TariffImpact IndianTextileIndustry
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন করে আরোপ করা ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক এখন ভারতের জন্য মারাত্মক ক্ষতির বার্তা নিয়ে এসেছে। আগের ২৫ শতাংশ মিলিয়ে বর্তমানে মোট ৫০ শতাংশ ট্যারিফ কার্যকর হয়েছে ভারতের বস্ত্র ও পোশাক রফতানির ওপর। এই শুল্কের কোপে একের পর এক বড় মার্কিন রিটেল সংস্থা অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করে দিচ্ছে (TariffImpact IndianTextileIndustry)।
বিশেষ করে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট ও গ্যাপের মতো সংস্থাগুলি ভারতের বিভিন্ন পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের কাছে চিঠি ও ইমেইল পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন করে কোনো পণ্য পাঠানো যাবে না।
সূত্রের দাবি, এসব সংস্থা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে—এই অতিরিক্ত শুল্কের ফলে তাদের খরচ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে, এবং তারা এই বোঝা বহন করতে রাজি নয়। বরং ভারতীয় সরবরাহকারী সংস্থাগুলোকেই অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন এই খরচ নিজেদের দায়িত্বে নেয়।
ভারতের পোশাক ও বস্ত্র রফতানি সংস্থা (AEPC) জানিয়েছে, আমেরিকা ভারতের অন্যতম বড় রফতানি গন্তব্য। প্রতিবছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি হয় মার্কিন বাজারে। এই শুল্কের ফলে পণ্যের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
ফলে মার্কিন ক্রেতারা ভারত ছেড়ে ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, তুরস্ক, মেক্সিকোর মতো দেশগুলোর দিকেই ঝুঁকছেন বলে দাবি রফতানিকারকদের। এতে করে ভারতের আমেরিকামুখী রফতানি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন শুল্ক আরোপে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ, বলছে মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি
কান চলচ্চিত্র উৎসবে নতুন বিধিনিষেধ: পোশাকে নগ্নতা, অতিরিক্ত দৈর্ঘ্য ও বড় ব্যাগ নিষিদ্ধ
বস্ত্র রফতানিকারক সংস্থাগুলির সংগঠনের সভাপতি জানান:
“হাজার হাজার কারখানা ইতিমধ্যেই উৎপাদন স্থগিত করেছে। যেসব অর্ডারের কাজ চলছিল, সেগুলোর পেমেন্ট আটকে গেছে। পণ্য শিপিংয়ের আগেই অর্ডার বাতিল হয়েছে।”
ভারতের গার্মেন্টস শিল্প প্রায় ১ কোটি মানুষের জীবিকা জোগায়। এর মধ্যে শুধু আমেরিকান রফতানি নির্ভর কারখানায় ৪ থেকে ৫ লাখ শ্রমিক সরাসরি যুক্ত। এই সংকট যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এইসব শ্রমিকদের বড় অংশ চাকরি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, রফতানি বন্ধ হওয়ায় তৈরি পণ্য মজুত হয়ে পড়েছে গুদামে। নতুন অর্ডার না থাকায় অনেক সংস্থা ছাঁটাই শুরু করেছে। অনেকেই উৎপাদন লাইন বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে।
এই অবস্থাকে কৌশলগতভাবে কাজে লাগাতে পারে চীন। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন চীনের উপরেও উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, তবু চীন আগেভাগেই উৎপাদন চেইন ও দাম নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হওয়ায় তাদের উপর প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম।
অন্যদিকে, ভারতকে এই মুহূর্তে ভরসা করতে হবে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে। তবে এই পরিবর্তন সহজ নয়, কারণ মার্কিন বাজার ভারতীয় শিল্পের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক ছিল।
ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই জরুরি বৈঠক করেছে। রফতানিকারকদের সুরক্ষা দিতে শুল্ক ছাড়, ইনসেনটিভ স্কিম, করছাড় প্রভৃতির প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে রাজনৈতিক স্তরে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার কোনো দৃঢ় অগ্রগতি নেই। বরং চীন ভারতের পাশে দাঁড়ানোয় কূটনৈতিক অবস্থান কিছুটা জটিল হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন :
‘‘মাস্তানকে এক ইঞ্চি জায়গা দিলে সে মাইল দখল করে নেয়।’’: ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে ভারতের পাশে চীন
নিজের দেশের পরমাণু বিজ্ঞানীকেই এবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল ইরান !