VSAchuthanandan
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবীণ এবং জনপ্রিয় নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন (VSAchuthanandan ) প্রয়াত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ জুলাই) ভোরবেলা তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
কেরলের তিরুবনন্তপুরমের শ্রীচিত্রা ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বয়সজনিত অসুস্থতা ও সংক্রমণের কারণে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বর্ষীয়ান এই নেতা।
ভিএস অচ্যুতানন্দন ছিলেন কেরলের একমাত্র কমিউনিস্ট নেতা যিনি মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং বিধানসভার স্পিকার—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৬ সালে বামফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কেরলের ক্ষমতায় আসেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে একাধিক দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল।
তিনি ছিলেন ভারতের বামপন্থী রাজনীতির এক জীবন্ত কিংবদন্তি। কর্মজীবনে একাধিকবার বিতর্কে জড়ালেও জনগণের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল অসামান্য। বামপন্থী আদর্শ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ‘জননেতা’ রূপে পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
কৃষক থেকে বিপ্লবী নেতা
১৯২৩ সালের ২০ অক্টোবর কেরলের আলাপ্পুঝা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন ভি এস। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে ছোটবেলাতেই বাবা-মা-কে হারান। লেখাপড়ায় বেশি এগোতে না পারলেও, তরুণ বয়স থেকেই শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪০ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন।
লোকসভায় শূন্য, বিধানসভায় শূন্যের পরে এবারে রাজ্যসভায়ও শূন্য হবে সিপিএম!
তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তিনি কেরল ভূমি সংস্কার আন্দোলনেরও অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। সিপিএম-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম ছিলেন ভিএস।
দলের অভ্যন্তরে মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও নিজের অবস্থান নিয়ে তিনি কখনো আপস করেননি। ২০১১ সালে তিনি আবারও নির্বাচনে জয়ী হন, কিন্তু বয়সের কারণে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যান। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, “বয়স যতই হোক, ভিএস ছিলেন বাম রাজনীতির চেতনায় বিশ্বাসী এক অনড় লড়াকু সৈনিক।”
কেরল সরকার তাঁর প্রয়াণে রাজ্যে দুদিনের রাজ্য শোক ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী মহল ও নাগরিক সমাজের তরফে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সিপিএম মহাসচিব সীতারাম ইয়েচুরি-সহ বহু নেতাই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন :
UK SmokeFreeGeneration : ২০০৯ সালের পর জন্মানো কেউ কোনো দিন তামাকজাত দ্রব্য কিনতে পারবে না
চলে গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত প্রিন্স’, ২০ বছরের কোমা শেষে অবসান এক বেদনাময় অধ্যায়ের