UAEtoIndiaMoneyTransfer
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (UAE) ও সৌদি আরবের মতো উপসাগরীয় দেশগুলোতে বসবাসকারী অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে সম্প্রতি একটা নতুন ‘অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা’ শুরু হয়েছে। আর সেই প্রতিযোগিতা হল, কে কত দ্রুত ভারতের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে (UAEtoIndiaMoneyTransfer) পারেন!
কারণটা খুবই সহজ—ভারতীয় টাকা এখন দুর্বল।
১ দিরহামের মান যেখানে কিছুদিন আগেও ছিল ২২.৮ থেকে ২৩.২ টাকার মধ্যে, তা এখন ছুঁয়েছে ২৩.৫ টাকা।
এই দর গত এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। ফলে কম দিরহামে ভারতে অনেক বেশি টাকা পাঠানো যাচ্ছে।
একজন প্রবাসী যদি আগে ১০,০০০ দিরহাম পাঠালে পেতেন ₹২,৩২,০০০, এখন তিনি পাচ্ছেন ₹২,৩৫,০০০–₹৩,০০০ অতিরিক্ত।
গাল্ফ নিউজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯ জুন থেকে UAE-India রেমিটেন্সের প্রবাহে রেকর্ড বৃদ্ধি ঘটেছে।
ইউএই-র এক্সচেঞ্জ হাউসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন,
“সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমরা এডি-আইএনআর রেমিটেন্সে সেরা দিনগুলো দেখেছি। মানুষ বুঝে গেছে এই দরপতন সাময়িক হতে পারে—তাই তারা বিলম্ব না করে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন।”
বলা হচ্ছে, এই প্রবণতা আরও কিছুদিন চলবে। বিশেষ করে সেই সব প্রবাসী ভারতীয়রা যাঁদের হাতে কিছুটা বাড়তি সঞ্চয় রয়েছে, তাঁরা ‘স্মার্টলি’ কাজ করছেন।
জুন-জুলাই সাধারণত গ্রীষ্মের ছুটির সময়। এই সময় অনাবাসী ভারতীয়রা বেশিরভাগই দেশে আসেন বা বিদেশে ভ্রমণ করেন, ফলে পরিবারে অর্থপ্রবাহ কিছুটা কমে।
কিন্তু এবার ছবি উল্টো।
ছুটি থাকা সত্ত্বেও টাকার দাম কমে যাওয়ার কারণে প্রবাসীরা রেমিটেন্সে পিছপা হননি। বরং ছুটির মধ্যেও সপ্তাহান্তে লেনদেন জারি ছিল। এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বলছে, “সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটিতে রেমিটেন্স কম থাকে, এবার সেটা হয়নি।”
শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় অর্থনীতিতে টাকার এই অনিশ্চয়তা দীর্ঘমেয়াদে রফতানি বৃদ্ধিতে সাহায্য করলেও, স্বল্পমেয়াদে আমদানির খরচ বাড়তে পারে। তবে এই পরিস্থিতি অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য সুযোগ এনে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে:
“টাকার দর যদি জুলাইতেও ২৩.৪–২৩.৫-এর আশেপাশে থাকে, তাহলে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়বে।”
“টাকা পাঠানোর এই গতি যদি বজায় থাকে, তাহলে অনেক পরিবার তাদের মাসিক ব্যয় বাজেটেও খানিকটা স্বস্তি পাবেন।”
উপসাগরীয় দেশগুলোতে যাঁরা শ্রমজীবী, তাদের পাঠানো টাকায় ভারতে পরিবার চলে।
এই রেমিটেন্স বৃদ্ধির ফলে তারা
বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠাতে পারছেন
ঋণ মেটানো,
সন্তানের পড়াশোনা,
গৃহনির্মাণ ইত্যাদি কাজে সুবিধা পাচ্ছেন
টাকার পতন যেখানে দেশের অর্থনীতির জন্য একরকম চ্যালেঞ্জ, সেখানে প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে তা সুযোগ হয়ে উঠেছে।
একই টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য একটু বেশি সঞ্চয় পাঠানো—এই চিন্তাই এখন চালাচ্ছে উপসাগরীয় রেমিটেন্স বাজারকে।
পরবর্তী সময় টাকার স্থিতিশীলতা কীভাবে রেমিটেন্স বাজারকে প্রভাবিত করবে, তা এখন দেখার।
আরও পড়ুন :
৫০ বছর পর ‘শোলে’ আবার প্রেক্ষাগৃহে, মুক্তি পাচ্ছে রিস্টোরড, আনকাট ভার্সন
‘কে হবেন বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি?’ – কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা