TataInBengal
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : বুধবার বিকেলে কলকাতার নবান্ন ভবনে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে এই বৈঠকে (TataInBengal) রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা, পরিকাঠামো এবং বিনিয়োগের বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
টাটার এই হাই-প্রোফাইল বৈঠক ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই জোরালো হয়েছে জল্পনা— “ফিরছে কি টাটা বাংলায়?”
চলতি বছরের গোড়ায় আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে (Bengal Global Business Summit) এন চন্দ্রশেখরন উপস্থিত থাকতে পারেননি। সে সময় তিনি প্রতিনিধিকে পাঠান, এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে সংক্ষিপ্ত কথা বলেন। সেই আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে রাজ্যে টাটা গোষ্ঠীর নতুন বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
টাটা সন্স পক্ষ থেকেও সে সময় জানানো হয়, তারা বাংলার শিল্প পরিবেশ সম্পর্কে আশাবাদী এবং ভবিষ্যতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে।
ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে এবার সরাসরি সাক্ষাৎ
তবে আজকের বৈঠকের তাৎপর্য ভিন্ন। কারণ, কোনও সাধারণ ব্যবসায়িক সভা নয়— এটি ছিল ব্যক্তিগত ও একান্ত বৈঠক। চন্দ্রশেখরন বিকেলে কলকাতায় পৌঁছনোর পর সোজা নবান্নে যান। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন। এরপর দু’জনের মধ্যে ঘন্টাখানেক ধরে একান্ত বৈঠক চলে।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে পড়লেন বিল গেটস, ব্লুমবার্গের নতুন রিপোর্টে ১২ নম্বরে
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও, তৃণমূল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে এই বৈঠকের ছবি প্রকাশ করে বলা হয় যে বাংলার শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
ফিরে আসছে টাটা?
২০০৮ সালে সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্প বাতিল হওয়ার পরে বাংলায় টাটা গোষ্ঠীর বিনিয়োগ কার্যত স্থগিত হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি টাটা মেটালিকস এবং টিসিএস-এর কয়েকটি ছোট প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে। আজকের বৈঠককে ঘিরে তাই জল্পনা আরও তীব্র— বড় শিল্পে কি টাটা ফের বাংলার দিকে ফিরছে?
বিশেষত, রাজ্যে অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স, এবং সেমিকন্ডাক্টর নির্মাণে বিনিয়োগ টানতে সরকার যে সক্রিয় হয়েছে, তা স্পষ্ট। এই পরিপ্রেক্ষিতে টাটার মতো শিল্পদৈত্য যদি নতুন প্রকল্পের কথা ভেবে থাকে, তাহলে তা রাজ্যের শিল্প নীতির বড় জয় হিসেবে গণ্য হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পরিকাঠামোগত সহায়তা এবং পূর্ব ভারতের জোগান ব্যবস্থার দিক থেকে বাংলায় বড় মাপের প্রকল্প টানার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
অতীতে টাটা গোষ্ঠী একাধিক ক্ষেত্রে বাংলায় তাদের আগ্রহ প্রকাশ করলেও, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভূমি আন্দোলনের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে গিয়েছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি, এবং একাধিক আন্তর্জাতিক লগ্নি সম্মেলনে টাটার সক্রিয়তা ভবিষ্যতের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আজকের বৈঠকে ঠিক কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে বিনিয়োগ সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের এমন একান্ত আলোচনা রাজ্যের শিল্প ভবিষ্যতের দিকেই ইঙ্গিত করছে। বাকি তথ্য আসন্ন সময়ে পরিষ্কার হবে।
আরও পড়ুন :
ইন্দোরে ভারতের প্রথম ক্রিকেট জাদুঘরের উদ্বোধন: ব্র্যাডম্যানের ব্যাট থেকে সিকে নাইডুর স্মৃতিচিহ্ন
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে পড়লেন বিল গেটস, ব্লুমবার্গের নতুন রিপোর্টে ১২ নম্বরে