কঠোর হচ্ছে? নাকি কেবল আইনি নিয়মই মানতে বলছে?

বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক গবেষণা, সংস্কৃতি এবং একাডেমিক স্বাধীনতার প্রশ্নে ভারতকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে। কারণ, জ্ঞান-বিনিময় থেমে গেলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ক্ষতির মুখে পড়ে।
এই প্রেক্ষাপটে থারুরের বার্তা—**“দিল বড় হতে হবে”—**আজকের বৈশ্বিক যুগে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন :

চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী বিসর্জনে এবার নেই লোডশেডিং, ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনে নতুন ইতিহাস

কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় নির্বাচন কমিশনে বিজেপির লিখিত অভিযোগ রেভন্থ রেড্ডির বিরুদ্ধে

ad

আরও পড়ুন: