SnehaDebnath
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ১৪ জুলাই, ২০২৫ : ছয় দিন নিখোঁজ থাকার পর, ১৩ জুলাই সন্ধ্যায় যমুনা নদীর গীতা কলোনি সেতুর নিচে মিলল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর বয়সী ছাত্রী স্নেহা দেবনাথের (SnehaDebnath) মৃতদেহ। গণিত অনার্সের এই শিক্ষার্থী ত্রিপুরার আগরতলার বাসিন্দা ছিলেন এবং আত্মা রাম সনাতন ধর্ম কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন।
স্নেহার মৃত্যুতে দিল্লি ও ত্রিপুরা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বন্ধুবান্ধব, সহপাঠী এবং পরিবার মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে পুলিশের ভূমিকা, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
️ ঘটনার পূর্ণ বিবরণ: নিখোঁজ থেকে উদ্ধার
স্নেহা পরিবারকে বলেন, তিনি তাঁর বান্ধবী পিটুনিয়ার সঙ্গে সারাই রোহিলা রেলস্টেশনে যাচ্ছেন। সকাল ৫:৫৬ মিনিটে সেটাই ছিল তাঁর শেষ ফোনকল। এরপর থেকেই তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তিনি একটি ক্যাব চড়েছিলেন এবং সেই ক্যাব চালক Signature Bridge–এ তাঁকে নামিয়ে দেন।
এরপর স্নেহার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ফোনে শেষবার তার লোকেশন ছিল সিগনেচার ব্রিজে।
পরিবার ও পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি ফুটেজ খোঁজা হয়, কিন্তু দুঃখজনকভাবে ব্রিজের ক্যামেরাগুলি কার্যকর ছিল না।
কর্ণাটকের পাহাড়ি গুহা থেকে দুই সন্তানসহ রুশ নারী উদ্ধার, ২০১৭-তে শেষ হয়েছিল ভিসার মেয়াদ
সন্ধ্যায় NDRF ও পুলিশ যৌথভাবে গীতা কলোনি ফ্লাইওভারের নিচে এক তরুণীর দেহ খুঁজে পায়। পরিবারের সদস্যরা সেটি স্নেহা দেবনাথের দেহ হিসেবে শনাক্ত করেন।
সুইসাইড নোট ও মানসিক চাপ
স্নেহার ঘর থেকে একটি হাতের লেখা সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে তিনি তাঁর মানসিক অবসাদ, একাকীত্ব এবং পরিবার ও পড়াশোনার চাপের কথা উল্লেখ করেছেন।
নোটে লেখা ছিল, “আমি ক্লান্ত, আমি শান্তি চাই।”
বন্ধুরা জানিয়েছেন, স্নেহা গত কয়েক মাস ধরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, তবুও কাউন্সেলিং বা চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।
ইনস্টাগ্রামে তাঁর সাম্প্রতিক পোস্টগুলিও ছিল বিষণ্ণ ও দুঃখময়।
পরিবারের অভিযোগ ও পুলিশের ভূমিকা
স্নেহার পরিবার দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রথম দফায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে।
তাঁরা অভিযোগ করেছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে হয়তো মৃত্যুকে আটকানো যেত।
পরিবার জানায়, Signature Bridge-এ যদি CCTV ফুটেজ থাকত, তাহলে অন্তত সে কোথায় গিয়েছিল তা নিশ্চিত হওয়া যেত।
এ ঘটনায় ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন।
স্নেহার এই অকাল মৃত্যু ফের একবার শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলেছে:
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পর্যাপ্ত কাউন্সেলিং সুবিধা ছিল না।
পরিবার বা বন্ধুরাও তাঁর হতাশাকে গুরুত্ব দেয়নি, যা আজকের সমাজে একটি বড় সমস্যা।
যুবসমাজের ওপর থাকা প্রতিযোগিতার চাপ ও পারিবারিক প্রত্যাশার বোঝা স্নেহাদের মতো অনেকের জীবনকে বিপন্ন করছে।
আরও পড়ুন :
বিচ্ছেদ ঘোষণা করলেন সাইনা নেহওয়াল — “আমরা শান্তি ও সুস্থতাকে বেছে নিচ্ছি”
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি ঝড়ের আশঙ্কা