West Bengal HS Semester 3 Topper 2025
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করল সেমিস্টার-৩ পরীক্ষার ফলাফল। এই বছরের ফল প্রকাশ রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন অধ্যায় রচনা করল। কারণ প্রথমবার সেমিস্টার-ভিত্তিক মূল্যায়নে এত উচ্চ সাফল্য নজর কাড়ল সকলের। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতা এবং আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে।
এই পরীক্ষায় রাজ্যের প্রথম হয়েছেন দুই ছাত্র—প্রীতম বল্লভ ও আদিত্য নারায়ণ জানা। তারা পুরুলিয়ার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। উল্লেখযোগ্য বিষয়, তারা পেয়েছেন একই নম্বর—৯৮.৯৭%। ফলে তারা যুগ্মভাবে শীর্ষস্থান অর্জন করেছেন। তবে শুধু নম্বর নয়, তাদের আত্মবিশ্বাস, শৃঙ্খলা এবং পরিশ্রম শিক্ষাজগতে উদাহরণ তৈরি করেছে।
এবং তাদের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দুই ছাত্রই নিয়মিত রুটিন মেনে পড়াশোনা করতেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট পড়ার সময় ছিল। পাশাপাশি, তারা কখনো অতিরিক্ত চাপ নেননি। বরং ভারসাম্য রেখে পড়াশোনা, ব্যায়াম ও বিশ্রাম এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
অন্যদিকে, প্রীতম বল্লভ বলেছেন, “লক্ষ্য ছিল নিয়মিত পড়া এবং কোনো বিষয় বাদ না দেওয়া। তবে বন্ধুরা আর শিক্ষকদের সহায়তা না থাকলে এটা সম্ভব হতো না।” আর আদিত্য জানান, “আমার স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ারিং। তাই গণিত এবং পদার্থবিদ্যায় বেশি সময় দিয়েছি। কিন্তু প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি।”
এই বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বলেছেন, “আমাদের স্কুলে শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, চরিত্র-গঠন এবং শৃঙ্খলার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই ফলাফল ভালো আসা স্বাভাবিক।” এছাড়া তিনি জানান, এই সাফল্য অন্য শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে।
ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার এবং বিদ্যালয়ে আনন্দের স্রোত বয়ে গেছে। উপস্থিত শিক্ষকদের মতে, দুই ছাত্রই বিনয়ী এবং মনোযোগী। ফলে তাদের এই কৃতিত্ব দীর্ঘ সময় মনে থাকবে। পাশাপাশি শিক্ষাবিদরা বলছেন, সেমিস্টার-ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা ছাত্রদের নিয়মিত অধ্যয়নে উৎসাহিত করছে।
এদিকে অনেকে মনে করছেন, এই সাফল্য রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির প্রতীক। যদিও কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, এখনও তথ্য-প্রযুক্তি সুবিধা, শিক্ষক-সংখ্যা এবং গ্রামীণ শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে তারা মনে করেন, এই ফল শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতি প্রমাণ করে।
উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার সর্বোচ্চ, ফল প্রকাশের ৫০ দিনের মধ্যেই নজিরবিহীন ঘোষণা
ইউরোপে নতুন নিরাপত্তা সংকট : রাশিয়া ব্যবহার করল INF ভঙ্গের অভিযোগে থাকা 9M729 মিসাইল
অতএব, এই সাফল্য কেবল দুই ছাত্রের ব্যক্তিগত গৌরব নয়। বরং এটি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাজগতের অর্জন। ভবিষ্যতে আরও ছাত্রছাত্রী একই পথ অনুসরণ করে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে, এমনই আশা শিক্ষকদের।
পাশাপাশি শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, অচিরেই সেমিস্টার-৪ পরীক্ষার প্রস্তুতি নির্দেশিকা দেওয়া হবে। এবং আগামী শিক্ষাবর্ষে আরও উন্নত ফলাফল আশা করা হচ্ছে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর মুখে খুশির হাসি। তবে যারা কম নম্বর পেয়েছে, তাদের জন্য সহায়তা-কেন্দ্র চালু করার কথাও ঘোষণা হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মনোবল বাড়বে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সেমিস্টার পদ্ধতি প্রথম বছরেই সফলতা এনে দিল। এবং পুরুলিয়ার দুই ছাত্র রাজ্যের গৌরব বাড়ালেন।
আরও পড়ুন :
শান্তি আলোচনার ঠিক আগে পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিল তালিবান: “কেউ আগুন নিয়ে খেলা করছে”