Zubeen Garg Roi Roi Binale
							ক্লাউড টিভি ডেস্ক: অসমের সংগীত জগতের কিংবদন্তি জুবিন গর্গ। তাঁর শেষ ছবি ‘রই রই বিনালে’ মুক্তির পর রাজ্যজুড়ে দেখা যাচ্ছে আবেগের প্রবল ঢেউ। ছবিটি মুক্তির প্রথম দিন থেকেই ভোর ৪টা থেকে থিয়েটারে দর্শকের ঢল নামে। তাই শো শুরু হতেই বেশিরভাগ হল হাউসফুল হয়ে যায়। ভক্তদের চোখে জল, গলায় জুবিনের গান। ফলে প্রেক্ষাগৃহকে ঘিরে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
প্রয়াত তারকাকে শেষবারের মত পর্দায় দেখতে মানুষ ছুটে যাচ্ছেন পরিবারের সাথে। কারও হাতে ফুল, কারও হাতে বাদ্যযন্ত্র। পাশাপাশি পোস্টারে জুবিনের ছবি নিয়ে মিছিলের চেহারা নিচ্ছে থিয়েটার চত্বর। কারণ এই ছবি তাঁর দীর্ঘ ১৯ বছরের স্বপ্নের প্রজেক্ট।
ছবিটি মুক্তির দিন থিয়েটারের সামনে সকাল থেকেই লাইন পড়ে। বিশেষ করে গুয়াহাটি সহ বিভিন্ন জেলায় বড় বড় থিয়েটারে দর্শকদের অতিরিক্ত ভিড় দেখা যায়। এছাড়া নানা বয়সের মানুষ ভোরে উঠে চা, মুড়ি হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকে আবার রাতে ঘুমাননি, শুধু প্রথম শো দেখবেন বলে।
তবে শুধু দর্শক নয়, থিয়েটার কর্তৃপক্ষও অভিভূত। তাঁরা জানিয়েছেন, এমন দৃশ্য শেষ কবে দেখা গেছে মনে পড়ে না। সুতরাং এটি কেবল সিনেমা মুক্তি নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক আবেগের বিস্ফোরণ।
অসম সরকার ঘোষণা করেছে, ছবিটি থেকে রাজ্য অংশ হিসেবে প্রাপ্ত GST ফান্ড Kala Guru Artiste Foundation-এ দান করা হবে। এই তহবিল শিল্পীদের কল্যাণ এবং বন্যা-দুর্গতদের সহায়তায় ব্যয় হবে। অতএব সরকারি স্তরেও জুবিনের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে।
সরকারি বার্তায় বলা হয়েছে, জুবিন শুধু একজন শিল্পী নন, বরং তিনি অসমের মানসত্ত্বার প্রতীক। তাই তাঁর শেষ সৃষ্টিকে ঘিরে রাজ্যবাসীর আবেগকে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।
অনেক ভক্ত থিয়েটারের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা গেছে। কেউ বলছেন,
“জুবিনদা আমাদের হৃদয়ে চিরজীবী।”
আবার অন্য এক দর্শক বলেন,
“আজ শুধু সিনেমা নয়, স্মৃতি দেখতে এসেছি।”
এছাড়া থিয়েটারের ভেতরে ছবির শেষ দৃশ্য চলার সময় দেখা গেছে নীরব কান্না। তাছাড়া পর্দায় জুবিনের হাসি ও সুর যেন আবার নতুন করে জীবন্ত হয়ে উঠছে দর্শকদের মনে।
‘রই রই বিনালে’ এক রোমান্টিক-মিউজিক্যাল ড্রামা। এতে প্রেম, স্বপ্ন, সংগীত এবং আবেগকে সমানভাবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি সুদৃশ্য সিনেমাটোগ্রাফি এবং মেলোডিক সাউন্ডট্র্যাক ছবির মূল আকর্ষণ। জুবিন নিজেই গল্প লিখেছেন, গান গেয়েছেন এবং অভিনয় করেছেন। এছাড়াও ছবির সুরকার ও সৃজনশীল দিকনির্দেশনার বড় অংশ তিনিই দেখেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছবিটির প্রথম দিনেই ₹১.৫ কোটির বেশি আয় হতে পারে। এছাড়া আগামী দিনগুলোতে আরও বড় আকারের রেকর্ড হওয়ার সম্ভাবনা। সুতরাং ছবিটি কেবল আবেগ নয়, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও বিশাল সফলতা পাচ্ছে।
জুবিন গর্গ আর নেই। কিন্তু তাঁর সুর, স্বপ্ন এবং পর্দার উপস্থিতি আজও অমলিন। ‘রই রই বিনালে’ কেবল একটি সিনেমা নয়, বরং তাঁর শেষ সৃষ্টির প্রতি লাখো মানুষের প্রেমের প্রতীক। ফলে অসম তাকে আজও হৃদয়ে ধারণ করে রেখেছে।
আরও পড়ুন :
“বুথ যুদ্ধের নির্দেশনায় তৃণমূল: Abhishek Banerjee বললেন—‘বিএলওদের সঙ্গে সবসময় থাকুন’”