UkraineUnderAttack
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ আরও এক ধাপ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল । পশ্চিম, দক্ষিণ এবং মধ্য ইউক্রেনে রাতভর বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ড্রোনের পাশাপাশি ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। রুশ হামলায় ইউক্রেনের বেশ কিছু ঘরবাড়ি এবং পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত (UkraineUnderAttack) হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ছ’জনের।
এই হামলায় রাশিয়া একযোগে ৫৩৭টি আকাশযন্ত্র ব্যবহার করেছে— যার মধ্যে ছিল ৪৭৭টি কামিকাজে ড্রোন ও ৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র। ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা এর একটি বড় অংশ প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও আঘাত এসেছে রাজধানী কিয়েভসহ একাধিক শহরে।
এই হামলায় শহীদ হয়েছেন একজন ইউক্রেনীয় F-16 পাইলট, যিনি আকাশে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। ইউক্রেন এই আক্রমণকে ‘যুদ্ধের তৃতীয় বছরে প্রবেশের পর সবচেয়ে ভয়াবহ’ বলে ঘোষণা করেছে।
ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে,
৪৭৭টি ড্রোনের মধ্যে ২৪৯টি ভূপাতিত করা হয়েছে সরাসরি আকাশ প্রতিরক্ষায়।
বাকি ২২৬টি ড্রোন ‘ইলেকট্রনিক জ্যামিং’-এর মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
৬০টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৩৮টি ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে।
তবে এমন সুসংগঠিত ও একযোগে হামলা এর আগে আর কখনও হয়নি। ইউক্রেন এটিকে বলছে: “সবচেয়ে সুপরিকল্পিত ও সংগঠিত আক্রমণ”।
ড্রোন আঘাতে একটি চলন্ত গাড়ি উড়ে যায়; একজন নিহত।
বহু আবাসিক ভবন ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত।
শহরের দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে এক শিশু সহ ৬ জন আহত।
স্থানীয় স্কুল, হসপিটাল ও বিদ্যুৎ সাবস্টেশন আংশিক ধ্বংস।
এক শিল্পস্থানে আগুন লাগে বিস্ফোরণের ফলে।
এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, জরুরি উদ্ধারকারী দল মোতায়েন।
যুদ্ধের এই দিনটির সবচেয়ে হৃদয়বিদারক খবর এসেছে ইউক্রেনের পশ্চিম ফ্রন্ট থেকে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম্যাক্সিম উস্তিমেনকো (৩১) নামে একজন F-16 পাইলট শেষ মুহূর্তে সাতটি রুশ অস্ত্র ধ্বংস করেন। তার বিমান আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, তিনি বিমানটিকে জনবসতির বাইরে নিয়ে গিয়ে সেখানে নিয়ন্ত্রিত ক্র্যাশ করেন।
তাঁর এই আত্মত্যাগ ইউক্রেনজুড়ে বীরোচিত মর্যাদা পেয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি তাকে “আমাদের আকাশের রক্ষাকর্তা” বলে উল্লেখ করেন।
এই বিশাল আক্রমণ ইউক্রেন ছাড়িয়ে যায় পাশের দেশগুলোর আকাশসীমাতেও।
পোল্যান্ড ও রোমানিয়া-তে NATO ফাইটার জেট মোতায়েন করতে হয় সতর্কতা হিসেবে। এটি প্রমাণ করে যুদ্ধ ইউরোপের অন্যান্য দেশের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে।
এই ভয়াবহ হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন—
আরও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (Patriot systems) সরবরাহের জন্য।
দীর্ঘমেয়াদি বিমান প্রতিরক্ষা সমর্থন, এবং
রুশ সন্ত্রাসী তৎপরতা রোধে সরাসরি সহায়তা।
তিনি বলেন,
“এই যুদ্ধ শুধু ইউক্রেনের নয়, গোটা ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে হুমকি।”
বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, ইউক্রেনের “অপারেশন স্পাইডারওয়েব”-এর জবাবেই রাশিয়া এত বড় আক্রমণ চালিয়েছে।
ইউক্রেন সম্প্রতি রাশিয়ার বেশ কিছু সামরিক ঘাঁটিতে সফল ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ফলে রাশিয়া এই ‘আকাশ ঝড়’ ছড়িয়ে দিয়েছে পুরো ইউক্রেনজুড়ে।
আরও পড়ুন :
পেহেলগামকাণ্ডের পরও এশিয়া কাপে মুখোমুখি হতে পারে ভারত-পাকিস্তান