GazaWar update Israel
ক্লাউড টিভি ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : গাজা যুদ্ধ নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ইজরায়েলি সেনারা উত্তর গাজার ইবাদ-আলরাহমান এলাকায় প্রবল ট্যাঙ্ক হামলা চালায়। এই অভিযানে অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়, আহত ও নিহত হয় বহু মানুষ (GazaWar update Israel)। গাজার বেসামরিক বাসিন্দাদের বড় অংশ বাধ্য হয়ে শহরের ভেতরে কিংবা দক্ষিণে পালিয়ে যেতে শুরু করেছে।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো গাজা সিটিকে ঘিরে রাখা এবং হামাসের শেষ শক্ত ঘাঁটিকে ধ্বংস করা। গত কয়েকদিন ধরে টানা বোমাবর্ষণ চলছে শেজাইয়া, জেইতুন এবং সাবরা অঞ্চলে। এসব এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সেনারা কিছু ট্যাঙ্ক সরিয়ে নিলেও এখন নতুন করে শহরের কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধ : গাজা শহরে বড়সড় অভিযানের আগে ৫০ হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকতে পারে ইজরায়েল
ফ্রিডম ফ্লোটিলা আটক: গ্রেটা থুনবার্গের জাহাজ ইসরায়েলি হস্তক্ষেপে থেমে গেল গাজার পথে
বর্তমানে গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষের অর্ধেকেরও বেশি গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। ইজরায়েল জানিয়েছে, বৃহৎ পরিসরে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। এ জন্য দক্ষিণ গাজায় তাঁবু শিবির ও অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলির দাবি, অন্তত ১৫ লাখ নতুন তাঁবুর প্রয়োজন এই বিশাল শরণার্থী সংকট সামাল দিতে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত এবং নিখোঁজ মানুষের সংখ্যাও কয়েকগুণ বেশি।
অন্যদিকে, খাদ্য সংকট এবং অপুষ্টি এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, গাজার শিশুদের একটি বড় অংশ প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। হাসপাতালগুলিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এদিকে, ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে গাজা যুদ্ধ নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের আহ্বান করেছেন। মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ যুদ্ধ চলতি বছরের শেষ নাগাদ কোনও না কোনও সমাধান পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
একইসঙ্গে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৈঠকে অংশ নেবেন এবং ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সার-এর সঙ্গেও বৈঠক করবেন। কূটনৈতিক মহল বলছে, যুক্তরাষ্ট্র একদিকে যুদ্ধের সমাপ্তির কৌশল খুঁজছে, অন্যদিকে যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পরিকল্পনাও করছে।
এর আগে ২০১৪ ও ২০২১ সালের গাজা যুদ্ধেও ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক গাজা সিটির দিকে অগ্রসর হয়েছিল। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে কারণ ব্যাপক প্রাণহানি ও দীর্ঘস্থায়ী অবরোধ মানবিক বিপর্যয়কে চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইজরায়েলি সেনারা গাজার ভেতরে যত বেশি অগ্রসর হবে, বেসামরিক হতাহতের ঝুঁকি ততই বাড়বে।
আরও পড়ুন :
চ্যাটজিপিটি-র বিরুদ্ধে মামলা : কিশোরের আত্মহত্যায় দায়ী কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?