সুশীলা কারকি নেপালের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : নেপালে দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে অবশেষে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি শুক্রবার রাত ৯টায় শপথ নিয়ে দেশের প্রথম মহিলা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান।
গত কয়েক মাস ধরে নেপালে ব্যাপক অসন্তোষ জমে উঠেছিল। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া “জেনজি আন্দোলন” দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। দুর্নীতি, বেকারত্ব, প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এর ফলেই দেশজুড়ে আন্দোলনের ঢেউ নেমে আসে।
চাপের মুখে অবশেষে কেপি শর্মা ওলি নেতৃত্বাধীন সরকার পদত্যাগ করে। ওলি ছিলেন নেপালের অন্যতম প্রভাবশালী কমিউনিস্ট নেতা, তবে তাঁর সরকারকে স্বৈরাচারী ও অদক্ষ বলে অভিযুক্ত করেছিল আন্দোলনকারীরা।
এই অচলাবস্থা কাটাতে সেনা প্রধান, রাষ্ট্রপতি এবং আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব দেওয়া হবে নিরপেক্ষ একজনকে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশীলা কারকি এই দায়িত্ব নিতে সম্মত হন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তিনি বলেন, “দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে অটুট রাখা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই হবে আমার প্রথম লক্ষ্য।”
তিনি এখন রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার প্রস্তাব জমা দেবেন। পুরনো মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে একটি ক্ষুদ্র কিন্তু কার্যকর সরকার গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সুশীলা কারকি নেপালের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তাঁর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এবং কঠোর অবস্থান তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত করে তুলেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বন্দ্বের মধ্যেও তিনি নিরপেক্ষ অবস্থানের কারণে সবার আস্থা অর্জন করেছেন।
তাঁর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার মূলত নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দিকে নজর দেবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তাঁর মতো একজন আইনজীবী ও বিচারপতি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ রাখার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি।
নেপালে হিংসার জেরে গোটা দেশজুড়ে কার্ফু, শান্তির আর্জি জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
দেশের জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা।
আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মের দাবি মেনে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখা।
আন্তর্জাতিক মহলে নেপালের ভাবমূর্তি রক্ষা করা।
নতুন নির্বাচনের রূপরেখা ঠিক করা।
সুশীলা কারকির সামনে এগুলোই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
নেপালের রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো কোনো নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হলেন। এ কারণে সুশীলা কারকির শপথগ্রহণ নেপালের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধু নেপালের গণতন্ত্রকেই শক্ত করবে না, দক্ষিণ এশিয়ার নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও এক নতুন বার্তা দেবে।
আরও পড়ুন :
অলিম্পিক খেলাধুলায় ভারতকে উন্নত করতে অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই সাহায্য করতে পারে: স্টিভ ওয়াহ